রেজাউল করিম, গাজীপুর
প্রকাশ : ১৩ জুন ২০২৫ ১৬:২৪ পিএম
আপডেট : ১৩ জুন ২০২৫ ১৬:৩২ পিএম
২০২৩ সালের ১১ জুন ১৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের শর্তে গঠন করা হয়েছিল গাজীপুর মহানগর বিএনপির আংশিক কমিটি। তবে দুই বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও সেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি আলোর মুখ দেখেনি। ফলে সংগঠনের অভ্যন্তরে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে, বিশেষ করে রাজপথে সক্রিয় ত্যাগী নেতাকর্মীদের মধ্যে।
জানা যায়, ২০২৩ সালে গাজীপুর মহানগরের তেলীপাড়া এলাকায় অবস্থিত সাগর সৈকত কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে নতুন কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটির সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন কাশিমপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শওকত হোসেন সরকার এবং সাধারণ সম্পাদক হন বিএনপির প্রয়াত নেতা গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র ও সাবেক মন্ত্রী অধ্যাপক এমএ মান্নানের ছেলে এম মঞ্জুরুল করীম রনি। সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন তারেক রহমান। সেখনে গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি পদে তিনজন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে পাঁচজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। তবে শেষ পর্যন্ত সবাই প্রত্যাহার করে নেওয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এই দুই নেতা নির্বাচিত হন।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, ১৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটির দেওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কমিটি হয়নি। যদিও নেতাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, কেন্দ্রের কাছে পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা পাঠানো হয়েছে বলে একাধিকবার দাবি করা হলেও বাস্তবে এখনও কমিটি হয়নি। দেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি জেলা গাজীপুরে এখন পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় সংগঠনের সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যেও সম্পর্ক ভালো নেই। দলের ভেতরে নেতাদের দ্বন্দ্ব, বিশেষ করে ব্যবসা ও প্রভাব বিস্তার নিয়ে মনোমালিন্যÑ এই বিলম্বের অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতারা। দিয়েছেন একে অন্যের বিপক্ষে বক্তব্য। যেহেতু সামনে নির্বাচন এজন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হওয়া দরকার।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রায়ই আলাদা আলাদা কর্মসূচি পালন করেন এবং কেন্দ্রীয় প্রোগ্রামগুলোতেও তারা আলাদা অংশগ্রহণ করেন। এখন পর্যন্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এক ব্যানারে রাজধানীর কোনো প্রোগ্রামে দেখা যায়নি। এতে কর্মীদের মধ্যে বিভক্তি তৈরি হয়েছে, যা দলের ভাবমূর্তি ও মাঠের সংগঠনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিএনপির নেতা বলেন, তারা নিজেরাই ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়েই বেশি ব্যস্ত। দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের বিষয়ে তাদের তেমন আগ্রহ নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম মঞ্জুরুল করীম রনি বলেন, ‘আমরা অনেক আগেই কেন্দ্রের কাছে কমিটির তালিকা পাঠিয়েছি। রাজনৈতিক বাস্তবতা ও নির্বাচনী পরিবেশের কারণে হয়তো সিদ্ধান্ত আসেনি। এটি সম্পূর্ণ কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত।’
অপরদিকে সভাপতি শওকত হোসেন সরকার বলেন, ‘আমাদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। কিছু লোক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে। আমরা একসঙ্গেই কার্যক্রম পরিচালনা করছি এবং কমিটি কেন্দ্রীয় অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।’