বান্দরবান প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০২৫ ২২:০৮ পিএম
আপডেট : ০৩ জুলাই ২০২৫ ২২:৫০ পিএম
বান্দরবানের রুমা উপজেলার দুর্গম পাহাড়ে সেনাবাহিনীর অভিযানে কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) কমান্ডারসহ দুই সদস্য নিহত হয়েছেন। নিহত দুজনের একজন কেএনএর-এর মেজর পদবির সশস্ত্র সদস্য ছিলেন। এ সময় সেনাবাহিনী তিনটি এসএমজি, একটি রাইফেলসহ বিপুল অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) ভোর ৫টায় বান্দরবানের রুমা উপজেলার পলিপাংসা-মুলফিপাড়া এলাকায় ‘কেএনএফ’-এর সশস্ত্র দল (কেএনএ)-এর বিরুদ্ধে একটি সফল অভিযান পরিচালনা করে। অভিযান এলাকায় তল্লাশি চলাকালে সেনা সদস্যরা সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দলটিকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় কেএনএফ সদস্যরা পালানোর চেষ্টা করলে উভয় পক্ষে ব্যাপক গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে।
একপর্যায়ে, সেনা টহল দল ঘটনাস্থলে ইউনিফর্ম পরিহিত দুইজন সশস্ত্র কেএনএফ সদস্যের মৃতদেহ উদ্ধার করে। নিহত দুইজনের মধ্যে একজনের নাম পুটিং ওরফে ডলি যিনি কেএনএফ-এর নেতৃত্ব পর্যায়ের মেজর পদবির সশস্ত্র সদস্য ছিলেন। নিহত আরেকজন কেএনএফ-এর সশস্ত্র শাখার সদস্য ছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। অভিযান শেষে ঘটনাস্থল থেকে ৩টি সাবমেশিনগান (এসএমজি), ১টি রাইফেল, বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ, অস্ত্রের ম্যাগাজিন, কেএনএফ-এর ব্যবহৃত ইউনিফর্ম এবং গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র উদ্ধার করা হয়। এই এলাকা কেএনএর প্রধান ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।
আইএসপিআর আরও জানায়, বিগত বছরগুলোতে কেএনএফর সশস্ত্র কর্মকাণ্ডের জন্যে বম জনগোষ্ঠীর অনেক পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। সেনাবাহিনীর অব্যাহত সফল অভিযানের কারণে নিরাপত্তা পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়। যার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে ১২৬টি পরিবার তাদের নিজ নিজ পাড়ায় ফিরে এসেছে এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার প্রচেষ্টায় রয়েছে। সেনাবাহিনী তাদের নিরাপত্তা, আশ্রয় ও পুনর্বাসনে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে সকল জাতিগোষ্ঠীর জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বদ্ধপরিকর এবং ভবিষ্যতেও সশস্ত্র দলগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান অব্যাহত থাকবে।
প্রসঙ্গত, কেএনএফ সন্ত্রাসীরা গত বছরের ২ ও ৩ এপ্রিল রুমা ও থানচিতে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতি করে। রুমায় সোনালী ব্যাংকে ডাকাতির সময় পুলিশ ও আনসার বাহিনীর ১৪টি অস্ত্র লুট করে নিয়ে যায়। তখন নিরাপত্তা বাহিনী কেএনএফের সন্ত্রাস দমনে জোরালো অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে কেএনএফের সন্ত্রাসীরা প্রায় নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচির পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে ওঠে।