× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

হ্যান্ড পেইন্টে স্বাবলম্বী আঁখি, উৎসাহিত হচ্ছেন তরুণীরাও

জুয়েল সাহা বিকাশ, ভোলা

প্রকাশ : ১৭ জুন ২০২৫ ১৭:৩৯ পিএম

হ্যান্ড পেইন্টে স্বাবলম্বী আঁখি, উৎসাহিত হচ্ছেন তরুণীরাও

করোনাকালে পারিবারিক সংকট কাটাতে ঘরে বসেই হ্যান্ড পেইন্টের কাজ শুরু করেছিলেন আঁখি রায়। ছোট পরিসরে শুরু হলেও ধীরে ধীরে তা পরিণত হয় একটি সফল উদ্যোক্তা যাত্রায়। এখন তিনি শুধু নিজের পরিবারের আর্থিক দায়িত্বই নিচ্ছেন না, তার কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেক তরুণীও নিজের পায়ে দাঁড়ানোর পথ খুঁজে পেয়েছেন। শাড়ি, পাঞ্জাবি, থ্রিপিস থেকে শুরু করে বিয়ের পিঁড়ি সব জায়গাতেই রঙ-তুলির ছোঁয়ায় জীবন্ত করে তুলছেন আঁখি। চাকরির পেছনে না ছুটে ব্যবসাকেই জীবন পথ হিসেবে বেছে নিয়েছেন এই সাহসী নারী।

আঁখি রায় ভোলা সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নের মুছাকান্দি গ্রামের দিপক মোহরী বাড়ির মৃত ভজন চন্দ্র শীলের মেয়ে। ভোলায় হ্যান্ড পেইন্ট ডিজাইন করা বিভিন্ন পোশাক অনলাইন ও অফলাইনে বিক্রি করছেন আঁখি। এসব পোশাক বিক্রি করে তিনি পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছেন। উচ্চশিক্ষিত হয়েও চাকরির পেছনে না ঘুরে হ্যান্ড পেইন্টের কাজ শুরু করেন আঁখি। তার থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেক তরুণী এখন হ্যান্ড পেইন্টের কাজ করছেন।

নারী উদ্যোক্তা আঁখি রায় জানান, তার বাবা ছোটখাটো ব্যবসা করতেন, মা ব্র্যাকের শিক্ষিকা ছিলেন এবং বড় ভাই প্রাইভেট পড়াতেন। সংসার ভালোই চলছিল, কিন্তু করোনাকালে সব বদলে যায়। বাবার ব্যবসা ও ভাইয়ের প্রাইভেট বন্ধ হয়ে গেলে পরিবারে অর্থ সংকট দেখা দেয়। তখন ঘরে বসেই আয় করার ভাবনা থেকে ২০২১ সালে হ্যান্ড পেইন্টের কাজ শুরু করেন তিনি। ফেসবুক পেজের মাধ্যমে ধীরে ধীরে ব্যবসা বাড়তে থাকে। তবে ২০২৩ সালে তার বাবা ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান, চিকিৎসার খরচে পরিবার ঋণে জড়িয়ে পড়ে। পরে তার ব্যবসা ও ভাইয়ের আয়ে সেই ঋণ পরিশোধ শুরু হয়। ২০২৪ সালের মাঝামাঝি ভাই ব্র্যাকে চাকরি পান।

তিনি আরও জানান, বর্তমানে আঁখি রায়ের হ্যান্ড পেইন্টের কাজ ভালোই চলছে। শাড়ি, পাঞ্জাবি, থ্রিপিস, ওয়ালম্যাট, মাটির সামগ্রীসহ নানা পণ্যে করছেন নান্দনিক ডিজাইন। অনলাইন ও অফলাইনে বেশ জনপ্রিয় তিনি। ঈদ, পহেলা বৈশাখ ও পূজায় প্রায় ১ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি করেন। বছরের বাকি সময়েও নিয়মিত অর্ডার পান। সংসারের মূল আয়ের দায়িত্ব এখন তার কাঁধে। অ্যাকাউন্টিংয়ে মাস্টার্স করেও চাকরির পেছনে না ছুটে এই কাজকেই ধরে রেখেছেন তিনি। একই সঙ্গে প্রশিক্ষণ দিয়ে স্থানীয় অনেক দরিদ্র তরুণীকেও আয় করতে সহায়তা করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো সরকারি প্রশিক্ষণ বা সহায়তা পাননি বলেও অভিযোগ তার।

ভোলার ভোটের ঘর এলাকার ও ইলিশা মডেল কলেজের ছাত্রী নূপুর আক্তার ২০২৪ সালে আঁখি রায়ের কাছ থেকে হ্যান্ড পেইন্টের প্রশিক্ষণ নেন। এখন ঘরে বসে অনলাইন ও অফলাইনে নিজেই ব্যবসা চালাচ্ছেন। তার আয় দিয়ে নিজের পড়াশোনার খরচ চালাচ্ছেন এবং বাবার ছোট ব্যবসার সহায়তাও করছেন।

একই এলাকার কলেজছাত্রী আছিয়া আক্তার পপি জানান, তারা চার বোন, ভাই নেই। বাবা দিনমজুরের আয়ে সংসার চলে কষ্টে। তাই আঁখি রায়ের কাছ থেকে হ্যান্ড পেইন্টের কাজ শিখে এখন তার সঙ্গেই কাজ করছেন। উপার্জিত অর্থ দিয়ে নিজের পড়াশোনার খরচ চালাচ্ছেন।

তরুণী মুন্নী আক্তার জানান, তার বাবা ভ্যানচালক, সংসার চলে কষ্টে। তাই লোকমুখে শুনে আঁখি রায়ের কাছে হ্যান্ড পেইন্টের কাজ শিখছেন। আরেক তরুণী রাবেয়া আক্তারও জানান, দরিদ্র পরিবারের সদস্য হিসেবে তিনি আঁখির কাছ থেকে কাজ শিখে ঘরে বসেই আয় করতে চান।

ভোলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ইকবাল হোসেন জানান, নারী উদ্যোক্তা তৈরিতে তারা পাঁচটি ক্যাটাগরিতে প্রশিক্ষণ দেন এবং পরে সরকারি ঋণ সংস্থার সঙ্গে লিংক করিয়ে সহায়তা করেন। তবে আঁখি রায় তাদের কাছ থেকে কোনো প্রশিক্ষণ বা সহায়তা চাননি। চাইলে তাকেও সহযোগিতা করা হতো বলে জানান তিনি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মারুফ কামাল খান

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা