প্রবীর সুমন, দীঘিনালা (খাগড়াছড়ি)
প্রকাশ : ২৪ মে ২০২৫ ০৯:২৯ এএম
আপডেট : ২৪ মে ২০২৫ ১৬:০৩ পিএম
দীঘিনালার কবাখালী ইউনিয়নের তারাবনিয়া-ডুলুছড়ি সড়কে কার্লভার্ট ভেঙে পড়ায় ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। প্রবা ফটো
খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার ৩নং কবাখালী ইউনিয়নের তারাবনিয়া-ডুলুছড়ি সড়কে পরপর দুটি কালভার্ট ভেঙে পড়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে স্থানীয়রা। ঝুঁকিপূর্ণ এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে ৯ গ্রামের প্রায় ছয় হাজার মানুষ।
জানা গেছে, দীঘিনালা উপজেলা সদর থেকে কবাখালী ইউনিয়নের হাচিনসনপুর হয়ে মাইনী নদীর কূলঘেঁষে দীঘিনালা তারাবনিয়া-ডুলুছড়ি এবং ক্ষেত্রপুর সংযোগ সড়কটি প্রায় ১৬ কিলোমিটার বিস্তৃত।
এলজিইডির তথ্যমতে, সড়কটি ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪ কোটি ৪৭ লাখ ৫৬ হাজার ১৩৪ টাকা ব্যয়ে হাচিনসনপুর থেকে ডুলুছড়ি পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার কার্পেটিং কাজ সম্পন্ন করেন এমএম সামসুল জেবি নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বাকি ১২ কিলোমিটার ইটের সলিং ও কাঁচা রাস্তা। সড়কটি দেখাশোনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে আছে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
সরেজমিন দেখা গেছে, হাচিনসনপুর থেকে ডুলুছড়ি পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার রাস্তায় তারাবনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পশ্চিম ও পূর্ব পাশের দুটি কালভার্ট ভেঙে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভাঙা কালভার্টের ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যাত্রীবাহী গাড়ি, স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা, মালবাহী গাড়িসহ সব ধরনের যানবাহন। এতে করে কালভার্ট সম্পূর্ণ ভেঙে গিয়ে যেকোনো সময় ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার কবাখালী ইউনিয়নের ৯টি গ্রামের মানুষ জুমচাষ ও সাধারণ কৃষির ওপর জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে। ভাঙা কালভার্টের কারণে কৃষিপণ্য পরিবহন ও অসুস্থ রোগীদের হাসপাতালে আনা-নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। হালকা যানবাহন কোনোভাবে চললেও ভারী যানবাহন চলাচল একপ্রকার বন্ধ হয়ে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা বাবুল চাকমা বলেন, কালভার্ট দুটি বেশ পুরোনো। হাচিনসনপুর থেকে ডুলুছড়ি পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার রাস্তা কার্পেটিং কাজ চলাকালীন বড় কালভার্টটির মাঝখানে ভেঙে গর্তের সৃষ্টি হয়। এখন ভাঙা কালভার্টটির ওপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের চলাচল করতে হচ্ছে। দ্রুত কালভার্টটি পুনর্নির্মাণ করা প্রয়েজন।
কবাখালী ইউনিয়নের মহিলা মেম্বার বিপুরিতা চাকমা বলেন, ৯টি পাড়ার একমাত্র চলাচলের রাস্তার কালভার্টের বড় একটি অংশ ভেঙে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। দুর্গম পাহাড়ের উৎপাদিত কৃষিপণ্য পরিবহনে অসুবিধা এবং ঝুঁকি নিয়ে চলতে হচ্ছে কৃষকদের। কালভার্ট ভাঙার কারণে কৃষিপণ্য পরিবহনে দ্বিগুণ খরচ গুনতে হচ্ছে। দুর্গম এলাকার কৃষকরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নলেজ চাকমা বলেন, কবাখালী ইউনিয়নের ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ৯টি গ্রামের মানুষের একমাত্র যাতায়াত সড়ক এটি। কালভার্ট দুটি দ্রুত মেরামত না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
এ বিষয়ে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ফজলুল হক বলেন, ভাঙা কালভার্ট দুটি আপাতত স্টিলের পাটাতন বসানো হয়েছে। ছোট কালভার্টটি চলমান কাজের মধ্যেই মেরামত করা হবে এবং বড় কালভার্টটি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে পল্লী সড়ক ও সেতু নির্মাণ প্রকল্পে পুনর্নির্মাণের চেষ্টা চলছে।
দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ বলেন, কালভার্ট দুটি মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে উপজেলা প্রকৌশলীকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।