× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

জি-৩ রুই চাষে সম্ভাবনা

রেজাউল করিম লিটন, চুয়াডাঙ্গা

প্রকাশ : ২৮ জুন ২০২৫ ০৯:৪০ এএম

জি-৩ রুই চাষে সম্ভাবনা

চুয়াডাঙ্গায় ব্যাপকভাবে শুরু হয়েছে জি-৩ জাতের রুই মাছের চাষ। ওয়ার্ল্ড ফিশ উদ্ভাবিত তৃতীয় প্রজন্মের এ মাছ চাষি পর্যায়ে বেশ সাড়া ফেলেছে। প্রথমদিকে এ মাছ চাষে চাষিদের তেমন আগ্রহ না থাকলেও অধিক বর্ধনশীল ও লাভজনক হওয়ায় এখন অনেকেই এ মাছ চাষের প্রতি ঝুঁকছেন।

এতে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা করছে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) কৃষি ইউনিটভুক্ত মৎস্য খাত। উত্তম ব্যবস্থাপনায় জি-৩ রুই মাছ চাষের এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ওয়েভ ফাউন্ডেশন। প্রকল্পের আওতায় ২০ জন মৎস্য চাষিকে বিনামূল্যে মাছের পোনাসহ মাছ চাষের জন্য ঝাঁকি জাল, চুন, খৈল, রাসায়নিক সার ও অন্যান্য উপকরণ দিয়ে মাছ চাষ করানো অব্যাহত রয়েছে বলে জানা যায়।

ওয়েভ ফাউন্ডেশনের মৎস্য কর্মকর্তা সাঈদ-উর-রহমান জানান, নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে মৎস্য চাষিরা অনেকেই অবগত নয়। আমরা চাষিদের প্রশিক্ষণ দিয়ে নতুন প্রযুক্তি ও চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার পাশাপাশি মাছের পোনাসহ মাছ চাষ সহায়ক উপকরণ সহায়তা দিয়ে এই মাছগুলো বাণিজ্যিকভাবে চাষের জন্য চাষিদের অনুপ্রাণিত করছি। মাছের উৎপাদন ও চাহিদা বেশি হওয়ায় চাষিরা এই জি-৩ রুই মাছ চাষ করে দ্বিগুণ মুনাফা অর্জন করছেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুর গ্রামের মৎস্য চাষি মহিউদ্দীন আহম্মেদ বলেন, ওয়েভ ফাউন্ডেশনের সহায়তায় জি-৩ জাতের রুই মাছের পোনা চাষ শুরু করেছি। শুনেছি জি-৩ রুই মাছ প্রচলিত রুই মাছের চেয়ে প্রায় ৩০ থেকে ৩৭ শতাংশ বেশি বৃদ্ধি পায়। আমার পুকুরে মাত্র চার মাসে পোনা ৭০০ গ্রাম ওজনের হয়েছে। দীর্ঘ মাছ চাষের জীবনে এমন বেশি বর্ধনশীল মাছ কখনও দেখিনি।

হালদা, পদ্মা ও যমুনা নদীর রুই মাছ থেকে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তিন বার জেনেটিক পরিবর্তন করে উদ্ভাবন করা হয়েছে এ জাত। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফিশ উদ্ভাবিত তৃতীয় প্রজন্ম বা জি-৩ কম খাবার খায়, পুষ্টি বেশি ও দেখতে উজ্জ্বল। দেশি রুইয়ের মতোই স্বাদ, অধিক বর্ধনশীল-এ জি-৩ মাছের পরীক্ষামূলক চাষে চাষি পর্যায়ে ব্যাপক সফলতা দেখা গেছে। প্রচলিত অন্যান্য জাতের মাছের চেয়ে ৩০ থেকে ৩৭ শতাংশ বর্ধনশীল এ মাছ চাষে ব্যাপক আশা দেখছেন মাছ চাষিরা।

জানা গেছে, রুই মাছের ডিমের জিনগত বৈশিষ্ট্য পরিবর্তনের মাধ্যমে উন্নত জাত উদ্ভাবনে ওয়ার্ল্ড ফিশের এ প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০১২ সালে। পরে খুলনা বিভাগের ১০টি ও রাজশাহী বিভাগের ৯টি খামারে পরীক্ষামূলকভাবে রুইয়ের জি-৩ জাতের মাছের চাষ করা হয়। সেখানে হালদা, পদ্মা ও যমুনা নদীর প্রাকৃতিক রুইয়ের ডিম, দেশের একটি হ্যাচারি থেকে বাণিজ্যিক চাষের জন্য ব্যবহার করা ডিম ও ওয়ার্ল্ড ফিশের জেনেটিক্যালি মোডিফায়েড ডিম থেকে পোনা উৎপাদন করে মাছ বড় করা হয়। পরীক্ষায় দেখা যায়, ওই ১৯টি খামারে জি-৩ জাতের রুই সবচেয়ে দ্রুত বড় হয়েছে এবং অন্য জাতের চেয়ে এ জাতের মাছের ওজন গড়ে ৩৭ শতাংশ বেশি।

স্বাধীনতাপরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে মাছের উৎপাদন ক্রমাগত বেড়েছে। তবে উদ্বেগের বিষয় হলো জলাশয়ের সংখ্যা কমেছে, জলদূষণ বেড়েছে, বসতবাড়ি নির্মাণের কারণে আবাদি জমি কমেছে। ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বে এখনকার উৎপাদনের চেয়ে দ্বিগুণ পরিমাণ মাছের চাহিদা তৈরি হবে। আর এ মাছের জোগান দিতে হবে চাষ থেকে। কারণ আহরণের মাছের পরিমাণ শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বেই কমছে। মাছের উৎপাদন দ্বিগুণ করতে পারলে বাংলাদেশ যেখানে বিশ্বে বর্তমানে পঞ্চম অবস্থানে আছে, সেখান থেকে এগিয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে জি-৩ রুই মাছ চাষ নতুন সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা