ফটিকছড়ি
ওবাইদুল আকবর রুবেল, ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম)
প্রকাশ : ১৮ জুন ২০২৫ ১৭:৩২ পিএম
আপডেট : ১৮ জুন ২০২৫ ১৭:৪৮ পিএম
চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক মহাসড়কে ফটিকছড়ি পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলে সড়ক ও জনপথ (সওজ) কার্যালয়ের প্রবেশ মুখ ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এতে দুর্গন্ধে পুরো এলাকা অস্বাস্থ্যকর হয়ে পড়েছে। এসবের উৎকট দুর্গন্ধে চরম বিপাকে পড়ছেন লোকজন। পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, দ্রুত এসব ময়লা অপসারণ করা হবে।
গত রবিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে বিবিরহাট বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এসব ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। সওজ অফিসের সামনে ফেলে রাখা এসব ময়লার দুর্গন্ধে সড়ক দিয়ে যাতায়তকারীরা নাকমুখ চেপে চলাচল করেন। ময়লার ভাগাড়ের পাশ দিয়ে চলতে গিয়ে দুর্গন্ধে প্রাণ যায় যায় অবস্থা হয়। সড়ক ধরে মসজিদে যাতায়তকারী মুসল্লি, ব্যবসায়ীসহ হাজারও মানুষ দীর্ঘদিন ধরেই এই দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এসব আবর্জনা বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে শুকিয়ে বিষাক্ত বর্জ্যে পরিণত হয়েছে। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় এলাকাবাসী মনে ক্ষোভ জমা হয়েছে। তারা পৌর কর্তৃপক্ষের দায়িত্বজ্ঞানহীতায় বিস্মিত ও অবাক। ময়লার ভাগাড় টপকিয়ে কীভাবে সওজ কর্মকর্তারা অফিস করছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
পৌরবাসীর অভিযোগ, সেখান থেকে প্রতিনিয়ত যে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে, তাতে দূষিত হচ্ছে আশপাশের পরিবেশ। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি পথচারীদের নাকে কাপড় চেপে চলতে হচ্ছে। তাছাড়া পাশেই আছে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের বিভিন্ন অফিস। আছে বিবিরহাট বাজার ও বাসস্টেশন। দুর্গন্ধের কারণে অনেকেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
বিবিরহাট বাসস্টেশন সুধিন্যে জামে মসজিদের মুসল্লি আক্তারুজ্জামান নূর বলেন, ‘মসজিদে যাতায়াতের সময়ে আবর্জনার দুর্গন্ধ অসহ্য ঠেকে। এটা আমাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে তুলেছে। প্রশাসনের বড় বড় কর্তাব্যক্তিরা এই সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করেন। অথচ কেউ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।’
পৌরবাসিন্দা রফিক উদ্দিন বলেন, ‘এখানে ময়লা ফেলায় পরিবেশ নষ্ট করা হয়েছে। কারও পক্ষে স্বাভাবিক নিঃশ্বাস নিয়ে এ সড়ক পার হওয়া সম্ভব নয়। আমরা নাক বন্ধ করেই দ্রুত স্থান ত্যাগ করার চেষ্টা করি। পৌরসভায় আমরা বারবার বলেও কোনো সমাধান পাইনি।’
স্থানীয় ব্যবসায়ী কাউসার হোসেন বলেন, ‘সড়কের পাশে সওজের সমানে খোলা স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলায় স্থানীয়দের মধ্যে নানা রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আবাসিক এলাকা থেকে দূরে কোথাও এই ময়লা-আবর্জনা ফেলার ব্যবস্থা করা উচিত।’
উপজেলা পরিবেশ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি সোলায়মান আকাশ বলেন, ‘খোলা স্থানে বর্জ্য ফেলায় মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। দূষণের পাশাপাশি মশা-মাছির উপদ্রব বাড়ায় রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ছে। তাছাড়া এতে জীববৈচিত্র হুমকির মধ্যে পড়ছে। আশা করি কর্তৃপক্ষের শুভবুদ্ধির উদয় হবে।’
এ ব্যাপারে সওজের ফটিকছড়ি সড়ক উপ-বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মুহাম্মদ ফারহান বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে পৌর কর্তৃপক্ষকে অনেকবার বলা হয়েছে, তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমরাই যতদ্রুত সম্ভব এটি অপসারণের উদ্দ্যোগ নেব।’
ফটিকছড়ি ইউএনও ও পৌর প্রশাসক মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। দ্রুত ময়লা-আবর্জনা সরিয়ে ফেলে ভাগাড়ের নতুন স্থান ঠিক করা হবে।’