সেন্টমার্টিন
কক্সবাজার অফিস
প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৫ ২১:১৫ পিএম
বৈরী আবহাওয়ার কারণে সেন্টমার্টিন নৌপথে নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় দ্বীপে দেখা দিয়েছে চরম নিত্যপণ্যের সংকট। ফলে নিত্যপণ্যের সংকট তৈরির পাশাপাশি বাড়ছে প্রতিটি পণ্যের দাম, অনেক দোকানে পণ্যশূন্য হয়ে পড়েছে।
সর্বশেষ গত ২৫ মে বিকালে সেন্টমার্টিন নৌপথে উপজেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার পর থেকে কোনো ট্রলার দ্বীপে পৌঁছাতে পারেনি। এরপর রবিবার (১ জুন) দুপুরে যাত্রী ও পণ্যবোঝাই তিনটি ট্রলার টেকনাফ থেকে রওনা দিলেও উত্তাল সাগরের কারণে তারা গন্তব্যে পৌঁছাতে না পেরে সন্ধ্যায় শাহপরীর দ্বীপে ফিরে আসে।
প্রায় ১১ হাজার বাসিন্দার এই দ্বীপে নিত্যপণ্যের বড় অংশ টেকনাফ থেকে সরবরাহ হয়ে থাকে। কিন্তু সাত দিন ধরে সরবরাহ বন্ধ থাকায় দ্বীপের অধিকাংশ দোকানে পণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে।
সেন্টমার্টিন ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. ছৈয়দ আলম বলেন, দ্বীপের অধিকাংশ দোকানে নিত্যপণ্যের সংকট রয়েছে। বাজারে চাল, আটা, তেল, গ্যাস সীমিত পরিমাণে পাওয়া গেলেও তা অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। ডিম ১৮-২০ টাকা, আলু ৫০ টাকা এবং অন্যান্য সবজি ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা টেকনাফের দ্বিগুণ।
স্থানীয় দোকানি মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় তার দোকানে সব ধরনের পণ্যের সংকট তৈরি হয়েছে। দোকানে এখন কেবল চাল রয়েছে, বাকি পণ্য শেষ হয়ে গেছে। অন্য দোকানি হোসেন বলেন, ঈদ উপলক্ষে মজুদ করা পেঁয়াজ, তেল, ডিমসহ অন্যান্য পণ্য প্রায় শেষ। নৌযান চলাচল দ্রুত চালু না হলে দ্বীপবাসী খাদ্য সংকটে পড়বে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু খাদ্যসামগ্রী সহায়তার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদ বলেন, নৌপথে ৩০টি ট্রলার নিয়মিত পণ্য ও যাত্রী পরিবহন করলেও বর্তমানে আবহাওয়ার কারণে সবই বন্ধ রয়েছে। রবিবার দুপুরে নিত্যপণ্যে ও যাত্রী নিয়ে ৩টি ট্রলার দ্বীপের উদ্দেশে যাত্রা করে, কিন্তু উত্তাল সাগরের কারণে ট্রলার দ্বীপে যেতে ব্যর্থ হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা খাদ্যগুদামের কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিউল হাবিব ভূঁইয়া বলেন, গত ১৫ দিন আগে সেন্টমার্টিন দ্বীপের জন্য বরাদ্দ ভিজিডি, ভিজিএফসহ খাদ্য সহায়তার চাল এসেছে। জেলা প্রশাসনের নিজস্ব তহবিল থেকে দ্বীপের জন্য বরাদ্দ হওয়া ১০ মেট্রিক টন চাল টেকনাফে নৌঘাটে এনে রাখা হয়েছে। ফলে চালের সংকট হবে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, দুর্ঘটনা এড়াতে নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তবে খাদ্য সংকট নিরসনে প্রয়োজনীয় পণ্য পাঠানো যায় কি না, সেই চেষ্টা চলছে।