× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

টানা বৃষ্টিতে বাড়ছে পাহাড়ধসের ঝুঁকি

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৫ ১৯:২০ পিএম

আপডেট : ৩০ মে ২০২৫ ২১:৩৮ পিএম

প্রবা ফটো

প্রবা ফটো

পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে কয়েকদিন থেকে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এই বৃষ্টিপাত আগামী শনিবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এতে এই অঞ্চলে পাহাড় ধসের আংশকা দেখা দিয়েছে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পড়েছেন পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করা মানুষগুলো।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। খোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, সিভিল সার্জন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও এনজিওদের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে ‘দুর্যোগকালীন জরুরি সেবা কমিটি’। জরুরি সেবা প্রদানের জন্য সিভিল সার্জন কার্যালয় ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক এবং প্রয়োজনীয় ওষুধসহ পানিশোধন ট্যাবলেট সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদকদের পাঠানো প্রতিবেদনে বিস্তারিত-

বান্দরবানে পাহাড় ধসের ঝুঁকি চরমে

বান্দরবানে টানা বৃষ্টিতে পাহাড় ধস এখন রীতিমতো আতঙ্কের নাম। টানা ভারী বর্ষণে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করা মানুষগুলো পড়ছেন চরম ঝুঁকিতে।

বান্দরবান জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, দুর্যোগ মোকাবিলায় গত ১৭ মে থেকে সাতটি উপজেলায় ২২০টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, সিভিল সার্জন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও এনজিওদের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে ‘দুর্যোগকালীন জরুরি সেবা কমিটি’। জরুরি সেবা প্রদানের জন্য সিভিল সার্জন কার্যালয় ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক এবং প্রয়োজনীয় ওষুধসহ পানিশোধন ট্যাবলেট সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে ০১৩০৯৭৪৪৯২৩ নম্বরে যোগাযোগের জন্য বলা হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, বান্দরবানের বিভিন্ন পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন বহু মানুষ। প্রতি বছর পাহাড় ও টিলা কেটে ঘরবাড়ি নির্মাণ করায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটছে নিয়মিত।

ভারী বর্ষণে রাঙামাটিতে পাহাড় ধসের শঙ্কা

টানা ভারী বৃষ্টিপাতে পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে সরে যেতে অনুরোধ করছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় রাঙামাটি শহরের ২৯টি এলাকা চিহ্নিত করে ২৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

গত বুধবার থেকে রাঙামাটিতে ভারী ও মাঝারি আকারে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় গাছপালা ভেঙে পড়া ও ছোট-খাটো পাহাড় ধসের ঘটনা খবর পাওয়া গেলেও কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

জেলা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার (৩০ মে) সকাল ৬টা পর্যন্ত রাঙামাটিতে ১৪০ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করা হয়েছে। অন্যদিকে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৪৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ বলেন, আমাদের আগেই থেকে সব প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। কোনোভাবেই যেন একটি প্রাণও না হারায়, সেটিই সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার।

খাগড়াছড়িতে পাহাড় ধস মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি

টানা বৈরী আবহাওয়ার প্রভাবে পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে পড়েছে পার্বত্য খাগড়াছড়ি জেলা। শুক্রবার সকালেও থেমে থেমে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বইতে দেখা গেছে। খাগড়াছড়ি আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল পর্যন্ত) জেলায় ৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। টানা দুইদিন ধরে মেঘলা আকাশ ও গুমোট আবহাওয়ার কারণে জেলার বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জেলার প্রধান দুই নদী চেঙ্গী ও মাইনি ছাড়াও শহরের আশপাশের ছড়া-খালে পানির চাপ বাড়তে শুরু করেছে। ফলে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার কলাবাগান, সবুজবাগ, কুমিল্লাটিলা ও শালবন এলাকায় পাহাড় ধসের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার জানান, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে ও সচেতন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে এলাকাগুলোতে সরেজমিন পরিদর্শনের পাশাপাশি মাইকিং করে সতর্কবার্তাও দেওয়া হচ্ছে।


চট্টগ্রামে পাহাড় ধসের শংকা, চলছে মাইকিং

টানা বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরীতে পাহাড় ধসের আংশকা দেখা দিয়েছে। পাহাড় ধসে যাতে কোনো প্রাণহানির ঘটনা না ঘটে সেজন্য বৃহস্পতিবার রাত থেকে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সরিয়ে নিচ্ছে জেলা প্রশাসন। পাহাড়ে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে করা হচ্ছে মাইকিং।

জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, নগরীর বিভিন্ন এলাকায় থাকা ২৬টি পাহাড়ে প্রায় ৬ হাজার ৫৫৮টি পরিবার অবৈধভাবে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাস করছে। এই ২৬ পাহাড়ের মধ্যে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা/বিভাগের মালিকানাধীন ১৬টি এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন ১০টি। এসব পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের নিরাপদে সরিয়ে নিতেই মাইকিং করছে জেলা প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার বিকালে বৃষ্টি শুরুর পর শুক্রবার সকাল থেকে জেলা প্রশাসনের কর্মীরা নগরীর আকবরশাহ, বিজয়নগর, ১ নম্বর ঝিল, টাংকির পাহাড়, আমিন জুট মিল এলাকা, ফিরোজ শাহ কলোনি এলাকা, রেলওয়ের পাহাড়, লালখান বাজারের পোড়া কলোনি বস্তি এলাকা, ঢেবারপাড়, মতিঝর্না এলাকায় মাইকিং শুরু করেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত এখনও তারা মাইকিং অব্যাহত রেখেছেন। পাশাপাশি ঘরে ঘরে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সরিয়ে নিচ্ছেন।

ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীরা যাতে আশ্রয় নিতে পারেন তার জন্য তিনটি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে ফিরোজ শাহ এলাকায় ফিরোজ শাহ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, লেকসিটি সংলগ্ন বি ব্লক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি এবং লালখান বাজার এলাকায় লালখান বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়।

জেলা প্রশাসনের স্টাফ অফিসার জানান, আশ্রয় কেন্দ্রে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আলাদা আলাদা টিম করে পাহাড়ি এলাকাগুলোত মাইকিং করা হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের ঘরে ঘরে গিয়ে তাদেরকে নিরাপদ স্থানে নেওয়া হচ্ছে।

প্রতিবেদন তৈরিতে সাহায্য করেছেন, চট্টগ্রাম অফিস, বান্দরবান , রাঙামাটি এবং খাগড়াছড়ি প্রতিবেদক।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মারুফ কামাল খান

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা