× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বুনোফল ‘চাম কাঁঠাল’ মিলছে শহরে

ইসমাইল মাহমুদ, মৌলভীবাজার

প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০২৫ ১৭:২৬ পিএম

আপডেট : ০৩ জুলাই ২০২৫ ১৭:৩১ পিএম

বুনোফল ‘চাম কাঁঠাল’ মিলছে শহরে

চলছে মধু মাস। এ সময়ে বিভিন্ন ফল ছাড়াও কাঁঠাল পাকার সময়। এখন আরও একটি ফল পাকার সময়। এটা দেখতে কাঁঠালের মতো অনেকটা। তবে মানুষ কাঁঠাল চিনলেও ওই ফলটি বেশিরভাগ মানুষ চেনেন না। এ ফলের নাম চাম কাঁঠাল। এটি দেখতে কাঁঠালের মতো হলেও আকারে অনেক ছোট। এর স্বাদও কাঁঠাল থেকে ভিন্ন।

ফলটি মূলত পাহাড়ি অঞ্চলে পাওয়া যায়। বর্তমানে মৌসুমি ফলের পাশাপাশি মৌলভীবাজারে বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি হচ্ছে পাহাড়ি ফল ‘চাম কাঁঠাল’।

ফলটি চাম কাঁঠাল নামে পরিচিত হলেও, মজার বিষয় এটি আসলে পাহাড়ি চাপালিশ বা চামলগাছের ফল। এর এলাকাভেদে চাম্বল, চাম্বুল, কাঁঠালি চাম্বুল, চাম ফল, চাপালিশ ফল, বুনোফল, বনো কাঁঠাল ইত্যাদি নামেও ডাকা হয়। গত কয়েক বছর এ ফলটি অনেকটা বিলুপ্তির পথে হলেও বর্তমানে অল্পবিস্তর পাওয়া যাচ্ছে।

জানা যায়, দেশের পাহাড়ি এলাকায় চামল নামে একটি গাছ হয়। এই গাছে কাঁঠালের মতো ফল ধরে। ফলটি দেখতে অনেকটা কাঁঠালের মতো, তবে আকারে বেশ ছোট। এর কোষগুলো অতিক্ষুদ্র ও টক-মিষ্টি স্বাদের। বিচি ভেজে খাওয়া যায়। ভাজার পর বিচির স্বাদ অনেকটা চীনাবাদামের স্বাদ পাওয়া যায়।

কয়েক বছরে এটি অনেকটা দুর্লভ ফলে পরিণত হলেও সংরক্ষিত বনাঞ্চলগুলোয় চাপালিশ বা চামল গাছ লাগানোয় বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে।

জানা যায়, বাংলাদেশে সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, মধুপুর, রাঙামাটি ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় নগণ্য সংখ্যক এই গাছ রয়েছে। চাপালিশ সুউচ্চ পত্রঝরা গাছ। এটির উচ্চতা সাধারণত ৯০ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। গাছটিতে ফুল আসে মার্চ-এপ্রিল মাসে। এরপর আসে ফল। গাছটির ফল পাকে জুন থেকে আগস্ট মাসের মধ্যে।

বনাঞ্চলে চাপালিশের বীজ থেকে চারা হয়। এ ছাড়া অন্যান্য ফলদ গাছের পাশাপাশি বন বিভাগ চাপালিশ গাছের চারাও রোপণ করে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের আসাম, আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ, সিকিম, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, চীন, লাওস, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ায় এ গাছ প্রচুর পরিমাণে দেখা যায়।

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, বড়লেখা উপজেলার সমনভাগ, জুড়ী উপজেলার পাথারিয়া, লাঠিটিলা, কুলাউড়া উপজেলার বরমচালসহ জেলার সংরক্ষিত বনাঞ্চলগুলোয় রয়েছে এই ফলের অসংখ্য গাছ। এসব গাছের ফল বর্তমানে শহরে পাওয়া যাচ্ছে। চলতি বছরে প্রতিটি চাম কাঁঠাল সাইজভেদে ৫০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

জেলার শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ রোড রেলগেইট এলাকায় চাম কাঁঠাল বিক্রেতা আজিজুর রহমান বলেন, আগে প্রচুর পরিমাণে চাম কাঁঠাল পাওয়া যেত। মাঝখানে এটি অনেকটা দুষ্প্রাপ্য হয়ে যায়। এ বছর আবার প্রচুর পাওয়া যাচ্ছে। গত কয়েক বছর আগেও ৫-১০ টাকা দরে প্রতিটি চাম কাঁঠাল বিক্রি করেছি।

এখন প্রতিটি চাম কাঁঠাল সাইজভেদে ৫০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা বিক্রি করছি। এ বছর শমসেরনগর থেকে চাম কাঁঠাল কিনে এনে এখানে ব্যবসা করছি। শমসেরনগর ও আশপাশের এলাকায় এ বছর প্রচুর পরিমাণে চাম কাঁঠাল পাওয়া যাচ্ছে। তবে ফলটির পরিচিতি ও ক্রেতা বাড়ায় পাইকারি অনেক বেশি দামে ফলটি আমাদের কিনতে হচ্ছে। তাই বেশি দামে বিক্রি করা ছাড়া আমাদের গত্যন্তর নেই।’

ঢাকা থেকে সপরিবারে মৌলভীবাজার ভ্রমণে আসা স্কুল শিক্ষার্থী ইয়াসমিন চৌধুরী মৌলভীবাজার শহরের আদালত এলাকায় চাম কাঁঠাল দেখে তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এ ফলটি জীবনে প্রথম দেখলাম ও কিনলাম। রাস্তায় বসেই প্রায় অর্ধেকটা খেলাম। ফলটি দেখতে যেমন কাঁঠালের মতো, তেমনই এর কোষগুলোও কাঁঠালের কোষের মতো। টক-মিষ্টি এই কোষগুলো স্বাদেও অনন্য। আত্মীয়-স্বজনকে পাহাড়ি এ ফলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য ঢাকায় ফেরার পথে আরও কয়েকটি কিনে নিয়ে যাব।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক জামিল মোহাম্মদ খান বলেন, ‘আমার কর্ম এলাকা কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া এবং চুনারুঘাটের সাতছড়ি বনাঞ্চলে প্রচুর পরিমাণ চাপালিশ বা চামল গাছ রয়েছে। এ গাছটির ফল অত্যন্ত সুস্বাদু। ফলটি অনেক বন্যপ্রাণীর প্রিয় খাবার। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মারুফ কামাল খান

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা