র্যাব পরিচয়ে অপহরণ
কক্সবাজার অফিস
প্রকাশ : ৩০ জুন ২০২৫ ২০:১৭ পিএম
আপডেট : ৩০ জুন ২০২৫ ২০:২৪ পিএম
কক্সবাজারের টেকনাফের পাহাড়কেন্দ্রিক অপহরণ চক্রের প্রধান রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী নবি হোসেন ও স্থানীয় ডাকাত চক্রের প্রধান শাহ আলমকে খুঁজছে র্যাব। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে ২০১৯ সালে বহিষ্কৃত সৈনিক মো. সুমন মুন্সীসহ একটি চক্রের র্যাব পরিচয়ে অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবির ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর প্রকাশ্যে আসে দুই চক্রের দুই প্রধানের নাম।
সোমবার (৩০ জুন) কক্সবাজার র্যাব-১৫-এর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব অধিনায়ক লে. কর্নেল কামরুল হাসান এসব তথ্য জানান। এর আগে গত রবিবার কক্সবাজারের উখিয়ার মরিচ্যা এলাকার নিজ বাড়ি থেকে সন্ত্রাসী মো. জায়েদ হোসেন ফারুককে গ্রেপ্তারের পর সোমবার সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে র্যাব। গ্রেপ্তার ফারুক উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের মরিচ্যা এলাকার আবদুস শুক্কুরের ছেলে।
ঘটনার পর থেকে র্যাব ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে গত ১৩ দিনে সেনাবাহিনীর বহিষ্কৃত সৈনিক সুমনসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। একই সঙ্গে র্যাবের পোশাকসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। অভিযানে অপহরণে ব্যবহৃত ৪টি র্যাবের পোশাক, একটি র্যাবের ফেইক আইডি কার্ড, একটি হ্যান্ডকাপ, একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি দেশি অস্ত্র, ১০ রাউন্ড তাজা অ্যামুনেশন, ১১ রাউন্ড এমটি কার্টিজ ও একটি চাকু উদ্ধার করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ১১ জুন রাতে ১৫ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে মো. রহিমুল্লাহর ছেলে মো. হাফিজ উল্লাহকে র্যাব পরিচয়ে অপহরণ করে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা। রোহিঙ্গা এনায়েত উল্লাহ ও নবি হোসেনের সহায়তায় ভিক্টিমকে নিজ বসতঘর থেকে ডেকে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গিখালী গহিন পাহাড়ে নিয়ে যায় চক্রটি। পরে অপহৃতের পরিবারের কাছে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ চান অপহরণকারীরা। এই খবর পেয়ে র্যাব-১৫ ভিক্টিমের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই প্রেক্ষিতে গত ১৩ জুন বিকালে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের একটি চৌকস দল রঙ্গিখালীতে অপহরণের অন্যতম প্রধান হোতা ডাকাত সর্দার শাহ আলমের বাড়িতে হানা দিয়ে আফ্রিদি ও আব্দুল গফুর নামে দুজন সন্দেহভাজনকে আটক করে। এরপর গত শনিবার বিকালে উখিয়ার মরিচ্যা বাজার থেকে বরখাস্ত সৈনিক মো. সুমন মুন্সীকে আটক করে। এরপর সুমনের মাধ্যমে অপহরণকারী ডাকাত শাহ আলম, সন্ত্রাসী রাকিব এবং সন্ত্রাসী শিকদারকে ভিক্টিম হাফিজ উল্লাহকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য বার্তা পাঠানো হয়। আহ্বানে সাড়া দেয়নি চক্রটি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ভিক্টিমকে উদ্ধারের জন্য ১৫ জুন র্যাব, বিজিবি, পুলিশ, এপিবিএন ও বন বিভাগের ২৫৬ জন জনবল নিয়ে ভিক্টিমকে আটকে রাখার সম্ভাব্য গহিন অরণ্যে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে। একপর্যায়ে অপহরণের ৭২ ঘণ্টা পরে ভিক্টিম হাফিজ উল্লাহকে উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে ১টি দেশীয় অস্ত্র, ৩ রাউন্ড অ্যামুনেশনসহ র্যাবের ইউনিফর্ম ও ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, হাফিজুল্লাহ অপহরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসীদের আটক করতে পারলেও এখনও রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী নবি হোসেন ও কুখ্যাত ডাকাত শাহ আলমসহ কয়েকজন ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। পলাতক সন্ত্রাসীদের ধরার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।