লামা-আলীকদম (বান্দরবান) সংবাদদাতা
প্রকাশ : ২৮ জুন ২০২৫ ২০:৪৯ পিএম
ইউএনও মো. মঈন উদ্দিন।
আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে আঁতাত, স্পট নিলামের নামে সরকারকে লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত ও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করার অভিযোগে লামার ইউএনও মো. মঈন উদ্দিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ করেছে উপজেলার আজিজনগর ইউনিয়নের পূর্বচাম্বী, আমতলী পাড়া, ডিগ্রীখোলা, ধূইল্যাপাড়া, কম্পনিয়া এলাকার লোকজন।
অভিযোগকারীরা জানান ইতোমধ্যে দুদক ও বান্দরবান জেলা প্রশাসন থেকে একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করে এ বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি মোবাইল ফোনে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘দুদকে করা অভিযোগের অনুলিপি জেলা প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে আহ্বায়ক করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উপজেলার আজিজনগর ইউনিয়নের পূর্বচাম্বী, আমতলী পাড়া, ডিগ্রীখোলা, ধূইল্যাপাড়া, কম্পনিয়া এলাকার বাসিন্দা ২৭ জনের সই করা এক অভিযোগে বলা হয়েছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দলটির কতিপয় নেতা যথাক্রমেÑ লোহাগাড়া উপজেলার দক্ষিণ সুখছড়ি গ্রামের আবদুল আজিজের ছেলে দিদারুল ইসলাম জিসান গং, লামার আজিজনগর ইউনিয়নের পূর্বচাম্বী আমতলী এলাকার মৃত জয়নাল আবেদীন মেম্বারের ছেলে আবুল হোসেন গং এবং লামার সরই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড সভাপতি ও ইউপি মেম্বার নাছির উদ্দিন গং মিলে চাম্বী মৌজার মুসলিম পাড়ায় ডলুখাল থেকে ২টি স্পটে অবৈধভাবে প্রায় ৮ লাখ ঘনফুট উত্তোলন করে। প্রায় ৪ বছর আগে এই বালু পাচার করার জন্য মজুদ করে রাখা হয়েছিল। পরিবেশ অধিদপ্তরের বাধায় বালু পাচার করা সম্ভব হয়নি।
আরও বলা হয়েছে আওয়ামী লীগ নেতারা উপজেলা ইউএনও মো. মঈন উদ্দিনের সঙ্গে আঁতাত করে অবৈধভাবে উত্তেলিত এই সব বালু নামমাত্র দামে স্পট নিলাম দেখায়। স্পট নিলামে বালুর প্রকৃত পরিমাণ উল্লেখ করে নিলাম দেওয়া হয়নি। ২টি স্পটে ৮ লক্ষাধিক ঘনফুট বালু মজুদ থাকলেও স্পট নিলামে বালুর পরিমাণ দেখানো হয়েছে মাত্র দেড় লাখ ঘনফুট। একটি সমঝোতার ভিত্তিতে বালুর প্রকৃত পরিমাণ কমিয়ে স্পট নিলাম দেওয়া হয়েছে।
স্পট নিলামের ফলে এই এলাকায় অবাধে বালু পাচার করা হচ্ছে। অবৈধভাবে বালু পাচারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে বালু পাচারকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছে। স্পট নিলামের নামে নামমাত্র দামে ৮ লক্ষাধিক ঘনফুট বালু আওয়ামী লীগের নেতাদের দিয়ে দেওয়ায় সরকার প্রায় ১৫ লাখ টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে ও সরকারের কোনো ধরনের নিয়মনীতি অনুসরণ করা হয়নি। উম্মুক্ত নিলামের মাধ্যমে এই বালু বিক্রয় করার মৌখিক আবেদন জানানোর পরও তিনি আমাদের আবেদন আমলে নেননি। এ ব্যাপারে স্থানীয়রা উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের অনুরোধ করে।
লামা উপজেলা ইউএনও মো. মঈন উদ্দিন বলেন, অভিযোগের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। স্থানীয় লোকজনের সামনে সার্ভেয়ার দিয়ে পরিমাপ করে বালু স্পট নিলাম দেওয়া হয়েছে।