ভোলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২৫ ২০:১২ পিএম
আপডেট : ১৯ জুন ২০২৫ ২০:১৬ পিএম
ভোলা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের রোগীদের জন্য এখন বড় ভোগান্তির নাম তেলাপোকা। হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ড ও ইউনিটে ছোট-বড় হাজারো তেলাপোকার অবাধ বিচরণ। রাতে রোগীরা ঘুমাতে গেলে শরীরের ওপর হেঁটে বেড়ায় এসব পোকা। কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, তেলাপোকা নাক-মুখেও ঢোকার চেষ্টা করে। শুধু বেডেই নয়, রোগীদের খাবারেও হামলা চালায় এসব কীট।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ভোলার সাতটি উপজেলা থেকে প্রতিদিন শত শত রোগী ভর্তি হন এ হাসপাতালে। এদের মধ্যে বিভিন্ন বয়সি নারী, পুরুষসহ রয়েছেন শিশুরা। তবে আধুনিক ভবন থাকলেও হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ অত্যন্ত নাজুক। রোগী ও স্বজনদের অভিযোগÑ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার চরম অভাব, আর তেলাপোকার জ্বালায় চিকিৎসা নিতে এসে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকেই।
আলী নগর থেকে আসা রোগী আবু কালাম মিঝি ও ইলিশা থেকে আসা লোকমান জানান, অসুস্থ হয়ে ভোলা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। কিন্তু হাসপাতালে বেডে এসে চরম বিপাকে পরেছি তেলাপোকায় জ্বালায়। বেডে শুলেই গায়ে উঠে তেলাপোকা। নাকে-মুখে ঢোকার উপক্রম হয়। হাত দিয়ে মেরে ফেললেও লাভ হয় না। তাই গায়ে কাপড় জড়িয়ে ঘুমাই। সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আব্দুল খালেক বলেন, বেডের চারপাশে অসংখ্য তেলাপোকা। দিনের বেলায় তেলাপোকা কম দেখা গেলেও সন্ধ্যার পর এদের উৎপাত ভয়াবহভাবে বেড়ে যায়।
চরফ্যাশন উপজেলা থেকে আসা রোগী নুরে আলম বলেন, চিকিৎসা নিতে এসে তেলাপোকার যন্ত্রণায় আরও অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করছি।
শিশুদের নিয়ে আসা স্বজনরা বলেন, হাসপাতালে এত বেশি তেলাপোকা যে শিশুদের নিয়ে এখানে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। ছোট-বড় অসংখ্য তেলাপোকা বেডে ঘুরে বেড়ায়। হাসপাতালের ইউনিটে হাজার হাজার তেলাপোকার বসবাস। মনে হচ্ছে এ হাসপাতালে তেলাপোকার আবাসস্থল। আধুনিক ভবন থাকলেই হবে নাÑপরিবেশ পরিচ্ছন্ন না হলে স্বাস্থ্যসেবা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। তাই দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা নিয়ে রোগীদের জন্য একটি বাসযোগ্য ও নিরাপদ চিকিৎসা পরিবেশ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানান।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. তায়েবুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে দুবার তেলাপোকা নিধনে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিছুটা সুফলও মিলেছে। তবে রোগীর চাপ বেশি থাকায় সম্পূর্ণভাবে পরিষ্কার করতে সময় লাগছে। আশা করছি, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে হাসপাতাল পুরোপুরি তেলাপোকামুক্ত করা সম্ভব হবে।