× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

কক্সবাজারের অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত, তলিয়েছে সেন্টমার্টিনের বাড়িঘর

কক্সবাজার অফিস

প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৫ ১৬:৪৭ পিএম

আপডেট : ৩০ মে ২০২৫ ১৬:৪৮ পিএম

প্রবা ফটো

প্রবা ফটো

নিম্নচাপের প্রভাবে সাগরে সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি হচ্ছে। উপকূলীয় এলাকায় দমকা-ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। উত্তাল সাগরের আগ্রাসনের কবলে পড়েছে কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকাগুলো। টানা ভারী বৃষ্টির কারণে কক্সবাজারের অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আর পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের পুরোটাই। তলিয়ে গেছে বাড়িঘর।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুল হান্নান বলেন, কক্সবাজারে এখনও ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল আছে। এতে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে।

তিনি জানান, শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে ১৫২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে সুগন্ধা পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, সাগর উত্তাল, জোয়ারের সময় সাগরের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। বিশাল বিশাল ঢেউ আছড়ে পড়েছে উপকূলে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সাগরপাড়ে ছুটে গেছেন হাজারো পর্যটক। মাইকিং কিংবা সতর্ক করে তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন লাইফ গার্ড ও ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্যরা।

সী-সেফ লাইফ গার্ড সংস্থার ইনচার্জ মোহাম্মদ শুক্কুর বলেন, সৈকতের মাদ্রাসা পয়েন্ট থেকে শুরু শৈবাল পয়েন্ট পর্যন্ত ঝাউগাছ উপড়ে যাচ্ছে জোয়ারের পানির আঘাতে। এরপর লাবনী পয়েন্ট সরকারি-বেসরকারি নানা স্থাপনা, ট্যুরিস্ট পুলিশের বক্স ও দোকানপাট পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত। একই সঙ্গে সুগন্ধা পয়েন্টে জোয়ারের পানিতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দোকানপাট। এখানে বেশ কিছু দোকানপাট পানিতে তলিয়ে গেছে এবং ট্যুরিস্ট পুলিশের বক্সে পানি আঘাত করেছে। এছাড়া কলাতলী পয়েন্টেও একই অবস্থা।

এদিকে কক্সবাজারে জেলার কুতুবদিয়া, মহেশখালী, পেকুয়া ও টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপসহ উপকূলের অন্তত ৫০টি এলাকায় বৃষ্টি এবং জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ার তথ্য মিলেছে।


সবচেয়ে নাজুক পরিস্থিতি দ্বীপ উপজেলার কুতুবদিয়ার। এ দ্বীপের দক্ষিণে আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নে কবি জসীম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে বেড়িবাঁধ লাগোয়া বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প। বিদ্যুৎ প্রকল্প ভবনের দক্ষিণ পাশে ৫০ মিটারের মতো ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকছে। এতে এ ইউনিয়নের পূর্বপাড়া, সন্দ্বীপপাড়া, হাইস্কুল পাড়া ও শান্তি বাজার এলাকা অন্তত তিন ফুট জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে।

পাশের কৈয়ারবিল ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান শফিউল আলম কুতুবী জোনান, তার ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বেড়িবাঁধসংলগ্ন মৌলভী পাড়া ও মফজল আহমদ পাড়ার অন্তত ২০০ বাড়িতে পানি ঢুকেছে।

একইভাবে উপজেলার উত্তর ধুরং ইউনিয়নের মিয়ারাকাটা ও দক্ষিণ ধুরংয়ের বাতিঘর পাড়া এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আল আজাদ।

কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্যথোয়াইপ্রু মারমা বলেন, বায়ুবিদ্যুৎ এলাকার বেড়িবাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকছে। দ্বীপের ৭-৮ পয়েন্টে বেড়িবাঁধ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এসব ভাঙা অংশ দ্রুত মেরামত করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলা হয়েছে।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী জামাল মোর্শেদ বলেন, ‘কুতুবদিয়া, মহেশখালী ও পেকুয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ২০টি ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের ধাক্কায় পানি ঢুকে প্লাবিত হচ্ছে। চার দিন ধরে সেন্টমার্টিনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। বৈরী আবহাওয়ায় সাগর উত্তাল থাকায় চার দিন ধরে সেন্টমার্টিন দ্বীপের সঙ্গে টেকনাফের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে করে দ্বীপের বাসিন্দারা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সংকটে পড়েছে।’

টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটের সার্ভিস ট্রলার সমিতির সভাপতি রশিদ আহমদ জানান, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে চার দিন ধরে সবধরনের নৌচলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে পণ্যবাহী ট্রলারও বন্ধ রয়েছে।

নৌযান বন্ধ থাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সংকট তীব্র হয়ে উঠেছে বলে জানান সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম। তিনি জানান, দ্বীপে কাঁচাবাজার ফুরিয়ে এসেছে। অন্যান্য ভোগ্যপণ্য আজকালের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। বাজারে যা পাওয়া যাচ্ছে তাও দাম চড়া। এ অবস্থায় দ্বীপের মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। পুরো দ্বীপের মানুষ বন্দি রয়েছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, বৈরী আবহাওয়ায় সাগর উত্তাল রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর ৩ নম্বর সর্তক সংকেত জারি করেছে। এ কারণে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নৌযান চলাচল করতে পারবে। পাহাড় ধসের সতর্কবার্তা। কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার পাহাড়ে ৩৩টি রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির রয়েছে। এসব আশ্রয়শিবিরে অন্তত ১৩ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছেন। এদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ রোহিঙ্গা পাহাড়ের ঢাল ও নিচে ঝুঁকি নিয়ে গাদাগাদি করে বাস করেন।

এছাড়া জেলার সদর, ঈদগাঁও, রামু, চকরিয়া, মহেশখালী ও পেকুয়ায় লাখো পরিবার পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে। প্রতিবছর বর্ষায় বৃষ্টিতে এসব এলাকায় পাহাড় ধসে প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা