চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ২৩ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:৪৮ পিএম
আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:৫৬ পিএম
চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। প্রবা ফটো
পাহাড় এখন আগের থেকে অনেক ভালো অবস্থায় আছে, অনেক শান্ত আছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
খাগড়াছড়িতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী অপহরণ নিয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা ছোটখাটো অপহরণ। যে চার-পাঁচজনকে ধরে নিয়ে গেছে... মেয়েটিকে মনে হয় ছেড়ে দিয়েছে। এগুলো আমাদের সমতলেও তো হচ্ছে। খালি পাহাড়ে কেন দোষ দেন?’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পাহাড়ে আমি তিনবার চাকরি করেছি। ক্যাম্প কমান্ডার, সিও ও বিগ্রেড কমান্ডার ছিলাম। পাহাড়ের অশান্ত তো আপনারা দেখেনইনি। এখন ওই তুলনা করতে গেলে পাহাড় এখন পুরোটাই শান্ত।’
‘আমি বাঘাইহাটে ছিলাম। সেখানে ল্যান্ডমাইন দিয়ে একসঙ্গে পিকআপ উড়িয়ে দিয়েছে। তিন-চারজন করে মারা গেছে। সেসময় এ খবরগুলো আসেনি, প্লাস ওই এলাকায় প্রবেশের অনুমতিও ছিল না। কিন্তু এখন তো পাহাড়ের অবস্থা এতো ভালো। ওই রাস্তা দিয়ে আপনারা সাজেক চলে যাচ্ছেন,’ যোগ করেন উপদেষ্টা।
রাউজানে সম্প্রতি খুন-সন্ত্রাস বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘রাউজান, ফটিকছড়ি, পটিয়া ও সাতকানিয়া এলাকা হলো পাহাড় ও সমতল, দুটোরই সংমিশ্রন। চট্টগ্রাম বিভাগের একটি সমস্যা হলো এখানে পড়েছে সব পাহাড়, সমতল ভূমি ও সমুদ্র। বনাঞ্চলও আছে এখানে। এখানকার সমস্যা অন্যান্য এলাকার চেয়ে ভিন্ন। আমরা এই ব্যাপারে আলাপ করেছি। সন্ত্রাসীরা অপকর্ম করে পাহাড়ের দিকে চলে যায়। প্রকাশ্যে কেউ যদি এলাকায় থাকে আমি আপনাদের সামনে হাবিবকে (চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি) নির্দেশ দিয়ে গেলাম যেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘যে সব ঘটনা ঘটে, সত্যি ঘটনা; আপনারা অবশ্যই তা প্রকাশ করে দেবেন। তখন আমাদের কাজ করতে সুবিধা হয়। কিন্তু অনেক সময় আছে দুয়েকজন করে কি, ঘটনা সত্যি নয় কিন্তু প্রকাশ করে দেয়। সেসময় ইনভেস্টিগেশন করে দেখা যায় যে, ঘটনা সত্যি নয় তখন অসুবিধা হয়। পাশ্ববর্তী দেশের সাংবাদিকরা এর সুবিধাটা নেয়। যেহেতু জানেন যে তারা মিথ্যা সংবাদ বেশি পরিবেশন করে। আপনারা যেভাবে কাজ করে যাচ্ছেন আমি অনুরোধ করব সেভাবে কাজ করেন।’
সম্প্রতি আরাকান সশস্ত্র সংগঠনের সদস্যদের বাংলাদেশে এসে সাংগ্রাই উৎসব পালনের ছড়িয়ে পড়া ভিডিও নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘এখন দেখতে হবে আরাকান আর্মি ফাইট করতেছে অনেকদিন যাবৎ। এদের অনেকে এপারে বিয়ে করেছে- এটা অস্বীকার করার কিছু নেই। কিন্তু যে হারে ভিডিওতে আসছে বিষয়টা তা নয়। টিকটক ভিডিও অনেকভাবে করা যায়। সবটা যে সত্য তা না, আবার সবটা যে মিথ্যা তাও না। এটার ক্ষেত্রে আপনাকে ব্যালেন্স করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আরাকান বর্ডারটা ডিফিকাল্ট বর্ডার। আমরা তো মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি। কিন্তু বর্ডারটা দখল করে আছে আরাকান আর্মি। এখন মিয়ানমার থেকে কিছু আমদানি-রপ্তানি করতে হলে মিয়ানমার সরকারকে ট্যাক্স দিতে হয় আবার আরাকান আর্মিতে যারা আছে তারাও পয়সা নিচ্ছে। এখানে একটা সমস্যা আছে আপনাকে বুঝতে হবে। এটার সমাধানে চেষ্টা চলছে। আর সীমান্ত পুরোপুরিভাবে রক্ষিত আছে।’