কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৫ ২০:০৪ পিএম
আপডেট : ৩০ মে ২০২৫ ২০:১৭ পিএম
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের পাশে ৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত মেরিন ড্রাইভ সড়কটি উদ্বোধনের আগেই সমুদ্রে বিলীন হয়ে যাওয়ার ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সন্ধ্যায় কুয়াকাটা পৌরসভার প্রশাসক ইয়াসীন সাদেককে আহ্বায়ক করে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। একই সঙ্গে আগামী সাত দিনের মধ্যে এই কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেনÑ পানি উন্নয়ন বোর্ড, কলাপাড়া নির্বাহী প্রকৌশলী, কলাপাড়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী, এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা।
প্রশাসন সূত্র জানায়, সমুদ্রসৈকত সংলগ্ন নির্মণাধীন মেরিন ড্রাইভ সড়কটি খুবই দৃষ্টিকটুভাবে ভেঙে পড়েছে। সড়কটির নির্মাণকাজ খুবই নিম্নমানের হয়েছে। লোকাল বালু আর পাতলা সিসি ঢালাইয়ের মাধ্যমে সড়কটির কাজ সম্পন্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে। নির্মাণে কোনো ধরনের সম্ভাব্যতাও যাচাই করা হয়নি। কুয়াকাটা সৈকতের জিরো পয়েন্টের পূর্ব দিকে (ট্যুরিজম পার্ক থেকে পূর্ব দিকে) তিনটি প্যাকেজে মোট দুই কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেয় বিগত সরকারের সময় থাকাকালীন কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদার। প্রথম দফায় ১৩০০ মিটার অংশের কাজ সম্পন্নের চেষ্টা করেন তিনি। বাকি ৭০০ মিটারের কাজ শুরু হয়নি। কিন্তু হঠাৎ করে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত সৈকতে প্রচণ্ড তাণ্ডব চালায়। এ সময়ের মধ্যে নির্মাণাধীন সড়কটির দুই-তৃতীয়াংশ সমুদ্রগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
কুয়াকাটা পৌরসভার অপসারিত মেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদার বলেন, প্রকল্পটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় টেন্ডার দিয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে। কেবল সিসি কাজ চলমান রয়েছে। এরপর আরসিসির কাজ হওয়ার কথা। ঢেউয়ের ঝাপটা ঠেকাতে গাইড ওয়াল করার ডিজাইন রয়েছে। কাজের বিপরীতে কত টাকা বিল তোলা হয়েছে, তা প্রকৌশলীরা বলতে পারবেন বলে জানান তিনি।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে সমুদ্রের বিক্ষুব্ধ ঢেউ সৈকতে আছড়ে পড়লে সদ্য নির্মিত মেরিন ড্রাইভ সড়কটি লন্ডভন্ড হতে শুরু করে। এ নিয়ে ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এ বিষয়ে কুয়াকাটা পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. নিয়াজুর রহমানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল করলে তিনি রিসিভ না করায় মেরিন ড্রাইভ প্রকল্পের বিল উত্তোলন সম্পর্কিত কোনো তথ্য জানা যায়নি।
কলাপাড়া ইউএনও মো. রবিউল ইসলাম বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর বিষয়টি পরিষ্কারভাবে বলা যাবে। কুয়াকাটায় প্রশাসক নিয়োগের পর থেকে এ প্রকল্পের কাজের বিল পরিশোধ করা হয়নি। এ বিষয়ে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।