রাঙ্গাবালী
এনায়েতুর রহমান, পটুয়াখালী
প্রকাশ : ৩০ জুন ২০২৫ ২০:৫৫ পিএম
আপডেট : ৩০ জুন ২০২৫ ২১:০০ পিএম
চুরি করার উদ্দেশ্য নিয়ে এসে একটি চক্র সাবমেরিন কেবল কেটে ফেলেছে। এতে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। উপজেলা সদরসহ চারটি ইউনিয়নের অন্তত ২৫ হাজারের বেশি গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এলাকাবাসী দুইজনকে ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে।
এ ঘটনা ঘটে গত শনিবার রাত ১১টার দিকে। এ ঘটনায় রবিবার (২৯ জুন) রাতে রাঙ্গাবালী থানায় মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানান পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির রাঙ্গাবালী সাব জোনাল অফিসের এজিএম প্রকৌশলী কাওসার আহম্মেদ।
তিনি জানান, ভোলা থেকে মুজিবনগর উপকেন্দ্র দিয়ে বুড়াগৌরাঙ্গ ও তেঁতুলিয়া নদীর তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে রাঙ্গাবালী উপকেন্দ্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ হতো। গহিনখালী সংলগ্ন বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর অংশে রাতের আঁধারে কেটে ফেলা হয় সেই সাবমেরিন কেবলের দুইটি ফেজ। তিনটি ফেজ দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়। অতিরিক্ত আরও একটি ফেজ থাকে, যাতে কোনো ত্রুটি হলে বিদ্যুৎ চালু রাখা যায়। কিন্তু একটি সচল ফেজ ও অতিরিক্ত ফেজ কেটে ফেলেছে দুষ্কৃতকারীরা। এ কারণে বিদ্যুৎ চালু করা যাচ্ছে না।
ফলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে রাঙ্গাবালী সদর, ছোটবাইশদিয়া, বড়বাইশদিয়া ও মৌডুবি ইউনিয়ন। বিদ্যুৎ না থাকায় দুর্ভোগে পড়েছে স্থানীয় মানুষ।
জানা গেছে, গলাচিপার পানপট্টি এলাকা থেকে শনিবার বিকাল ৪টায় ট্রলারযোগে রওনা দেন চক্রের সদস্যরা। ট্রলারটি ছিল জসিম মৃধার মালিকানাধীন। রাত ৮টার দিকে তারা গহিনখালী এলাকায় পৌঁছে সাবমেরিন কেবল কাটার কাজ শুরু করে। কেবল কাটার সময় বিকট শব্দ শুনে চক্রের ছয় সদস্য পালিয়ে যায়। তবে এলাকাবাসীর হাতে ধরা পড়ে যায় দুইজন। আটকরা হলো- গলাচিপা উপজেলার পানপট্টি ইউনিয়নের গোবতের হাওলা গ্রামের বাদশা মৃধার ছেলে জসিম মৃধা এবং রাঙ্গাবালীর চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চররুস্তুম গ্রামের রাজা মৃধার ছেলে জুয়েল মৃধা। সম্পর্কে তারা দুইজন চাচাতো ভাই।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, ভোলা থেকে ছয় সদস্যের চক্রটি এসে তাদের ট্রলার ভাড়া করে। সাবমেরিন কেবল কেটে নিতে তারা প্রায় তিন লাখ টাকার সরঞ্জাম কিনেছিল। ছয়জন সদস্যের বাড়ি ভোলা জেলায় হলেও তাদের নাম-পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
রাঙ্গাবালী থানার ওসি এমারৎ হোসেন বলেন, আটক দুইজন এবং ঘটনায় জড়িত চক্রের মূল সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (অতিরিক্ত দায়িত্বে) আবুল কাশেম বলেন, আমিসহ আমাদের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হচ্ছে। পুরো তথ্য এখনি জানানো সম্ভব নয়। দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, সোমবার রাতের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। সাবমেরিন কেবলের কাটা অংশ জোড়া দেওয়ার জন্য কিটসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে একটি টিম এসে কাজ শুরু করেছে।