× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

পশু কোরবানির সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যস্ত কামাররা

টাঙ্গাইল সংবাদদাতা

প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৫ ১৭:১৪ পিএম

আপডেট : ০১ জুন ২০২৫ ১৭:১৮ পিএম

পশু কোরবানির সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যস্ত কামাররা

কোরবানির প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে দা, বঁটি ও ছুরি। তাই ঈদ সামনে রেখে ব্যস্ত টাঙ্গাইলের কামার শিল্পীরা। কামারপাড়া এখন টুং টাং শব্দে মুখর। চলছে হাঁপর টানা, পুড়ছে কয়লা, জ্বলছে লোহা। কামাররা হাতুড়ি পিটিয়ে তৈরি করছেন দা, বঁটি, ছুরিসহ মাংস কাটার বিভিন্ন সরঞ্জাম। শহর ও গ্রামগঞ্জে সব জায়গায় কামাররা দা, বঁটি, ছুরি ও চাপাতি তৈরিতে ভীষণ ব্যস্ত। আবার মোটরচালিত মেশিনে দা, বঁটি, ছুরি ও চাপাতি শান দেওয়ার কাজেও ব্যস্ত তারা। 

কামারদের দম ফেলারও সময় নেই। বছরের অন্য সময় অলসভাবে সময় কাটালেও এখন কাজের চাপ বহুগুণ বেড়েছে। বাড়তি আয়ের জন্য দিন-রাত পরিশ্রম করছেন তারা। তাদের এ ব্যস্ততা চলবে কোরবানি ঈদের দিন পর্যন্ত।

জানা যায়, কোরবানির ঈদ সামনে রেখে টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলা ও ১১টি পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে কেনাবেচা চলছে পশু জবাই ও মাংস কাটার সরঞ্জাম। এর চাহিদা পূরণে উপজেলার বিভিন্ন বাজারের কামারের দোকানগুলোয় চোখে পড়ার মতো ব্যস্ততা বেড়েছে। আধুনিক যন্ত্রাংশের প্রভাবে কামার শিল্পের দুর্দিন চললেও ঈদ সামনে রেখে তারা ব্যস্ত সময় পার করছেন।

কামার পল্লীর কারিগররা জানান, কয়লা ও লোহার দাম অনেক বেশি। তাই তৈরি করা সরঞ্জাম বেচাকেনা বাড়লেও লাভ কম। তবে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কামারদের কাজ করতে হচ্ছে। টাঙ্গাইল শহরের পার্ক বাজার এলাকার সত্যরঞ্জন দাস বলেন, ‘সারা বছরের মধ্যে কোরবানির ঈদের জন্য আমাদের বেশি ব্যস্ত থাকতে হয়। বর্তমানে লোহা ও কয়লার দাম বেশি। ফলে তৈরি করা সরঞ্জাম বেশি বেচতে পারলেও কাঙ্ক্ষিত লাভ হয় না। আমরা সারা বছর অপেক্ষায় থাকি কোরবানির ঈদের জন্য। বছরের অন্য সময়ে দা, বঁটি, ছুরি ও চাপাতি সেরকম বেচাকেনা হয় না। কোরবানি ঈদের এক মাস বিক্রি বেড়ে যায়। তবে উৎপাদন ও প্রতিযোগিতা বেড়ে যাওয়ায় লাভ আগের চেয়ে অনেক কম।’

তিনি আরও বলেন, পশুর চামড়া ছাড়ানোর ছুরি ১০০ থেকে ২০০ টাকা, দা ২৫০ থেকে ৮০০, বঁটি ৩০০ থেকে ৫৫০, পশু জবাইয়ের ছুরি ৫০০ থেকে ১৫০০, চাপাতি ৬০০ থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রভাত চন্দ্র দাস ও রুদ্র সরকার জয় বলেন, ‘প্রতি বছর কোরবানি ঈদে আমরা বিভিন্ন ধরনের উপকরণ তৈরি করে থাকি। এবারও এসব উপকরণের চাহিদা বেড়েছে। সারা বছর আমরা যে আয় করি কোরবানি ঈদের এক মাসে তার চেয়ে বেশি আয় করতে পারি। কামার শিল্পের অতিপ্রয়োজনীয় জ্বালানি হচ্ছে কয়লা। কিন্তু এ কয়লা এখন প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। গ্রামগঞ্জে ঘুরে কয়লা সংগ্রহ করতে হয়। এখন কয়লার দামও যথেষ্ট বেড়েছে। তার সঙ্গে বেড়েছে লোহার দামও। লোহা ও কয়লার দাম বাড়লেও সেই তুলনায় কামার শিল্পের উৎপাদিত দা-বঁটি, ছুরি ও চাপাতির দাম বাড়েনি।’

বঁটি বানাতে আসা আব্দুল কাদের বলেন, ‘আগের চেয়ে দাম অনেক বেশি। আগে যে বঁটি বানাতাম ২০০-৩০০ টাকায়, সেটি এখন বানাতে লাগছে ৪০০-৫০০ টাকা।’ চাপাতি বানাতে আসা আব্দুল হাকিম মিয়া বলেন, ‘কোরবানির ঈদ আসন্ন। তাই চাপাতি বানাতে কামারের দোকানে এসেছি। আগে যে চাপাতি কিনতাম ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়, তা এখন নিজের লোহায় বানিয়ে নিলাম ৬৫০ টাকায়। কেজিপ্রতি লোহা নিচ্ছে ৭০০ টাকা।’ সামি মিয়া বলেন, ‘আগের চেয়ে দাম বেশি চাচ্ছে। নিজে লোহা দিলাম তারপরও মজুরি চায় ৩০০-৪০০ টাকা। দাম বেশি হলেও প্রয়োজন, তাই বাধ্য হচ্ছি নিতে।’

এদিকে কারিগররা অভিযোগ করে বলেন, তাদের পরিশ্রমের তুলনায় মজুরি অনেক কম। সারা দিন আগুনের পাশে বসে থেকে কাজ করতে হয়, এতে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যার তৈরি হয়।’ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় টাঙ্গাইলে কমে যাচ্ছে কামার সম্প্রদায়ের মানুষ। বাধ্য হয়ে পেশা বদল করছেন অনেকে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা