তিস্তা সেতুর টোলপ্লাজায় হামলা, ১৪ লাখ টাকা ‘ছিনতাই’

লালামনিরহাট তিস্তা সড়ক সেতু-১ এর টোল প্লাজায় হামলা চালিয়ে ১৪ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় টোল আদায়কারী তিন কর্মচারীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির এক নেতাকে প্রধান আসামি করে সদর থানায় মামলা করা হয়েছে।

টোল না দেওয়া নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে মাহফুজুর রহমান রাজু নামে ওই বিএনপি নেতার নেতৃত্বে প্রায় ৪০ জনের একটি দল এই হামলা চালায় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

মামলার প্রধান আসামি মাহফুজুর রহমান লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের মোস্তফি এলাকার সামাদ ব্যাপারীর ছেলে। তিনি ওই ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলে জানা গেছে।

মাহফুজুরসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় আরও ২০/২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার বাদী টোল আদায়ের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান রংপুর শহরের মেসার্স রানা কনস্ট্রাকশনের পরিচালকমণ্ডলীর সদস্য নাজমুল আলম।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গতকাল বুধবার বেলা ৩টার দিকে মাহফুজুর রহমান রাজুসহ পাঁচ থেকে সাতজন মোটরসাইকেল নিয়ে টোল প্লাজা পার হচ্ছিলেন। এসময় টোল প্লাজার কর্মীরা টোলের টাকা চাইলে বাইক আরোহীরা জানায় তারা টোল দেবে না। এমনকি তাদের আরও যত গাড়ি আছে, সেই গাড়িগুলোও টোল দেবে না। এসময় তারা হুমকি-ধমকিও দেয়। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে টোল প্লাজার কর্মীদের কথা–কাটাকাটি হয়। এসময় তারা টোল না দিয়েই চলে যায়।

পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মাহফুজুর রহমানের নেতৃত্বে মামলার এজাহারভুক্ত আসামিসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২০/২৫ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এসে টোল প্লাজায় হামলা চালায়। এসময় টোল প্লাজার তিন কর্মচারীকে রড দিয়ে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ক্যাশ বাক্সে থাকা ১৪ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়। 

বাদী নাজমুল বলেন, ‘মাহফুজুর রহমান রাজুর নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে টোল কর্মচারীদের মারধর ও ১৪ লাখ টাকা লুট করা হয়েছে।’

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে মাহফুজুর রহমান রাজু বলেন, ‘তারা আমাদের মামলায় ফাঁসাতে ১৪ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের নাটক তৈরি করেছে। আমি এর সঠিক তদন্ত দাবি করছি।’

হামলায় আহতরা হলেন টোল আদায়কারী ম্যানেজার সুরুজ্জামান, কর্মচারী জুয়েল এবং মোখলেস। তাদের লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

তাদের মধ্যে জুয়েল ও সুরুজ্জামানের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (উপ-পরিচালক) মোকাদ্দেম হোসেন।

টোল প্লাজায় দায়িত্বরত পুলিশের সাব-ইনস্পেক্টর রওশন বলেন, ‘দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এসময় লুটপাটের কোনো ঘটনা ঘটেছে কি না- তা সিসিটিভির ফুটেজ দেখলে বোঝা যাবে।’

লালমনিরহাট সদর থানার ওসি মোহাম্মদ নুরনবী বলেন, ‘থানায় মামলা করা হয়েছে।  তদন্ত শেষে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’