সাতক্ষীরা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ জুন ২০২৫ ২০:৫৭ পিএম
আপডেট : ১৮ জুন ২০২৫ ১৭:৪৪ পিএম
সাতক্ষীরার শ্যামনগরের সুন্দরবন সংলগ্ন লোকালয় থেকে দুই বনদস্যুকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় জনতা। সোমবার (১৬ জুন) রাত সাড়ে ৯টা ও ১১টার দিকে উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন যতীন্দ্রনগর ও মীরগাং এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটক দুজন হলেনÑ শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের যতীন্দ্রনগর এলাকার মৃত নওশাদ গাজীর ছেলে নজির গাজী ও খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার বৈকারী এলাকার বাসিন্দা শফিকুল ইসলামের ছেলে দিদারুল ইসলাম।
এ ঘটনায় আটক দুই বনদস্যুর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাদের ব্যবহৃত নৌকা থেকে একটি একনলা বন্দুক ও একটি দা উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয় আকবর আলী, সিদ্দিক হোসেন ও ইসমাইল হোসেন জানান, সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে অপরিচিত ৫-৭ জন ব্যক্তি সুন্দরবন তীরবর্তী যতীন্দ্রনগর বাজারে আসে। এ সময় নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার জন্য এসব ব্যক্তি মাইক্রো বা ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলের সন্ধান করতে থাকে। একপর্যায়ে স্থানীয়দের সন্দেহ হলে নাম-পরিচয়সহ সুন্দরবন এলাকায় আসার কারণ জানতে চাইলে তারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বাজারে উপস্থিত লোকজন ধাওয়া করে দিদারুলকে আটকের পর পুলিশকে খবর দেয়। পরবর্তী সময়ে শ্যামনগর থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে দিদারুলকে থানায় নিয়ে যায়। পরে মীরগাং এলাকা থেকে অন্য বনদস্যু নজিরকে আটক করে স্থানীয়রা এবং তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই চক্রের ব্যবহৃত মাছ শিকারের নৌকা থেকে একটি একনলা বন্দুক ও একটি দা উদ্ধার করা হয়।
আটক নজির গাজীর ভাষ্য, তিনি সুন্দরবনের কুখ্যাত জোনাব বাহিনীর সদস্যদের লোকালয়ে তুলে দেওয়া এবং সুন্দরবনে নামিয়ে দেয়ার কাজ করেন। সোমবার ১০ হাজার টাকার চুক্তিতে জোনাব বাহিনীর দুই সদস্যকে যতীন্দ্রনগর বাজার পর্যন্ত পৌঁছে দেয়ার দায়িত্ব ছিল। আটক অন্য বনদস্যু দিদারুল জানান, তিনি নজির গাজীর শ্রমিক হিসেবে সুন্দরবনে যাওয়া জেলেদের জিম্মি করাসহ মুক্তিপণ আদায়ের কাজ করেন।
এদিকে ইসমাইল হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান ও শরিফ হোসেনসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, জোনাব বাহিনী এখন সুন্দরবনে খুব বেশি তৎপর না। বরং নজির ও তার ছেলে আব্দুর রহিম, দিদারুলসহ মুন্সিগঞ্জ এলাকার কয়েকজনকে নিয়ে জোনাবের নামে সুন্দরবনে দস্যুতা করে। পরিবহন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত মুন্সিগঞ্জের এক ব্যক্তির নৌকার জেলে হিসেবে দিদারুল সুন্দরবনে প্রবেশ করে বলেও তাদের দাবি।
তারা আরও জানান, প্রায় প্রতিটি জেলে নৌকা একাধিকবার জলদস্যুদের কবলে পড়লেও অজ্ঞাত কারণে ওই পরিবহন ব্যবসায়ীর কোনো নৌকা থেকে জেলে উঠিয়ে নেওয়ার ঘটনা কখনও শোনা যায়নি।
এ বিষয়ে শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির মোল্যা বলেন, ‘আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তারা মাছ শিকারীর ছদ্মবেশে সুন্দরবনে প্রবেশ করতেন বলে প্রাথমিক তথ্য মিলেছে।’