আমতলী (বরগুনা) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২৫ ২২:০৭ পিএম
আপডেট : ১৯ জুন ২০২৫ ২২:৩৯ পিএম
আমতলী সদর ইউনিয়নের যুবদল আহ্বায়ক ও ইউপি সদস্য ফিরোজ খান তাপস।
বরগুনার আমতলীতে চায়ের দোকানে বসে জোরপূর্বক স্বাক্ষর আদায় করে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে যুবদল নেতা ও ইউপি সদস্য ফিরোজ খান তাপসের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে আমতলী উপজেলা পরিষদ সড়কের একটি চায়ের দোকানে এ ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, আমতলী সদর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধা এক বছর ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তবে গত ১৬ জুন থেকে আমতলী সদর ইউনিয়নের যুবদল আহ্বায়ক ও ইউপি সদস্য ফিরোজ খান (তাপস) তাকে ইউনিয়ন পরিষদে যেতে দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন চেয়ারম্যান মিঠু। তিনি জানান, অফিসে গেলে হুমকি, মারধর এবং মিথ্যা মামলার ভয় দেখানো হচ্ছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে চেয়ারম্যান মিঠু স্থানীয় এক চায়ের দোকানে বসেছিলেন। ওই সময় যুবদলের আহ্বায়ক ও ইউপি সদস্য তাপস খান, দুই ইউপি সদস্য মাসুদ ও জসিমসহ কয়েকজন যুবদল নেতাকর্মী গিয়ে তাকে একটি চিঠিতে স্বাক্ষর দিতে বলেন। চেয়ারম্যান স্বাক্ষর দিতে রাজি না হলে তাপস খান হুমকি দিয়ে বলেন, হয় স্বাক্ষর দেন, নইলে থানায় চলেন। পরে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হয়। ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, চেয়ারম্যান মিঠু অসুস্থতার কারণে ২ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ফিরোজ খানকে (তাপস) ১৯ জুন থেকে আগামী ১০ জুলাই পর্যন্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, চায়ের দোকানে বসেই চেয়ারম্যানের কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বাক্ষর আদায় করা হয়। দোকানদার শ্যামল বলেন, চেয়ারম্যান আমার দোকানে বসা ছিলেন। পরে তাপস খানসহ কয়েকজন লোক এসে চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারপর কী হয়েছে আমি জানি না? এর বেশি কিছু বলতে পারব না।
আমতলী সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম মিঠু বলেন, গত ১৬ জুন থেকে আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে আমি শ্যামলের চায়ের দোকানে বসা ছিলাম। ওই সময় তাপস খানসহ যুবদল নেতাকর্মী এসে আমাকে তার লেখা একটি পত্রে স্বাক্ষর দিতে বলে। আমি স্বাক্ষর দিতে চাইনি। পরে হুমকি দেয় ‘হয় স্বাক্ষর দেন, নইলে থানায় চলেন’। আমি নিরুপায় হয়ে স্বাক্ষর দিয়েছি।
অন্যদিকে অভিযুক্ত ফিরোজ খান (তাপস) স্বাক্ষর আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, চেয়ারম্যান অসুস্থ থাকায় দায়িত্ব দিয়েছেন। তবে চায়ের দোকানে কেন দায়িত্ব হস্তান্তর হলোÑ এই প্রশ্নের জবাবে তিনি উত্তর না দিয়ে ফোন কেটে দেন।
আমতলী উপজেলা যুবদল আহ্বায়ক কবির ফকির বলেন, এ ঘটনার বিষয়টি আমার জানা নেই। ফিরোজ খানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আমতলী থানার ওসি আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান খান বলেন, চেয়ারম্যানের কাছ থেকে জোর করে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে কি না, তা জানা নেই। এ বিষয়ে আমি কোনো চিঠিও পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।