রমেক হাসপাতাল
রংপুর অফিস
প্রকাশ : ২৮ মে ২০২৫ ২০:৩৬ পিএম
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা মাসুম মিয়া (৫২) নামে এক ব্যক্তির মৃতদেহের দুই চোখ গায়েব হয়ে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে নগরজুড়ে। স্বজন ও প্রতিবেশীদের দাবি, পরিকল্পিতভাবে চোখ তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ইঁদুর লাশের চোখ খেয়ে ফেলেছে।
জানা যায়, নগরীর বুড়িরহাট বাহারদুর সিংহ জিপেরপার গ্রামের বাসিন্দা মাসুম মিয়ার সঙ্গে মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে ধান কাটাকে কেন্দ্র করে শ্যালক সায়েদুরের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে সায়েদুরের লোকজন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মাসুম ও তার পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। এতে গুরুতর আহত হন মাসুম। পরে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে মারুফা বেগম বাদী হয়ে সায়েদুরসহ তিন জনকে আসামি করে পরশুরাম থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। গত মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হিমঘরে রেখা হয়। গতকাল বুধবার সকালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হিমঘর থেকে বের করা হলে দেখা যায় দুটি চোখ নেই। এ নিয়ে আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
নিহতের প্রতিবেশী আব্দুল জলিল বলেন, ‘রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওষুধ চুরি হয় শুনেছি। এখন মরদেহের চোখও চুরি হচ্ছে। এখানে মরদেহ রাখাও নিরাপদ নয়। চোখ চুরির ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সর্দার রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, হাসপাতালের হিমঘরের অবস্থা খুবই খারাপ। ইঁদুরের উৎপাত বেড়েছে। মরদেহের দুটি চোখ খেয়ে ফেলেছে ইঁদুর।
হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার মানিক ইসলাম বলেন, হিমঘরে ইঁদুরের উৎপাত বেড়েছে। প্রায় এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাইরে আছেন বলে জানান। এ ব্যাপারে হাসপাতালের উপপরিচালককে একাধিকবার ফোন করা হলে তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
রংপুর মেট্রোপলিটন পরশুরাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইদুল ইসলাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, খবর পেয়ে সকালে মরদেহ দেখতে গিয়েছিলাম। মরদেহে চোখ ছিল না। কী কারণে মরদেহের চোখ ছিল না, তা তদন্ত করা হচ্ছে। মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।