হবিগঞ্জ সংবাদদাতা
প্রকাশ : ২৯ জুন ২০২৫ ১৫:৩৭ পিএম
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে কালনী-কুশিয়ারা নদীর ভাঙন শুরু হয়েছে। বর্ষার পানি বাড়তে শুরু হওয়ায় এই ভাঙন দেখা দিয়েছে। শতাধিক পরিবার দিনরাত আতঙ্কে রয়েছে, কখন বসতভিটা নদী গর্ভে চলে যায় এই ভয়ে। তারা নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।
নদীর তীর ঘেঁষা ৭-৮টি গ্রাম আছে। এগুলো সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পড়েছে। তবে সৌলরীর বাসিন্দাদের বেশিমাত্রায় আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছে। ইতোমধ্যে নদীর তীরবর্তী মনিপুর, কালনীপাড়া ও ফিরোজপুরের মানুষেরা বড় ধরনের ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে যেকোনো মুহূর্তে বহু বসতবাড়ি নদীতে চলে যেতে পারে।
তিন দশক ধরে ভাঙনে ভিটেমাটিছাড়া হয়েছে এই উপজেলার সহস্রাধিক পরিবার। নতুন করে ভাঙনে আরও শতাধিক পরিবারের বসতবাড়ি হারানোর ভয়ে আছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, নদী ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের জিও ব্যাগ ভাঙনের বিপরীতে কোনো প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারছে না।
সৌলরী গ্রামের রেখা রাণী সূত্রধর বলেন, ‘কদিন আগে তার বসতবাড়ি নদীতে চলে গেছে। এখন অন্যের বাড়িতে বাস করছেন। তিনি যে বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন, সেই বাড়িটিও যেকোনো সময় নদীগর্ভে চলে যেতে পারে।
সুজিত দাস বলেন, নদীর ভাঙন যেন তাদের নিয়তি। বাপ-দাদার ভিটা একটু একটু করে চোখের সামনে নদীতে চলে যেতে দেখছেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ প্রতিরোধে যথাযথ পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে আসেনি। পানি উন্নয়ন বোর্ড শুধু লোকদেখানো জিও ব্যাগ ফেলে। এতে আসলে কাজের কাজ কিছু হয় না। ভাঙন ঠেকানো যায় না।
বাবুল সূত্রধর বলেন, দিন দিন নদী ভাঙন বেড়েই যাচ্ছে। বসতভিটার বেশির ভাগই নদী খেয়ে ফেলেছে। বাকি অংশটুকুও যেকোনো সময় খেয়ে ফেলতে পারে।
আজমিরীগঞ্জের ইউএনও নিবিড় রঞ্জন তালুকদার বলেন, ‘সৌলরী বাজার, মনিপুর, বদরপুর ও কালনীপাড়ার তীরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী পরিদর্শন করে রিপোর্ট করেছেন। দ্রুত আপৎকালীন জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। নদীর তীর সংরক্ষণে কাজ শুরু হচ্ছে।’
হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ বলেন, ‘যেসব স্থানে বেশি ভাঙন, সেখানে দ্রুত কাজ শুরু হবে। ইতোমধ্যে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে।’