গাইবান্ধা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ মে ২০২৫ ২০:৩৭ পিএম
আপডেট : ২৪ মে ২০২৫ ২০:৪৫ পিএম
গাইবান্ধা জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আদিবাসী-বাঙালি যুব মিলনমেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এবারের উৎসবের স্লোগান ছিলÑ অধিকার, জীবিকা ও সংস্কৃতি রক্ষায় আদিবাসী-বাঙালি যুব মিলি একতায়। উৎসবে সাঁওতালসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর যুব নারী-পুরুষরা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী নয়, ‘আদিবাসী’ পরিচয়ের স্বীকৃতি দাবি করেন।
এ সময় তারা বলেন, ভাষা-সংস্কৃতি সংরক্ষণ, বিকাশ এবং অধিকার রক্ষায় এই স্বীকৃতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে তারা অভিযোগ করেন, জনসাধারণের মধ্যে আদিবাসী ও দলিত সম্প্রদায় নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। তাদের নিজস্ব রীতিনীতি, খাদ্যাভ্যাস, সামাজিক আচার, চিকিৎসা পদ্ধতি, বিবাহ ব্যবস্থা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে, যা স্বতন্ত্র এবং রক্ষার দাবি রাখে।
শনিবার (২৪ মে) দুপুরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রি প্রেস আনলিমিটেড ও আর্টিকেল নাইনটিনের সহায়তায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘অবলম্বন’ এই উৎসবের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইয়ুথ লিডার ললিতা কিস্কু, স্বাগত বক্তব্য দেন অবলম্বনের নির্বাহী পরিচালক প্রবীর চক্রবর্তী।
শিরিন আকতার সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেনÑ গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ফজলুল হক, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মাহফুজার রহমান, উদীচী জেলা সভাপতি অধ্যাপক জহুরুল কাইয়ুম, গাইবান্ধা প্রেস ক্লাব সভাপতি অমিতাভ দাশ হিমুন, এনজিও কনসালট্যান্ট সালমা পারভীন, ইয়ুথ লিডার স্মরণিকা মার্ডি প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের পাহাড় থেকে সমতল পর্যন্ত প্রায় ৫০টির বেশি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী বাস করে, যাদের রয়েছে স্বতন্ত্র ভাষা, সংস্কৃতি ও জীবনধারা। তাদের সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ, যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ২ শতাংশ। মূলধারার সমাজ ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের ঘাটতির কারণে এসব জাতিগোষ্ঠীর ভাষা-সংস্কৃতি আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে। কিছু কিছু তো ইতোমধ্যেই হারিয়ে গেছে। এই বিপন্ন সংস্কৃতি রক্ষায় এ ধরনের আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তারা মনে করেন।
এর আগে সকাল ১০টায় ঐতিহ্যবাহী পোশাক ও বিভিন্ন দাবি সংবলিত ব্যানার-ফেস্টুন হাতে তিন শতাধিক সাঁওতাল ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর যুব নারী-পুরুষ শোভাযাত্রায় অংশ নেন। শোভাযাত্রাটি জেলা শিল্পকলা একাডেমি থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। সকাল ১১টায় মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে উৎসবের উদ্বোধন করেন অতিথিবৃন্দ। পরে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর শিল্পীরা মনোজ্ঞ পরিবেশনা উপস্থাপন করেন।
অবলম্বনের নির্বাহী পরিচালক প্রবীর চক্রবর্তী বলেন, গত ১৫ বছর ধরে আমরা গাইবান্ধা জেলার ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি। আমরা তাদের জীবিকা, অধিকার এবং সংস্কৃতি সংরক্ষণের মাধ্যমে উন্নয়নের মূলধারায় যুক্ত করতে চাই।