আমতলী
আমতলী (বরগুনা) সংবাদদাতা
প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২৫ ১৯:২৪ পিএম
আপডেট : ১৯ জুন ২০২৫ ২০:১৫ পিএম
বরগুনার আমতলী উপজেলার আমড়াগাছিয়ায় সোয়া ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত গার্ডার সেতুটি দীর্ঘ ১১ মাস ধরে পড়ে রয়েছে অচল অবস্থায়। সেতুটি নির্মিত হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় এটি কোনো কাজে আসছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। ফলে গুলিশাখালী খালের ওপর নির্মিত সেতুটি এখন সাধারণ মানুষের ভোগান্তির প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালে আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী, কুকুয়া ও চাওড়া ইউনিয়নের সংযোগস্থল আমড়াগাছিয়া বাজারের পাশে গুলিশাখালী খালের ওপর নির্মিত ৬৬ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৬.৭৭ মিটার প্রস্থের গার্ডার সেতুটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ৬ কোটি ২২ লাখ ৫৮ হাজার ৩২৩ টাকা। কাজটি পায় বরিশালের মেসার্স কহিনুর এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ত্রিপুরা জেভি নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২৩ সালের ১৯ মে কার্যাদেশ পাওয়ার পর নির্ধারিত সময়ের আগেই ২০২৪ সালের জুনে মূল সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি। তবে সংযোগ সড়ক নির্মাণ না হওয়ায় সেতুতে এখনও যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। এমনকি সাধারণ মানুষেরও মই বেয়ে সেতু পার হতে হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছেন বয়স্ক, শিশু, নারী ও রোগীরা। ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদেরও।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, সেতুর পশ্চিম পাশে পূর্ব খেকুয়ানি গ্রামের একটি চলাচলের সড়ক রয়েছে, যেটি সেতুর উচ্চতা অনুযায়ী সংযোগ সড়ক নির্মাণ করলে পাশের সড়কটি বন্ধ হয়ে যাবে। এই জটিলতার কারণে সংযোগ সড়ক ছাড়াই সেতুটি পড়ে রয়েছে। পশ্চিম পাড়ের লোকজন কাঠ ও বাঁশের তৈরি অস্থায়ী মই ব্যবহার করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেতুতে উঠছেন। যানবাহন না উঠতে পারায় পণ্য পরিবহনে ঘুরে অন্য পথে যেতে হচ্ছে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে মহিষকাটা সেতু দিয়ে। এতে সময় ও অর্থÑ উভয় দিক থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতুটি গুলিশাখালী, চাওড়া ও কুকুয়া তিন ইউনিয়নের অন্তত ২০টি গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ এই সেতুর মাধ্যমে চলাচল করেন। সংযোগ সড়ক না থাকায় তাদের রোগী পরিবহন, মরদেহ বহন কিংবা নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল আনায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দ্রুতই সেতুটির সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে যাতায়াত ব্যবস্থার দাবি জানান।
ঠিকাদার মো. কাওছার মিয়া বলেন, আমরা মূল সেতুর কাজ নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ করেছি। সংযোগ সড়কের জন্য আলাদা টেন্ডার হবে। সে অনুযায়ী নতুন প্রতিষ্ঠান কাজ করবে।
আমতলী উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী ইদ্রিস মিয়া বলেন, সেতুর উচ্চতার কারণে সংযোগ সড়ক নির্মাণে পাশের সড়কটি বন্ধ হয়ে যাবে। তাই সেখানে আন্ডারপাস নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, যাতে মূল সড়কটি ঠিক থাকে। এতে ব্যয় কিছুটা বাড়বে। আমরা নতুন করে নকশা ও বাজেট তৈরি করে প্রকল্প পরিচালকের কাছে পাঠিয়েছি। প্রকল্প অনুমোদন পেলেই দরপত্র আহ্বান করে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।