দুটি তদন্ত কমিটি গঠন
নওগাঁ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ জুন ২০২৫ ২২:২৯ পিএম
নওগাঁর ধামইরহাট থানায় রক্ষিত একটি বাক্সের তালা ভেঙে আসন্ন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করা হয়েছে। ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র আদৌ ছড়িয়ে পড়েছে কি না তা নিয়ে ধূম্রজাল তৈরি হয়েছে। ঘটনার সঠিক তদন্তে জেলা প্রশাসন দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আগামী ৩ দিনের মধ্যে দুই কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত মঙ্গলবার এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের একটি ট্রাঙ্ক থানায় রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আসে। ট্রাঙ্কটি থানার একটি হাজতখানায় রাখা হয়। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকালে উপজেলা পরীক্ষা কমিটির সদস্যরা প্রশ্নপত্রের বাক্স দেখতে এলে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা তাদের চোখে ধরা পড়ে।
এ বিষয়ে উপজেলা পরীক্ষা কমিটির সদস্য ও ধামইরহাট সরকারি এমএম ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ওই ট্রাঙ্কে ধামইরহাট সরকারি এমএম ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রের ইতিহাস দ্বিতীয় পত্রের ৭০ মার্কের লিখিত পরীক্ষার ৫০ সেট প্রশ্নপত্র ছিল। বৃহস্পতিবার থানায় গিয়ে দেখা যায়, ট্রাঙ্কের তালা খোলা। ট্রাঙ্ক ভেঙে প্রশ্নপত্র বের করা হয়েছে। বাইরে দুটি প্রশ্নপত্র ছেঁড়া অবস্থায় পাওয়া গেছে।’
বাক্স ভেঙে প্রশ্নপত্র বের করা হলেও তা বাইরে ছড়িয়ে পড়েনি বলে দাবি করেছেন নওগাঁর পুলিশ সুপার সাফিউল সারোয়ার। তিনি বলেন, থানার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে এটি নিশ্চিত হয়েছেন তারা। অন্যদিকে দায়িত্বে অবহেলার দায়ে ইতোমধ্যে ধামইরহাট থানার একজন সাব-ইন্সপেক্টর ও একজন কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে তাদের নাম-পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে।
এসপি আরও বলেন, ‘ঘটনা তদন্তে পত্নীতলা পুলিশ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরিফুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি তদন্ত করছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘যিনি হাজতখানায় রাখা ট্রাঙ্ক থেকে প্রশ্নপত্র বের করেছেন, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য থানায় আনা হয়েছিল। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে ওই ব্যক্তির পরিচয় জানানো যাচ্ছে না।’
একটি সূত্র জানায়, গত ২৪ এপ্রিল রাতে উপজেলার বড়থা বাজারে দুর্বৃত্তের হামলায় উজ্জল হোসেন নামে এক ছাগল ব্যবসায়ী নিহত হন। এই মামলার আসামি বংশিবাটি এলাকার সাগর হোসেনকে আটক করে মঙ্গলবার রাতে থানায় আনা হয়। পরে তাকে থানা হাজতে রাখা হয়।
অন্যদিকে নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি সাদিয়া আফরিনকে প্রধান করে আরও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে কাজ করছে এই কমিটি। এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটির প্রধান সাদিয়া আফরিন বলেন, ‘তদন্তের কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে।’ তিনি বলেন, ‘প্রশ্নপত্র সংরক্ষণ করার ক্ষেত্রে গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে পরেছে কি না তা এখনও জানা যায়নি।’ আজ শনিবার ধামইরহাট থানায় রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের একটি প্রতিনিধি দল ঘটনা তদন্তে যাবেন বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, আগামী ২৬ জুন থেকে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।