বগুড়া অফিস
প্রকাশ : ১৪ মে ২০২৫ ২১:৩৩ পিএম
বগুড়ায় সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গাওয়ার কর্মসূচিতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে সাতজন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে উদীচী ও ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা রয়েছেন। বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী অভিযোগ করেছে, শিবির ও ইনকিলাব মঞ্চের নেতাকর্মীরা এ হামলা চালিয়েছে। এক বিবৃতিতে উদীচী হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি।
বুধবার (১৪ মে) সন্ধ্যার দিকে বগুড়া শহরের সাতমাথা ও শহীদ খোকন পার্ক এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। উদীচীর বিবৃতিতে বলা হয়, বুধবার বিকালে স্থানীয় সাতমাথা মোড়ে উদীচীসহ কয়েকটি সংগঠন আয়োজিত সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গাওয়া কর্মসূচি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে ফ্যাসিবাদবিরোধী মঞ্চের ব্যানারে উপস্থিত হয়ে কর্মসূচিতে বাধা দেয় ছাত্রশিবির এবং ইনকিলাব মঞ্চের নেতাকর্মীরা। শুধু তাই নয়, বগুড়ায় উদীচীর জেলা কার্যালয়েও ভাঙচুর চালায় হামলাকারীরা।
আরও বলা হয়, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত কারও দানে পাওয়া না। ৩০ লাখ শহীদের রক্ত আর দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এগুলো অর্জন করা হয়েছে। কিন্তু ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর থেকেই একটি স্বার্থান্বেষী ধর্মান্ধগোষ্ঠী জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা পরিবর্তন করা থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের মূল সুরকে নস্যাৎ করার চক্রান্তে লিপ্ত। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে কোনোভাবেই নস্যাৎ হতে দেওয়া যাবে না।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদ এসব ন্যক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় এবং একই সঙ্গে এর সঙ্গে জড়িত সবাইকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানাচ্ছি।
বগুড়া উদীচীর সাধারণ সম্পাদক সাহেদুর রহমান বিপ্লব বলেন, ‘আমরা স্থান পরিবর্তন করার পরও তারা পুলিশের উপস্থিতিতে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। আমাদের সংগঠনের কার্যালয়ের ব্যানার খুলে ফেলেছে।’
এনসিপির বগুড়া জেলা সংগঠক আহমেদ সাব্বির বলেন, ‘বগুড়া সাতমাথায় ফ্যাসিবাদবিরোধী মঞ্চের ডাকে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।’ তবে ফ্যাসিবাদবিরোধী মঞ্চের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বগুড়া সদর থানার ওসি এসএম মঈনুদ্দিন বলেন, ‘সাতমাথা মোড়ে একটি অনুষ্ঠানে একটু ঝামেলা হয়েছিল। তবে দ্রুত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাওয়ার কারণে বড় কিছু হয়নি।’
এ বিষয়ে বগুড়া জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতোয়ার রহমান বলেন, ‘উদীচীর ঢাকার অনুষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় করে বগুড়া সদরের খোকন পার্কে জাতীয় সংগীত গাওয়ার আয়োজন করা হয়। একই সঙ্গে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও সেখানে অবস্থান নেন। পরে টেম্পল রোডের উদীচীর কার্যালয়ে ভাঙচুর করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।’