× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ময়মনসিংহ মেডিকেল

রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম চিকিৎসকরা

শফিক সরকার, ময়মনসিংহ

প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ১০:০৫ এএম

আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ১০:৫১ এএম

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডের বারান্দায় রোগীর ভিড়। প্রবা ফটো

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডের বারান্দায় রোগীর ভিড়। প্রবা ফটো

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আকলিমা খাতুন নামে এক রোগী ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালের ১০ নম্বর ওয়ার্ডে। তার বাড়ি জেলার নান্দাইলে। তিনি ৭ দিন আগে এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তার স্থান হয়েছে হাসপাতালের বারান্দায়। রোগীর ভিড়ে ভর্তির ৭ দিনেও তার জায়গা হয়নি বেডে। রোদের তাপ আর গরমে তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। না পাচ্ছেন সঠিক সময়ে চিকিৎকের দেখা, না পাচ্ছেন সুযোগ-সুবিধা। তার মতো শত শত রোগীর একই অবস্থা। এদের বেশিরভাগের জায়গা হয়েছে হাসপাতালের বারান্দা ও মেঝে। নির্ধারিত সিটের চেয়ে প্রায় চারগুণ রোগী আর রোগীর স্বজনদের ভিড়ের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালটি। 

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে বারান্দায় পর্দা টানিয়ে দিয়েছে। এখন পুরো বারান্দা ওয়ার্ডে রূপান্তরিত হয়েছে। এর সঙ্গে অতিরিক্ত রোগী সামলাতে নির্দিষ্ট চিকিৎসকদের দিশাহারা অবস্থা। সব মিলে হাসপাতালের বেহাল দশা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহ নগরীর চরপাড়া এলাকায় ১৯৬২ সালে হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠিত হয়। সঙ্গে রয়েছে মেডিকেল কলেজ। এই পুরোনো হাসপাতালে সিট রয়েছে এক হাজার। ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলার বাইরেও গাজীপুর, টাঙ্গাইলসহ আরও কয়েকটি জেলার রোগী এখানে এসে ভর্তি হয়। নির্ধারিত এক হাজার সিটের বাইরে আরও প্রায় চারগুণ রোগী ভর্তি রয়েছে হাসপাতালে।

গত বৃহস্পতিবার রোগী ভর্তি ছিল ৩ হাজার ৪০০ জন। এই রকম প্রতিদিনই তিন থেকে চার হাজার পর্যন্ত রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি হয়। প্রতিটি ওয়ার্ডের বারান্দায় দুই সারি করে রোগী ভর্তি করা হয়েছে। এমনকি সিঁড়ি কোঠায়ও রোগীর জায়গা হয়েছে। এর সঙ্গে প্রতিটি রোগীর সঙ্গে স্বজন রয়েছেন তিন থেকে চারজন। কোথাাও পা ফেলার জায়গা নেই। 

বৃহস্পতিবার হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, এর প্রতিটি ওয়ার্ডে রোগীর উপচে পড়া ভিড়। ওয়ার্ডের বারান্দায় দুই সারি করে রোগী ভর্তি করা হয়েছে। রোগী আর তাদের স্বজনদের ভিড়ে ওয়ার্ডে যাওয়ার কোনো উপায় নেই। সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা গেছে শিশু ও গাইনি ওয়ার্ডে। পুরাতন ভবনের চারতলায় পুরো বারান্দায় পর্দা দেওয়া হয়েছে। যাতে রোগীরা রোদ-বৃষ্টি থেকে রক্ষা পায়। আর হাসপাতালে রোগী ও স্বজনদের ভিড়ে ময়লা আর দুর্গন্ধে দর্শীনার্থীদের টিকে থাকাও কঠিন হয়ে পড়ছে।

হাসপাতালে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর তীব্র সংকট রয়েছে। ফলে সময়মতো পরিষ্কার রাখাও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কঠিন হয়ে পড়ছে।

অফিস সূত্রে জানা যায়, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর পদ রয়েছে ৪৬১ জনের, সেখানে আছে ২৩১ জন। এতে বিশাল হাসপাতালের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বারান্দায় এখলাছ উদ্দিন নামে এক রোগীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ১০ দিন ধরে এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তার সিট হয়েছে বারান্দায়। রোগীর ভিড়ে অনেক চেষ্টা করেও ওয়ার্ডের ভেতরে যেতে পারেননি তিনি। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বারান্দায় রোদ থাকে। আর বারান্দায় ফ্যানের ব্যবস্থা নেই। রোদ আর গরমে অনেক কষ্টে রয়েছেন বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘বারান্দায় চিকিৎসকরা দায়সারাভাব নিয়ে দায়িত্ব পালন করেন। নার্সদের তো দেখা পাওয়া কঠিন।’

এ বিষয়ে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘হাসপাতালের এক হাজার সিটের বিপরীতে তিন থেকে চারগুণ রোগী ভর্তি হয়। আর রোগীর সঙ্গে স্বজনরা হাসপাতালে অবস্থান করেন। রোগী আর তাদের স্বজনদের ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের।’

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এক হাজার রোগীর ওষুধ, বিছানাপত্র ও অন্য সবকিছুই তিন থেকে চার গুণ রোগীর মধ্যে ভাগাভাগি করতে হচ্ছে। এতসংখ্যক রোগীর সেবা দিতে গিয়ে চিকিৎসকরাও হয়রান হয়ে পড়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রতিনিয়তই বলা হচ্ছে। কিন্তু কোনো কাজে আসছে না।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা