কক্সবাজার অফিস
প্রকাশ : ০৩ মে ২০২৫ ১৭:৩৫ পিএম
আপডেট : ০৩ মে ২০২৫ ১৭:৩৭ পিএম
আসামি মাহফুজা আক্তার ও আসিকুর রহমান।
কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে নেওয়ার কথা বলে সরকারি বরাদ্দের নির্মাণ সামগ্রী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতিপত্র জালিয়াতি করে মিয়ানমারে পাচারের অভিযোগে অবশেষে মামলা হয়েছে। এতে এক ইউপি সদস্য ও প্রশাসনের কর্মচারীসহ অজ্ঞাতপরিচয় আটজনকে আসামি করা হয়েছে।
শুক্রবার (৩ এপ্রিল) রাতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অফিস সহকারী বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে টেকনাফ থানায় মামলাটি করেন বলে নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন।
তিনি জানান, মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া জেলা প্রশাসনের নিয়োগকৃত সেন্টমার্টিন পর্যটন তথ্য ও অভিযোগ কেন্দ্রের ইনচার্জ আসিকুর রহমানকে। অপর আসামি সেন্টমার্টিন দ্বীপের ইউপি সদস্য এবং সেন্টমার্টিন পর্যটন তথ্য ও অভিযোগ কেন্দ্রের সভাপতি মাহফুজা আক্তার। এ দুইজন ছাড়াও অজ্ঞাতপরিচয় আটজনকে আসামি করা হয়েছে।
এজাহারে নথিপত্র জালিয়াতি এবং মিয়ানমারে পণ্য পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে জানিয়ে ওসি বলেন, ‘আমরা তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেব।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসনের নথিপত্র জালিয়াতি করে একটি চক্র মিয়ানমারে সিমেন্ট-টিন পাচার করেছে। এ ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় অভিযুক্ত চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে দীর্ঘদিন চোরাচালানে জড়িত ৮ নামে একটি চক্রের নাম পাওয়া গেছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গত ৩০ এপ্রিল কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে নেওয়ার কথা বলে সরকারি বরাদ্দের সিমেন্ট, বালু ও টিনভর্তি একটি ট্রলার মিয়ানমারে নিয়ে যায় বাংলাদেশি একটি চক্র। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতিপত্র জালিয়াতি করে এ কাজ করে চক্রটি।
এ ব্যাপারে দৈনিক প্রতিদিনের বাংলাদেশসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর শুক্রবার সকালে জেলা প্রশাসনের নিয়োগকৃত সেন্টমার্টিন পর্যটন তথ্য ও অভিযোগ কেন্দ্রের ইনচার্জ আসিকুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরে রাতেই এ ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা হয়।
এই পাচারের নেপথ্যে অনুসন্ধানে মিলেছে আটজনের একটি চক্রের নাম। যে চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে নানা জালিয়াতির মাধ্যমে মিয়ানমারে খাদ্যপণ্য, সার, নিমার্ণসামগ্রী পাচার করে আসছে। এতে উঠে এসেছে স্থানীয় ট্রলার মালিক মোহাম্মদ আলম, সেন্টমার্টিন ঘাটের স্পিড বোটের লাইনম্যান জাহাঙ্গীর আলম, ইউপি সদস্য মাহফুজা আক্তার, জেলা প্রশাসনের কর্মচারী আসেকুর রহমান, সেন্টমার্টির ইউপি সদস্য আকতার কামাল, ট্রলার মাঝি নুরুল ইসলাম, টেকনাফের কেফায়েত উল্লাহ ও আবদুল মোনাফের নাম।
অভিযোগ রয়েছে, চক্রটি গত ১২ নভেম্বর একই প্রক্রিয়ায় জালিয়াতির মাধ্যমে আরও দুইটি ট্রলারে নিমার্ণসামগ্রী পাচার করেছিল। ওই দিন টেকনাফ থেকে নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে উধাও হওয়া ট্রলার এই দুইটি। যেখানে রড ও সিমেন্ট ছিল।