ঠাকুরগাঁও প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৫ ২২:০৫ পিএম
আপডেট : ৩০ মে ২০২৫ ২২:০৮ পিএম
ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে চূড়ান্তভাবে ১৯ জন প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগ সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা, মেধা ও শারীরিক যোগ্যতার ভিত্তিতে হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশ।
তবে এ নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়ম ও ‘প্রক্সি’ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ নিয়োগে ‘ভি’ চিহ্নের অস্বচ্ছতার অভিযোগ তুলে দ্রুত এ নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত চেয়েছেন শতাধিক চাকরিপ্রত্যাশী ও তাদের অভিভাবকরা। তবে নিয়োগ কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল নিয়োগে কোনো অনিয়ম হয়নি। স্বচ্ছতার মাধ্যমেই নিয়োগ সম্পূর্ণ হয়েছে। আর প্রক্সি দেওয়ায় একজনকে আটক করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সন্ধ্যায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ফলাফল ঘোষণা করা হয়। জেলার পুলিশ লাইন্সে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করেন ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার ও টিআরসি নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি শেখ জাহিদুল ইসলাম।
সম্প্রতি পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় ১৯ জনকে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং আরও ৪ জন ওয়েটিং লিস্টে আছে বলে জানান নিয়োগ কমিটি।
পুলিশের নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে চাকরিপ্রত্যাশী শতাধিক প্রার্থী ও অভিভাবকরা পুলিশ লাইনের মূল ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানান। অভিযোগকারীরা বলেন, যাদের মাঠ পরীক্ষায় বাদ দেওয়া হয়েছিল, তাদের অনেককে আবার লিখিত পরীক্ষায় ডাকা হয়। এমনকি পরীক্ষায় অন্য জনের হয়ে কেউ কেউ অংশ নিয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে নিয়োগ স্বচ্ছতার কথা বলা হলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন।
চাকরিপ্রত্যাশী আরিফ বলেন, যেদিন মাঠ পরীক্ষা হয়েছিল, সেইদিন যারা ভালো দৌড়েছেন তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে, বিশেষ করে মাঠে যাদের গেম প্যান্টে ‘ভি’ চিহ্ন ছিল, তারা খারাপ দৌড়েও ভেতরে মৌখিক পরীক্ষা দিয়েছেন।
চাকরি প্রত্যাশী নিজাম বলেন, আমরা তো এমন বাংলাদেশের জন্য জুলাই অভ্যুত্থান করিনি। যারা মাঠ পরীক্ষায় বাদ পড়েছে তারা লিখিত ও মৌখিক দিচ্ছে কীভাবে? আমরা প্রতিবাদ করলে আমাদের ধমক দিয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে। এ নিয়োগ দ্রুত স্থগিত ও তদন্ত করা হোক।
সাংবাদিকরা পুলিশ লাইনে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশের বাধার সম্মুখীন হন। ভিডিও করতেও বাধা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম বলেন, চূড়ান্তভাবে ১৯ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, আরও ৪ জন ওয়েটিংয়ে। ১৯ জনের মধ্যে যদি কেউ বাদ পড়ে সেক্ষেত্রে ৪ জনের মধ্য থেকে নিয়োগ দেওয়া হবে। একজন প্রক্সি পরীক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে এবং বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়মের বিষয়ে প্রশ্ন করলে পুলিশ সুপার বলেন, যারা রিটেন পরীক্ষা ভালো করতে পারেনি তারা অভিযোগ করবে এটাই স্বাভাবিক। যদি অনিয়ম হয়ে থাকে তাহলে তারা আমাদের জানালো না কেন? আমরা ব্যবস্থা নিতাম। তবে আমরা যদি অভিযোগ পাই তাহলে তদন্ত করে দেখবো। তিনি আরও বলেন, ১২০ টাকায় চাকরি দেওয়া হয়েছে এটা বলতে চাই না, কিন্তু খরচ বলতে অনেক কিছু থাকে। আমরা যথাযথ নিয়ম মেনেই নিয়োগ সম্পন্ন করেছি।