ফেনী
আবদুল্লাহ আল-মামুন, ফেনী
প্রকাশ : ২৮ জুন ২০২৫ ১৮:৩৭ পিএম
আপডেট : ২৮ জুন ২০২৫ ১৮:৩৮ পিএম
কালিদাস পাহালিয়া নদীর দুই পাড় ভাঙনে ফেনী সদরের লেমুয়া ইউনিয়ন ও সোনাগাজী উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের সংযোগ ব্রিজটি ধসে পড়তে শুরু করেছে। টানা বৃষ্টিতে গত কদিন ফেনীর কালিদাস পাহালিয়া নদীর পানির চাপ বাড়ায় ব্রিজের দুই পাশে ভাঙন শুরু হয়েছে। ব্রিজের পাশ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় এতে যান চলাচল বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে দুই উপজেলার মানুষ পড়বে চরম দুর্ভোগে।
জানা যায়, ১৯৯০ সালের মাঝামাঝি সময়ে ফেনী সদরের লেমুয়া ইউনিয়নের মজুমদার হাটসংলগ্ন কালিদাস পাহালিয়া নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের পর ফেনী সদরের সঙ্গে সোনাগাজী উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের সংযোগ সৃষ্টি হয়।
এতে দুই উপজেলার উৎপাদিত কৃষিপণ্য পরিবহনে সহজতর হয়। দুই এলাকার মধ্যে তৈরি হয় মেলবন্ধন। নদীর এপারে ওপারে হাটবাজারসহ বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। এছাড়া বিজ্রটির কারণে সহজে জেলা শহরে যাতায়াতের পথ সুগম হয়।
স্থানীয়রা জানায়, কয়েক বছর ধরে বালুখেকোরা অবৈধভাবে কালিদাস পাহালিয়া নদী থেকে বালু উত্তোলন করেছে। এ কারণে নদীর পাড় ভেঙে বাড়িঘর বিলীন হতে শুরু করে। তারপরও বালুখেকোদের থাবা প্রশাসন বন্ধ করেনি। ফলে সেতুর দুই পাড়ে ভাঙন সৃষ্টি হয়।
স্থানীয়রা জানান, গত কদিন ধরে ভারী বর্ষণ ও কালিদাস পাহালিয়া নদীর পানি বাড়ায় সেতুর দুই পাড়ে ব্যাপক ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। আশপাশের স্থাপনা ধসে নদীতে তলিয়ে গেছে। এ সময় লেমুয়া-নবাবপুর ব্রিজটি অন্তত ১ ফুট ধসে গেছে। দিন দিন ধসের মাত্রা বাড়ায় স্থানীয়রা শঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, সেতুর দুই পাড়েই উৎসুক মানুষ জড়ো হয়ে ধসে পড়া স্থান দেখছে। ব্রিজের পশ্চিম পাড়ের অংশ অতিরিক্ত ধসে পড়ায় একটি অংশে যান চলাচল সাময়িক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যে অংশ যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত রয়েছে, সেই অংশে সতর্কতভাবে ছোট ছোট যানবাহন পার হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা বলেন, বালুখেকোদের কারণে মানুষের ঘরবাড়ি নদীতে ভেসে যাচ্ছে। বিজ্রটি ধসে পড়তে শুরু করেছে। এখনই জরুরি ভিত্তিতে এটি রক্ষায় উদ্যোগী না হলে দুই উপজেলার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। স্থানীয়রা ভয়ানক কষ্টে পড়বে।
নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন বলেন, ‘এ ব্রিজটির ওপর দিয়ে নবাবপুর বাজারসহ আশপাশের এলাকায় পণ্য পরিবহন হয়ে থাকে। এটি পুরোপুরি ধসে গেলে পণ্য সরবরাহে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটবে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও মানুষের স্বাভাবিক কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে আসবে।’
স্থানীয় নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম জহির বলেন, বিজ্রটির অবস্থা সম্পর্কে প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। প্রশাসন জরুরি ভিত্তিতে এটি রক্ষায় এগিয়ে আসার আশ্বাস দিয়েছে। আশা করি, এটি ধসে পড়ার আগেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ফেনীর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী অলক দাস বলেন, ‘খবর পেয়ে ব্রিজটি দেখে এসে ঊর্ধ্বতনদের জানানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এখানে ভাঙন ও ধস ঠেকাতে জিওব্যাগ ফেলা হবে। পানি কমলে স্থায়ীভাবে মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’