যশোর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২৫ ২০:২৬ পিএম
আপডেট : ১৯ জুন ২০২৫ ২০:৪৭ পিএম
যশোরে করোনাভাইরাসে নতুন আক্রান্ত হয়ে ১২ ঘণ্টায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১৮ জুন) ভোরে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বাঘারপাড়া উপজেলার জহুরপুর গ্রামের শেখ আমির হোসেন। একই দিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে মারা যান মনিরামপুর উপজেলার মাহমুদকাটি গ্রামের ইউসুফ আলী (৪৫)।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে দুজনকেই প্রথমে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে করোনা পরীক্ষা করানো হয়, সেখানেই সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এরপর দ্রুত তাদের জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়া হয়, তবে শেষ পর্যন্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু ঘটে তাদের। আইসিইউ বিভাগের ইনচার্জ ডা. রবিউল ইসলাম তুহিন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আমির হোসেনের ছেলে বাবু অভিযোগ করেন, সরকার কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। করোনা শনাক্তের ব্যবস্থা না থাকায় বাবার সংক্রমণ ধরা পড়ে দেরিতে, আর ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে।
ইউসুফ আলীর পরিবারও চিকিৎসা ও সেবার ঘাটতির অভিযোগ তুলেছে। তাদের দাবি, সারাদিনে একবার চিকিৎসক ঘুরে যান, বাকি সময় রোগীদের দেখভাল করেন নার্সরা, যারা আবার দুর্ব্যবহার করেন এবং সংক্রমণের পর রোগীদের কাছেও যেতে চান না।
হাসপাতাল ঘিরে অনিয়মের চিত্রও উঠে এসেছে। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, হাসপাতালের কিছু কর্মচারীর সঙ্গে আশপাশের ক্লিনিক মালিকদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে সরকারি সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও রোগীদের পরীক্ষার জন্য বেসরকারি ক্লিনিকে পাঠানো হয়।
এ ছাড়া প্রতিদিন হাসপাতালে মাত্র ৩০ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়, আর বিকালে হাসপাতালের ভেতরেই এক ধরনের বাণিজ্যিক সেবা চালু হয়, যেখানে ফি দিয়ে পরীক্ষা করাতে হয়Ñ যা সরকারি হাসপাতালের চরিত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
যশোরের জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. ডা. হুসাইন সাফায়াত বলেন, বর্তমানে হাসপাতালে করোনা শনাক্তের জন্য পর্যাপ্ত কিট, হ্যান্ড গ্লাভস, মাস্ক ও স্যানিটাইজার নেই। আমি ৫ হাজার কিট চাহিদা দিলেও এখন পর্যন্ত এসেছে মাত্র ২ হাজার। শনিবার থেকে গুরুত্বপূর্ণ রোগীদের দিয়ে পরীক্ষা শুরু হবে। তিনি অনিয়মের অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান।
যশোরের সিভিল সার্জন মো. মাসুদ রানা প্রতিদিনের বাংলাদেশ বলেন, এটি করোনাভাইরাসের নতুন রূপ এবং জেলার আটটি উপজেলা ও বেনাপোল ইমিগ্রেশনে কিট সরবরাহের জন্য চাহিদা দেওয়া হয়েছে। তিনি আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থেকে নিয়মিত মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহারের আহ্বান জানান।