খাগড়াছড়ি প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ জুন ২০২৫ ২১:২৮ পিএম
আপডেট : ১৩ জুন ২০২৫ ২১:৫০ পিএম
‘আমার স্বপ্ন থামিয়ে দিও না’ এই আকুতি শুনে খাগড়াছড়িতে বন্ধ হলো একটি বাল্যবিয়ে। মাত্র ১৫ বছর ৯ মাস বয়সি কিশোরী জুঁইকে (ছদ্মনাম) যখন জোর করে বিয়ে দিতে উদ্যত হয় পরিবার, তখন প্রশাসনের হস্তক্ষেপে রক্ষা পায় তার স্বপ্ন।
শুক্রবার (১৩ জুন) দুপুরে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার গোলাবাড়ি ইউনিয়নের উত্তর গঞ্জপাড়া এলাকায় বিয়ের প্রস্তুতির মঝে অভিযান চালিয়ে বিয়ে বন্ধ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুজন চন্দ্র রায়। সঙ্গে ছিলেন জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুস্মিতা খীসা ও সদর থানার পুলিশ।
জুঁই স্থানীয় একটি সরকারি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। তার ইচ্ছা পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া, নিজের পায়ে দাঁড়ানো। কিন্তু পরিবার তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ২৯ বছর বয়সি এক সবজি ব্যবসায়ীর সঙ্গে বিয়ের আয়োজন করে। প্যান্ডেল, রান্নার আয়োজন, নিমন্ত্রণÑ সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত ছিল।
ইউএনওর উপস্থিতিতে জুঁই স্পষ্টভাবে জানায়, ‘আমি এই বিয়ে চাই না, আমি পড়তে চাই, নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই।’
ঘটনার সত্যতা মেলায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জুঁইয়ের পরিবার ও বর পক্ষকে ১০ হাজার টাকা করে মোট ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। একই সঙ্গে উভয় পক্ষ থেকে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না করার জন্য মুচলেকা নেয়া হয়।
ইউএনও সুজন চন্দ্র রায় বলেন, নিজেদের ভুল স্বীকার করায় শাস্তির পাশাপাশি সচেতনতার দিকটি আমরা গুরুত্ব দিয়েছি। এই মেয়েটির স্বপ্ন যেন বাস্তবে রূপ নেয়, সেটি নিশ্চিত করতেই আমাদের এই উদ্যোগ। ঘটনার পর স্থানীয় শিক্ষক, সাংবাদিক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে গঠন করা হয় পাঁচ সদস্যের বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কমিটি।
জুঁই বলেন, আমি এখন স্কুলেই মনোযোগ দিচ্ছি। স্বপ্ন দেখি কলেজে যাব, তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ব। মা-বাবাও এখন বুঝেছেন।