গলাচিপা
আঞ্চলিক প্রতিবেদক, পটুয়াখালী
প্রকাশ : ১৩ জুন ২০২৫ ২০:৫৫ পিএম
আপডেট : ১৩ জুন ২০২৫ ২১:৩৯ পিএম
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার চরবিশ্বাস ও বকুলবাড়িয়া ইউনিয়নে সংঘর্ষের পর গোটা উপজেলায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসন শুক্রবার (১৩ জুন) সকাল থেকে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান সই করা এক আদেশে জানানো হয়, ১৩ জুন সকাল ৮টা থেকে ১৫ জুন সকাল ৮টা পর্যন্ত গলাচিপা পৌরসভা ও আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে। এ সময় সকল ধরনের সভা-সমাবেশ, মিছিল, বিক্ষোভ এবং দেশীয় অস্ত্র বা বিস্ফোরক বহন নিষিদ্ধ থাকবে। আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি নুরুল হক নুরকে কয়েক ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনার পরই দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সূচনা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সংঘর্ষের ঘটনায় শুক্রবার উভয় পক্ষই প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেয়, যার জেরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলাজুড়ে মাইকিং করে ১৪৪ ধারার আদেশ প্রচার করা হয়।
এরই মধ্যে গলাচিপা-দশমিনা এলাকায় গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর ও দলীয় কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনটি। শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টায় গলাচিপা উপজেলা পরিষদ চত্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র অধিকার পরিষদ অভিযোগ করে, বিএনপির স্থানীয় নেতা ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুনের নেতৃত্বে এসব হামলা চালানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, ‘গত দশ মাসে হাসান মামুনদের মতো নেতাদের কারণে বিএনপির ভাবমূর্তি জনগণের কাছে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে।’ তিনি অভিযোগ করেন, সেনাবাহিনীর উচ্চ পর্যায়ের সহযোগিতায় প্রায় চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর তিনি মুক্তি পান। বিএনপির কেন্দ্র থেকে তাকে সহায়তার চিঠি দেওয়া হলেও স্থানীয় নেতারা তার ওপর বারবার হামলা ও ভাঙচুর চালিয়ে চলেছেন।
ভিপি নুর আরও জানান, গলাচিপা ও দশমিনার প্রত্যন্ত ওয়ার্ডে গণঅধিকার পরিষদের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়েছে। বরিশালসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে সন্ত্রাসী এনে বিএনপি মহড়া, সড়কে গাছ ফেলে কর্মসূচি পণ্ড করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এমনকি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে তাকে এলাকা ছাড়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
বিএনপি নেতা হাসান মামুনকে ‘ফ্যাসিস্টদের সহযোগী’ আখ্যা দিয়ে তার বিরুদ্ধে তদন্ত করতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানান নুর। তিনি বলেন, ‘জাতীয় রাজনীতিতে এর বড় প্রভাব পড়বে, যদি এসব ঘটনার বিচার না হয়।’
এ বিষয়ে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন বলেন, নুরের বক্তব্য মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বৃহস্পতিবার বিকালে বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল গলাচিপা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে বক্তব্যের প্রতিবাদ জানায়।