অরূপ রতন, বগুড়া
প্রকাশ : ১৩ জুন ২০২৫ ১৬:২৬ পিএম
আপডেট : ১৩ জুন ২০২৫ ১৬:৩৩ পিএম
জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী মিরাজুল ইসলাম। জন্মের মাত্র সাত দিন পরই জন্মদাতা বাবা ইব্রাহীম মিয়া তাদের ছেড়ে পালিয়ে যান। সেই থেকে আর কোনো দিন বাবার মুখ দেখা হয়নি মিরাজুল ইসলামের।
এখন বয়স ২২ বছর। আজও জানে না, কোথায় আছেন তার বাবা, বেঁচে আছেন কি না, সেই তথ্যও অজানা। তবু একটাই চাওয়া— এই জীবনে একবারের জন্য হলেও বাবার মুখ দেখতে চান তিনি।
মিরাজুলের বাবা ইব্রাহীম মিয়া চুয়াডাঙ্গা জেলার চানপুর সদরের বাসিন্দা, মা নাজমা বেগম বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার ফুলবাড়ি দক্ষিণপাড়ার বাবলু মুন্সির মেয়ে। ২০০২ সালে ঢাকায় কাজ করতে গিয়ে তাদের পরিচয় এবং পরে বিয়ে হলেও সম্পর্কটি স্থায়ী হয়নি।
নাজমা বেগম বলেন, ইব্রাহীম আমাকে সন্তান নিতে মানা করেছিল। বলেছিল, তার ভাইবোনদের লালন-পালন করতে। আমি গর্ভবতী হলে সে সন্তান নষ্ট করতে বলেছিল। আমি রাজি হইনি। তারপর থেকেই সে পালানোর পথ খুঁজতে থাকে। ২০০৩ সালের শুরুর দিকে জন্ম নেয় মিরাজুল। কিন্তু সন্তান জন্মের সাত দিনের মাথায় আমাদের ছেড়ে পালিয়ে যায়। আর কখনও ফিরে আসেনি।
মিরাজুলের বয়স যখন ৫ বছর, তখন তার মা নাজমা বেগম অন্যত্র বিয়ে করেন। এখন তিনি সেখানে আরও দুটি সন্তানের মা। আর মিরাজুল বেড়ে ওঠে তার নানাবাড়িতে। তাকে মানুষ করেছেন তার নানা-নানি।
নানি রহিমা বেওয়া বলেন, আমার স্বামী মিরাজুলকে আদর-যত্ন করে বড় করেছেন। তিনি মারা গেছেন ৮ বছর আগে। মিরাজুল শারীরিক প্রতিবন্ধী। ডান হাত ও পা বিকলাঙ্গ, সেই সঙ্গে মৃগী রোগেও আক্রান্ত। এখন শুধু একটাই ইচ্ছা— বেঁচে থাকতে শুধু একবার তার বাবাকে দেখতে চায়।
মিরাজুল বলেন, আমি জানি না, বাবা বেঁচে আছেন কি না। কোথায় আছেন, তাও জানি না। শুধু একবার তার মুখ দেখতে চাই। কিন্তু যদি কোনোভাবে এই কথা তার কানে পৌঁছে যায়, আর যদি তিনি একবার এসে আমার সঙ্গে দেখা করেন; তাহলে মনে করব, আমার জীবনটা সার্থক হয়েছে।