ভাণ্ডারিয়া (পিরোজপুর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ জুন ২০২৫ ২০:০৩ পিএম
আপডেট : ২৮ জুন ২০২৫ ২০:২৪ পিএম
পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় চাকরি দেওয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি এবং বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগে উপজেলার নদমূলা গ্রামের আলমগীর হোসেন গাজীকে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
শনিবার (২৮ জুন) সকালে থানার সামনে এলাকাবাসীর ব্যানারে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। অভিযুক্ত আলমগীর গাজী নদমূলা গ্রামের আলী আহমদ গাজীর ছেলে।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেনÑ সৌদিপ্রবাসী লোকমান হোসেন গাজী, মো. মামুন সরদার, মজিবুর রহমান, ইব্রাহিম হাওলাদার, মো. জাকির হোসেন খান, মো. ইউছুব হাওলাদার, সাথী আক্তার, কাওছার হোসেন সরদার ও মো. হোসেন গাজী। এতে কয়েকশ নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।
বক্তারা জানান, বাগেরহাট পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী আলমগীর গাজী গত দুই বছরে নদমূলা গ্রামের বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। টাকা ফেরত চাইতে গেলে মারধর, মিথ্যা মামলায় হয়রানি এবং হুমকি দেন তিনি।
নদমূলা গ্রামের মো. শাহজাহান সরদারের ছেলে এবং পিরোজপুর আদালতের নোটিস জারিকারক মো. মামুন সরদার বলেন, আমার মামাতো ভাই ভিটাবাড়ীয়া গ্রামের রাব্বি হাওলাদারকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ২০২৪ সালে ৫ লাখ টাকা নিয়েছিল আলমগীর। চাকরি দেয়নি, টাকা ফেরত চাইতে গেলে গালাগাল ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়।
একই গ্রামের আ. রব হাওলাদারের ছেলে ইব্রাহিম হাওলাদার ৩ লাখ টাকা নিয়েছিলেন চাকরি দেওয়ার কথা বলে। তিনি জানান, চাকরি দেয়নি, উল্টো মিথ্যা মামলা দিয়ে হুমকি দেয়।
আ. মালেক গাজী জানান, তার ছেলেকে খাদ্য অধিদপ্তরে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ২ লাখ টাকা নিয়েছে আলমগীর। মৃত মোসলেম খানের ছেলে জাকির খানকে খাদ্য অধিদপ্তরে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
একটি গভীর নলকূপ দেওয়ার কথা বলে পিয়ারা বেগমের কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা এবং বিআরটিএ থেকে মোটর ড্রাইভিং লাইসেন্স করিয়ে দেওয়ার কথা বলে মো. কাওছার সরদারের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছে, যা এখনও ফেরত দেয়নি।
এ ছাড়া বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে আরিফ গাজীর কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা নিয়েছে। অসহায় কোহিনুর বেগমকে বয়স্ক ভাতা দেওয়ার কথা বলে ২ হাজার ৫০০ টাকা নেওয়া হয়েছে, যা ফেরত দেওয়া হয়নি।
সৌদিপ্রবাসী মো. লোকমান হোসেন গাজী বলেন, আলমগীর গাজী একজন ভূমিদস্যু, সন্ত্রাসী ও প্রতারক। নিজেকে পুলিশ সুপারের বড় কর্মকর্তা এবং স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে সখ্য আছে বলে পরিচয় দিয়ে বহু মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সে তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, আমাকে এবং আমার পরিবারের সদস্যদের মারধর করেছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, টাকা ফেরত চাইলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেয় এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। কয়েক লাখ টাকা আত্মসাৎ করে বাগেরহাট ও খুলনায় দুটি বাড়িও কিনেছে আলমগীর গাজী।
অভিযুক্ত বাগেরহাট পুলিশ সুপার কার্যালয়ের অফিস সহায়ক আলমগীর গাজী এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এলাকার একটি পরিবারের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ থাকায় তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তিনি ও তার পরিবারকে হামলা করেছে ওই চক্রটি এবং তিনি এ বিষয়ে মামলা দায়ের করেছেন।