× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ফুটওভারব্রিজটি গলার কাঁটা

শফিক সরকার, ময়মনসিংহ

প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০২৫ ১০:০৪ এএম

আপডেট : ০৩ জুলাই ২০২৫ ১৭:৩০ পিএম

ময়মনসিংহ রেল জংশনের ফুটওভার ব্রিজটি অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে রেললাইন পার হন পথচারিরা

ময়মনসিংহ রেল জংশনের ফুটওভার ব্রিজটি অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে রেললাইন পার হন পথচারিরা

ময়মনসিংহ রেল জংশনের মধ্য দিয়ে পথচারীদের চলাচলের জন্য নির্মিত হয়েছে কোটি টাকার ফুটওভারব্রিজ। প্রয়োজনীয় পরিকল্পনার অভাবে এটি এখন স্থানীয়দের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। ব্রিজটি আর পথচারীদের কোনো কাজে আসছে না। এখন আর কেউ এর ওপর দিয়ে চলে না। এটি এখন মাদকসেবীদের নিরাপদ স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। রাত হলেই ফুটওভারব্রিজের ওপর বসে মাদকসেবীদের আড্ডা আর নারীদের নিয়ে চলে বেহায়াপনা। আর দিনে ব্যবহার হয় ছিন্নমূল মানুষের ঘুমের নিরাপদ স্থান হিসেবে। এতে দুপাশের মানুষের যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ওভারব্রিজটি।

চলাচলে পরিবেশ না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রেললাইনের ওপর দিয়েই চলাচল করছে পথচারীরা। এতে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। তারা এর ব্যবহার চান, না হলে এখান থেকে সরিয়ে নেওয়ার পক্ষে তারা। 

জানা গেছে, বাংলাদেশ রেলওয়ের টাকায় ময়মনসিংহ স্টেশন চত্বরে নগরীর গাঙ্গিনারপাড় ও নাটকঘরলেন তথা ওই অঞ্চলের মানুষের নিরাপদে চলাচলের সুবিধার্থে গত সরকারের সময় ওভারব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। এতে ব্যয় প্রায় কোটি টাকা। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর দীর্ঘদিন চলে গেলেও ব্রিজটি পথচারীরা ব্যবহার করছে না। গাঙ্গিনারপাড়ের শিববাড়ি মোড়ে রেলওয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়নি। সেইসঙ্গে নাটকঘর লেন এলাকাতেও রেলওয়ের প্রাচীরের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়নি। 

এতে লোকজন ব্রিজটি ব্যবহার না করে ঝুঁকি নিয়ে রেল লাইনের ওপর পারাপার হচ্ছে। এতে দিন দিন ব্রিজটি অপাঙ্‌ক্তেয় হয়ে পড়েছে। ফলে এখন আর কেউ এতে পারাপার হয় না। 

এ সুযোগে কোটি টাকার এই ফুটওভারব্রিজটি এখন মাদকসেবীদের নিরাপদ জায়গা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। দিনে ছিন্নমূল মানুষ নিরাপদ স্থান হিসেবে ব্যবহার করে আর রাত হলেই বসে মাদকসেবীদের আড্ডা। এর সঙ্গে চলে নারী নিয়ে বেহায়াপনা। অথচ দুপাশের মানুষের চলচলের সুবিধার্থে এটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এখন ব্রিজের দুপাশের মানুষের বিরক্তির বিশেষ কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারের কোটি টাকার সম্পত্তি এভাবে বছরের পর বছর অচল হয়ে পড়ে থাকায় স্থানীয়রা চরম ক্ষুব্ধ।

স্থানীয় শিববাড়ি এলাকার বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে করে ওভারব্রিজটি বানানো হয়েছে। উদ্দেশ্য ছিল শিববাড়ি, পুরোহিতপাড়াসহ চরপাড়ার মানুষ যেন সহজেই রেল জংশনের মধ্য দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা গাঙ্গিনারপাড় ব্যবসায়িক এলাকায় আসা-যাওয়া করতে পারে। এজন্যই এই ওভারব্রিজটি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু লাভ হয়নি কিছুই। রেল কর্তৃপক্ষ সীমানা প্রাচীর নির্মাণ না করায় এটি ব্যবহার হচ্ছে না। ওভারব্রিজ বাদ দিয়ে মানুষ রেলের ওপর দিয়ে চলছে। যদিও জীবনের ঝুঁকি থাকে সব সময়।

নাটকঘর লেন এলাকার বাসিন্দা কলেজ শিক্ষক আব্দুর রহিম বলেন, ওভারব্রিজটি এখন মানুষের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ সন্ধ্যা নামলেই এর ওপর মাদকসেবীদের জমজমাট আড্ডা বসে। আর দিনের বেলায় ছিন্নমূল মানুষের দখলে চলে যায়। 

এদিকে, ময়মনসিংহের সচেতন মহল ও নাগরিক অধিকারকর্মীরা বলেন, সরকারি টাকায় বানানো একটি অবকাঠামো যদি মানুষের উপকারে না আসে, তাহলে ধরে নিতে হবে অর্থ অপচয় হলো। দ্রুত ব্রিজটি যাত্রীবান্ধব করার দাবি জানান তারা।

রেলের একজন প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ওভারব্রিজের নকশা অনুমোদনের সময় যাত্রীচাহিদা ও বাস্তব ব্যবহারের দিকগুলো গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হয়নি। এটি প্রকল্প বাস্তবায়নে বড় ভুল ছিল। তবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

ওভারব্রিজটি ব্যবহার হচ্ছে না বিষয়টি স্বীকার করে রেলওয়ে স্টেশন সুপারেনটেন্ট নাজমুল হক বলেন, ব্রিজটি কেন করা হয়েছে বা কি উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছেÑ এটা সেই সময়ের কর্মকর্তারা বলতে পারবেন। আর এসব দেখভাল করেন রেলের প্রকৌশল বিভাগ। তবে এটা ব্যবহার হচ্ছে না এটা ঠিক।

ওভারব্রিজে মাদকসেবীদের আড্ডা বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানার ওসি আকতার হোসেন বলেন, বিষয়টি তার জানা ছিল না। তবে এখন থেকে নিয়মিত ওই ব্রিজে পুলিশ পাঠানো হবে। তিনি বলেন, ব্রিজটি ব্যবহার না হওয়ায় কিছু মানুষ ওই ব্রিজের ওপর আড্ডা জমানোর সুযোগ পায়।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মারুফ কামাল খান

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা