মুরাদনগর (কুমিল্লা) সংবাদদাতা
প্রকাশ : ২০ জুন ২০২৫ ১৭:২৫ পিএম
নিহত ব্যবসায়ী শেখ জুয়েল।
কুমিল্লার বাঙ্গরায় পুলিশ হেফাজতে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাতে মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশের হেফাজতে থাকাকালীন এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যবসায়ী শেখ জুয়েল (৪৫) ৬ নম্বর বাঙ্গরা পূর্ব ইউনিয়নের বাঙ্গরা গ্রামের মৃত শেখ গোলাম সারোয়ারের ছেলে। জুয়েল পেশায় একজন ওয়াইফাই ও ডিশ ব্যবসায়ী।
এদিকে নিহত ব্যবসায়ী জুয়েলের মৃত্যুর পর তাকে নিয়ে চলছে রাজনৈতিক টানাহ্যাঁচড়া। কেউ দাবি করছেন তিনি বিএনপির নেতা আবার কেউ বলছেন জুয়েল দীর্ঘদিন আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, জুয়েল একসময় আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। তবে গত কয়েক বছর ধরে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ছিলেন না। তিনি ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। শেখ জুয়েলের ছোট ভাই শেখ শাহপরান রুবেল বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।
পুলিশ জানায়, জুয়েল মাদকাসক্ত ছিলেন। তাকে একটি বাড়ি থেকে ৭০ পিস ইয়াবাসহ আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। থানায় আনার পর বুকে ব্যথা অনুভব করলে তাকে চিকিৎসার জন্য মুরাদনগর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। তাকে নির্যাতন করার বিষয়টি অস্বীকার করে থানা পুলিশ ।
নিহতের স্ত্রী শিল্পী বেগম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকালে আমার স্বামী ওয়াইফাইয়ের বিল কালেকশন করতে বেরিয়ে যান। দুপুরের পর খবর পাই তাকে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে গেছে।’
থানায় গিয়ে আমার স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। প্রথমে পুলিশ বাধা দেয়। পরে অনেক অনুরোধ করে স্বামীর সঙ্গে দেখা করি। তখন জুয়েল আমাকে জানায়, বিনা কারণে পুলিশ তাকে আটক করেছে।
নিহতের ছেলে শেখ সিহাব বলেন, ‘বিনা অপরাধে পুলিশ আমার বাবাকে ধরে নিয়ে মেরে ফেলছে। আমার বাবাকে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যাপারেও পুলিশ আমাদের কিছু জানায়নি। আমরা হাসপাতালে গিয়ে বাবার মৃতদেহ দেখতে পেয়েছি।’
বাঙ্গরা ইউনিয়ন বিএনপি নেতা শেখ সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার চাচাতো ভাই জুয়েলকে বাঙ্গরা বাজার থানার এসআই আল আমিন ধরে নিয়ে গেছে খবর পাই। রাত সাড়ে ৮টায় কল দিয়ে জুয়েলের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ আমাকে মুরাদনগর হাসপাতালে আসতে বলে। হাসপাতালে গিয়ে দেখি আমার ভাইকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালের বারান্দায় ফেলে রাখা হয়েছে।’
মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সিরাজুল ইসলাম মানিক বলেন, ‘রাত পৌনে ৯টার দিকে ভিকটিমকে পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে আসে। আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখলে তাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পাই।’
বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘৭০ পিস ইয়াবাসহ জুয়েলকে আটক করে বাঙ্গরা বাজার থানার পুলিশ। শেখ জুয়েল অসুস্থ হলে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। নিহতের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মর্গে পাঠানো হয়েছে।’