মাগুরা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ জুন ২০২৫ ১৮:৩৫ পিএম
আপডেট : ২৯ জুন ২০২৫ ১৮:৩৫ পিএম
মাগুরার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে গত ১০ জুন থেকে নেই জলাতঙ্ক প্রতিরোধী টিকা (র্যাবিস ভ্যাকসিন)। বাইরের ফার্মেসি থেকে বেশি দামে টিকা কিনে এনে চিকিৎসাসেবা নিতে হচ্ছে হাসপাতালে আসা আহত রোগীদের। এদিকে টিকার আশায় অপেক্ষা করছেন অনেক রোগী। ফলে আহতরা জলাতঙ্ক রোগের স্বাস্থ্যের ঝুঁকিতে রয়েছেন। হাসপাতালে টিকা না থাকায় চড়া দামে বিক্রি করছেন ফার্মেসি ব্যবসায়ীরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এইচএসএম (হসপিটাল সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট) বিভাগ হাসপাতালে টিকা সরবরাহ করে থাকে। জেলায় প্রতিদিন ৮০-৯০ জন আহত রোগীরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। বছরে চাহিদা ২৫ হাজার টিকা (র্যাবিস ভ্যাকসিন)। সেখানে চাহিদার তিন ভাগের এক ভাগ টিকা সরবরাহ করে থাকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, আহত রোগীরা এসেই দেখতে পান দেয়ালে এবং টেবিলে র্যাবিস ভ্যাকসিন সরকারিভাবে সরবরাহ নেইÑ এমন বার্তা টানিয়ে রাখা হয়েছে। এতে হতাশ হয়ে অনেকেই ফিরে যাচ্ছেন। বন্যপ্রাণীর কামড় বা আঁচড়ে টিকা নিতে দেরি করায় এসব রোগীদের জলাতঙ্ক রোগ ঠেলে দিচ্ছে মৃত্যুর দিকে। কেউ আবার চড়া দামে বাইরের ফার্মেসি থেকে কিনে ভাগাভাগি করে টিকা নিচ্ছেন। ভুক্তভোগীরা জলাতঙ্ক রোগ থেকে বাঁচতে দ্রুত এর সমাধান চান।
ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে আসা মনোয়ারা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে কুকুরে কামড়েছে। হাসপাতালে ইনজেকশন নেই। হাসপাতালে দুদিন এলাম। ইনজেকশন বাইরে পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন, কিন্তু কেনার মতো সামর্থ্য নেই। মোহাম্মদ আইয়ুব হোসেন বলেন, আমার মেয়ে আর স্ত্রীকে বিড়ালে কামড় দিয়েছে। হসপিটালে এসে শুনলাম ভ্যাকসিন নেই। বাহিরে ভ্যাকসিন পাওয়া যায় কিন্তু দাম বেশি। শিক্ষার্থী আনিসুর রহমান বলেন, কলেজ থেকে ফেরার পথে কুকুর আঁচড় দেয়। হাসপাতালে ভ্যাকসিন নেই। তাই চারজনে মিলে একটি টিকা ৫৫০ টাকা দিয়ে ফার্মেসি থেকে কিনে ভাগ করে নিয়েছি।
সামাজিক কর্মী ও সাবেক অধ্যক্ষ কাজী নজরুল ইসলাম ফিরোজ বলেন, জেলায় বছরে প্রায় ২৫-৩০ হাজার মানুষ বন্যপ্রাণীর কামড়ে আহত হন। এদের সময়মতো ভ্যাকসিন পাওয়ার নিশ্চয়তা হাসপাতাল করতে পারেনি। এভাবে অবহেলা করলে সমাজে জলাতঙ্ক রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাবে।
মাগুরা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহসিন উদ্দিন বলেন, হাসপাতালে র্যাবিস ভ্যাকসিন মজুদ শেষ। নতুন করে চাহিদা পাঠানো হয়েছে। আশা করছি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দ্রুতই এই টিকা সরবরাহ করবে। এক্ষেত্রে রোগীরা বেইরে থেকে টিকা কিনে আনলে নার্সরা ইনজেকশন দিয়ে দিচ্ছেন।