× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন কৃষক

ইসমাইল মাহমুদ, মৌলভীবাজার

প্রকাশ : ২১ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:২৯ এএম

আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০২৫ ১১:০৮ এএম

মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওরপাড়ের একটি ভুট্টা ক্ষেত

মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওরপাড়ের একটি ভুট্টা ক্ষেত

মৌলভীবাজারের হাওরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় পতিত জমিতে বাণিজ্যিকভাবে ভুট্টা চাষাবাদ হচ্ছে। অন্য ফসলের চেয়ে ভুট্টার উৎপাদন খরচ অনেক কম। বাজারে এর চাহিদা বেশি থাকা। তাই জেলার কৃষকরা এ ফসল চাষে ঝুঁকছেন। এ বছর জেলার ২৫৫ হেক্টর পতিত জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ২ হাজার ২৯৫ মেট্রিক টন, যার বাজারমূল্য প্রায় ৬ কোটি টাকা।

শনিবার সরেজমিনে মৌলভীবাজারের হাওরাঞ্চলসহ বিভিন্ন প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মাঠজুড়ে ভুট্টা গাছ। এরই মধ্যে গাছগুলোয় ফুল ধরেছে। কিছুদিনের মধ্যে ফল আসা শুরু হবে।

জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মৌলভীবাজারের মাটি ও আবহাওয়া ভুট্টা চাষের উপযোগী। এ কারণে এ জেলায় ভুট্টার বাম্পার ফলনের রেকর্ড রয়েছে। গত দুবছর প্রতি হেক্টরে ফলন হয়েছে ৯ মেট্রিক টন করে। অন্য ফসলের চেয়ে ভুট্টার উৎপাদন খরচ অনেকটাই কম। বাজারে এর চাহিদাও বেশি। এতে ফসলটি চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। 

দুই বছর আগে জেলার সদর, কুলাউড়া, রাজনগর, বড়লেখা, জুড়ী, কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ২৭০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়। আর উৎপাদন হয় ২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। গত বছরে ৩১৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়। উৎপাদন হয় প্রায় ২ হাজার মেট্রিক টন। এ বছর জেলায় ভুট্টা চাষ হয়েছে ২৫৫ হেক্টর জমিতে। এবার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ২৯৫ মেট্রিক টন। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হলে বিক্রি হবে প্রায় ৬ কোটি টাকার ভুট্টা।

সূত্রটি আরো জানায়, দেশের অর্থকরী ফসলগুলোর মধ্যে ভুট্টা অন্যতম। চারা রোপণের মাত্র ১৫০ দিনেই ফসল ঘরে তোলা যায়। এটি চাষে পানি কম লাগে। মৌলভীবাজারে বিকল্প ফসল হিসেবে ভুট্টার উৎপাদন আশাব্যঞ্জক। এটি পতিত জমিতে চাষ করা যায়। ভুট্টার ব্যবহার অনেক রকমের। এর পাতা উৎকৃষ্ট গো-খাদ্য। ভুট্টার ফলন ওঠার পর গাছগুলো জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। মানুষের খাদ্য তৈরিতে বিশেষ করে শিশুখাদ্য থেকে শুরু করে রোগীর পথ্য তৈরিতে ভুট্টার প্রয়োজন হয়। এ ছাড়া দানাদার গো-খাদ্য, পোল্ট্রি ফিড, মৎস্য ফিডসহ পশুপাখির সব খাবার তৈরিতেই ব্যবহৃত হয়। 

হাকালুকি হাওরপাড়ের ভুট্টা চাষি সালামত উল্লাহ বলেন, ‘আমি এবার নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ভুট্টা চাষ করছি। আমার ৩ বিঘা জমিতে শীত মৌসুমের আগাম সবজি চাষ করি। সবজি বিক্রির পর ওই জমিতেই লাগাই ভুট্টা। এর আগে ওই জমিগুলো মৌসুমি সবজি উৎপাদনের পর পতিত থাকত। এখন আর পতিত থাকে না। ভুট্টা চাষে পরিশ্রম কম, লাভ বেশি। এ ফসল চাষে গত দুবছর আমার পরিবারে এসেছে সচ্ছলতা।’

একই হাওরের অপর চাষি সমিরণ দেব বলেন, ‘আগে আমার নিচু জমিতে বোরো ধানের আবাদ করতাম। পানিস্বল্পতায় বোরো ধান চাষে খুব একটা সফল হইনি। এখন ভুট্টা চাষ করছি। এ ফসল চাষে পানি কম লাগে। ফলে লাভবান হচ্ছি।’

শ্রীমঙ্গলের ২ নম্বর ভুনবীর ইউনিয়নের প্রান্তিক কৃষক তৈমুছ মিয়া বলেন, ‘আমার নিজের কোনো জমি নেই। তবে স্থানীয় একজনের কাছ থেকে ৯০ শতাংশ জমি লিজ নিয়ে এবারই প্রথম ভুট্টা চাষ করেছি। আশা করছি ভালো ফসল পাব।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জালাল উদ্দিন এবং অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি বলেন, ‘মৌলভীবাজারে চলতি বছরে ২৫৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষাবাদ হচ্ছে। প্রতি হেক্টরে আমাদের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৯ মেট্রিক টন। সে হিসাবে আমরা এবার ২ হাজার ২৯৫ মেট্রিক টন বা তার বেশি ফসল পাওয়ার প্রত্যাশা করছি। দুই বছর আগে জেলায় ভুট্টা চাষাবাদ হয়েছিল ২৭০ হেক্টর জমিতে এবং গত বছরে চাষ হয় ৩১৫ হেক্টর জমিতে। এবার কৃষকদের কোনো প্রণোদনা দেওয়া হয়নি। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে উদ্বুদ্ধকরণ ও কিছু প্রকল্প থেকে সহযোগিতা করা হয়েছে। আগামী বছর জেলায় ভুট্টার আবাদ আরও অনেক বাড়বে বলে আমরা আশাবাদী।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা