সোহরাব হোসেন
প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:৫৩ পিএম
বাজারে কিছুদিন ধরে সব ধরনের সবজির দাম বাড়ছে। গেল রমজানজুড়ে সবজির দাম কম থাকায় ক্রেতারা স্বাচ্ছন্দ্যে কিনতে পেরেছেন। তবে ঈদের পর থেকে দাম বাড়তির দিকে। প্রতি কেজি গোল বেগুন সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে হয়েছে ১২০ টাকা। পাশাপাশি লম্বা বেগুন ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বসুন্ধরা কাঁচাবাজার, মোহাম্মদপুর টাউন হল, বনশ্রী ও নতুন বাজার ঘুরে বাড়তি দামের এমন চিত্র দেখা গেছে।
কাঁচাবাজারে প্রতি সবজিতে ১০ টাকা দাম বৃদ্ধি : বসুন্ধরা কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়, পটোল ৮০, করলা কেজি ৭০, গাজর ৬০, বরবটি ৮০, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৩৫, টমেটো ৪০ থেকে ৫০, কচুর লতি ১০০, চিচিঙ্গা ৭০, বেগুন ১০০ থেকে ১২০, আলু ২৫, কাঁচামরিচ ৮, শসা ৮০ থেকে ৯০ এবং সজিনা ডাঁটা ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে এসব সবজির দাম প্রতি কেজিতে ১০ টাকা কম ছিল। তবে শিম ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০ টাকা।
বাজার করতে আসা সায়রা ইসলাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, সবজির দাম বাড়তি। বিশেষ করে ঈদের পর থেকে প্রতিদিন বাড়ছে। এখন ৭০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। আর অন্যান্য সবজির দাম তো সেঞ্চুরি করেছে। এত দামি সবজি আমাদের মতো সাধারণ পরিবারের কিনে খাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দাম বৃদ্ধির কারণ জানিয়ে বসুন্ধরা কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা মোমিন বলেন, এখন মৌসুম শেষ হয়ে যাওয়ায় সরবরাহ কম তাই দাম বাড়তির দিকে। শীতের সবজি শেষ হয়ে যাওয়ার পর বাজার আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। এখন নতুন করে এই মৌসুমের সবজি উঠবে কিছুদিন পর। নতুন সবজি উঠতে শুরু করলে দাম কমে আসবে।
স্থিতিশীল মুরগির দাম, বৃদ্ধিতে মাছ : রাজধানীর নতুন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৯০ থেকে ২০০ টাকা। সোনালি মানভেদে ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা। দেশি মুরগি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া লেয়ার মুরগির ডিম ১৩০ টাকা, দেশি মুরগির ১৮০ ও হাঁসের ডিম ২১০ থেকে ২২০ টাকা ডজন।
অন্যদিকে প্রতি কেজি পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ১৮০-১৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তেলাপিয়া ২০০-২২০ টাকা, আগে ২০০ ছিল। সরপুঁটি ২২০-২৩০ টাকা, যা আগে ছিল ২১০-২২০। আকারভেদে রুই বিক্রি হচ্ছে ৩২০-৪৫০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে হয় ২৮০-৪০০ টাকায়। কাতল বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩৫০ টাকায়, চাষের চিংড়ি ৬৫০-৭৫০, নদীর চিংড়ি ৮০০-১০০০, শিং ৮৫০-৯০০ এবং ট্যাংরা ৭০০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কমেছে পেঁয়াজের দাম : সরবরাহ কমার অজুহাতে গত সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছিল। হঠাৎ দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েন নিম্ন আয়ের মানুষ। তবে গতকাল বাজার ঘুরে দেখা যায়, সেনাবাহিনীর অভিযানের পর কেজিতে ৫ টাকা কমেছে পেঁয়াজের দাম। ফলে ৫৫ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ১০ টাকা কমে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে রসুন, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৩০ টাকা।
ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ প্রকারভেদে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও বৃহস্পতিবার বিক্রি হয় ৫৫ টাকায়। যেহেতু সেনাবাহিনী বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালাচ্ছে, সেহেতু দাম আরও কমতে পারে।
স্থিতিশীল তেলের বাজার : ব্যবসায়ীদের দাবি মেনে লিটারে ১৪ টাকা বাড়িয়ে সয়াবিন তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করেছে সরকার। প্রতি লিটার বোতলের সয়াবিন তেলের দাম ঠিক হয়েছে ১৮৯ টাকা। ৫ লিটার বোতলজাত তেল বিক্রি হচ্ছে ৯২০ টাকায়। এতদিন যা ছিল ৮৫০ টাকা। অন্যদিকে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৫৭ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৬৯ টাকা। খোলা পাম তেলও লিটারপ্রতি ১৫৭ থেকে বাড়িয়ে ১৬৯ টাকা করা হয়েছে। অর্থাৎ খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বেড়েছে লিটারে ১২ টাকা।