× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

মৌলভীবাজার

খননে বরাক নদী পুনরুজ্জীবিত হয়নি

ইসমাইল মাহমুদ, মৌলভীবাজার

প্রকাশ : ২৮ জুন ২০২৫ ১৮:৩২ পিএম

আপডেট : ২৮ জুন ২০২৫ ১৮:৪২ পিএম

খননে বরাক নদী পুনরুজ্জীবিত হয়নি

মৌলভীবাজার জেলার গুরুত্বপূর্ণ বরাক নদী। কুশিয়ারা নদী থেকে জন্ম নেওয়া বরাক নদী জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেছে। এক সময় কৃষিকাজে সেচের পানি সরবরাহের অন্যতম মাধ্যম ছিল। বর্তমানে খরস্রোতা এ নদী বিলীন হওয়ার পথে। কয়েক দশক আগেও এ নদীতে লঞ্চ-স্টিমার চলতো। এ নদীপথ ঘিরে বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্য সচল ছিল।

একসময় পানিতে নদীটি টইটুম্বুর থাকলেরও এখন ভরা বর্ষাতেও এর কোনো কোনো জায়গায় হাঁটুপানির দেখা মেলে না। শুকনো মৌসুমে এর বুক চিরে মানুষ পায়ে পারাপার হচ্ছে। এর প্রাণ ফিরিয়ে আনতে ৭ বছর আগে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮ কিলোমিটার খনন কাজ চালানো হয়। অভিযোগ রয়েছে, খনন কাজ করা হয় অপরিকল্পিতভাবে। খনন কাজে অনিয়ম-দুর্নীতি হওয়ায় বিশাল অঙ্কের টাকার অপচয় হয়েছে শুধু। যে লক্ষ্যে খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়, তা অনিয়ম-দুর্নীতিতে হাতছাড়া হয়ে যায়। বরং বেশি পরিমাণ ক্ষতিই বয়ে এনেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ১ নম্বর খলিলপুর ইউনিয়ন এবং ২ নম্বর মনুমুখ ইউনিয়নের সীমানা ঘেঁষে বয়ে গেছে এক সময়ের খরস্রোতা বরাক নদী। শেরপুরের কুশিয়ারা তীরের বাহাদুরপুর নামক স্থানে এটি বরাক নদী নামাঙ্কিত হয়ে হবিগঞ্জের ফুটারচরে গিয়ে নদীটি দুটি শাখায় আলাদ হয়ে গেছে। একটি শাখা হবিগঞ্জের নবীগঞ্জের বিজনা নদীতে গিয়ে মিশেছে। বাউসা ইউনিয়নের বাঁশডর এলাকা থেকে বিজনা নদীর অন্য একটি শাখা কলকলিয়া নামে শুরু হয়ে টুনাকান্দি, চানপুর, চৌধুরী বাজার, বাউসা গ্রামের পাশ পর্যন্ত এসেছে। এরপর বাউসা থেকে কলকলিয়া নদী শাখা বরাক নামাঙ্কিত হয়ে উত্তর-পশ্চিমমুখী হয়ে নাদামপুর গ্রাম, নবীগঞ্জ বাজার, আক্রমপুর, চরগাঁও, আদিত্যপুর, কানাইপুর, তিমিরপুরের পাশ হয়ে বানিয়াচংয়ের শুঁটকি নদীতে মিলেছে। এর অন্য অংশ পুনরায় এসে মিলিত হয়েছে কুশিয়ারা নদীতে।

বছর কয়েক আগে ২০১৮ সালে বরাক নদীকে পুনরুজ্জীবিত করতে মৌলভীবাজার পাউবোর তত্ত্বাবধানে সদর উপজেলা অংশের খলিলপুর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রাম থেকে চাঁনপুর গ্রাম পর্যন্ত মোট ৮ কিলোমিটার অংশ খনন করা হয়। অপরিকল্পিত ওই খননে ব্যয় হয়েছিল ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। কুশিয়ারা তীরের যে স্থান থেকে বরাক নদীর জন্ম সে স্থানে (বাহাদুরপুর) সব সময় পলির স্তর জমে থাকে। পলির স্তরের উৎপত্তিস্থলটি অনেক উঁচু হওয়ায় ভরা বর্ষায় কুশিয়ারা নদী থেকে বরাক নদীতে পানি ঢুকতে পারে না। আর শুকনোকালে ওই সংযোগ বা উৎপত্তিস্থল মরুভূমির রূপ নেয়। বিস্ময়ের ব্যাপার হলো বরাক নদী খননের সময় অনেক অংশ ছেড়ে দিয়ে খনন করা হয়েছে। যে অংশ খনন করা হয়নি, তাতে প্রভাবশালীরা স্থাপনা তৈরি রয়েছে।

খলিলপুর ইউনিয়নের নসিরপুর গ্রামের বাসিন্দা তবারক মিয়া বলেন, ‘আমরা ছোটবেলায় দেখেছি বরাক নদী দিয়ে বড় বড় মালবোঝাই নৌকা চলত। নদীটি শুকনো মৌসুমেও পানিতে ভরপুর থাকত। বর্ষায় নদীতে প্রবল স্রোত বয়ে যেত। ধীরে ধীরে নদী তার যৌবন হারিয়েছে। এখন এটি মৃতপ্রায় খালে পরিণত হয়েছে। এখন এর রূপ দেখে বুঝার উপায় নেই এক সময় আগ্রাসী ছিল এ নদী।’

একই ইউনিয়নের আলাপুর গ্রামের ফটিক মিয়া বলেন, ‘কয়েক বছর আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড বরাক নদীর ৮ কিলোমিটার জায়গা খনন করেছিল। ওই সময়ে কিছু জায়গা ৫ ফুট, কিছু জায়গা ৭ ফুট এভাবে খনন করা হয়। লোক দেখানো খনন কাজ করা হয়। ফলে বরাকের তীরবর্তী কয়েকটি গ্রামের মানুষ ভয়ানক সংকটে পড়েছে। এ থেকে বাঁচতে পুনরায় খনন ও নদীর যে অংশে প্রভাবশালীদের দখলে রেখেছে, তাদের উচ্ছেদ করে নদীর গতিপথ ফিরিয়ে আনতে হবে।’

মৌলভীবাজার পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী খালেদ বিন অলীদ বলেন, ‘বরাক নদীর বিভিন্ন অংশ ভরাট করে অনেক স্থানে গ্রামীণ সড়ক, ব্রিজ, কালভার্টসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। এতে নদী খননকালে কিছু জায়গা খনন করা যায়নি। আবার কিছু জায়গায় খননে সমস্যাতেও পড়তে হয়েছে। এ ছাড়া বরাক নদীর হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলা অংশ খনন করা হয়নি। ওই অংশ খনন করা হলে পানি স্বাভাবিক গতি ফিরে আসবে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা