× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

শিক্ষক আসেন ইচ্ছামতো

কুড়িগ্রাম প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ১০:৪৭ এএম

শিক্ষক আসেন ইচ্ছামতো

দুই মাস ধরে স্কুলে আসেন না সহকারী শিক্ষক। শুধু সহকারী শিক্ষক নয়, রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকায় প্রধান শিক্ষকও স্কুলে আসায় অনিয়মিত। প্রায় সময় তিনি অনুপস্থিত। এতে ভেঙে পড়েছে স্কুলটির শিক্ষা কার্যক্রম।

কুড়িগ্রামের উলিপুরের হাতিয়া ইউনিয়নের হাতিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের চিত্র এটি। নিয়মের যেন কোনো বালাই নেই এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। কর্তৃপক্ষের দুর্বল তদারকিকেও দায়ী করছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। 

এলাকাবাসী ও শিক্ষকদের অভিযোগে জানা যায়, হাতিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রায় সময় বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকেন। মাঝেমধ্যে আসেন। হাজিরা খাতায় সই করে চলে যান। স্কুলের অন্য এক সরকারি শিক্ষক নুর আলম ২ মাস ধরে স্কুলটিতে অনুপস্থিত। এই স্কুলটিতে এমনিতেই রয়েছে শিক্ষক সংকট। তারপরে সহকারী শিক্ষক অনুপস্থিত থাকায় বাড়তি চাপ পড়েছে অন্য শিক্ষকদের ওপর। কিন্তু শিক্ষক নুর আলম কেন অনুপস্থিত এ বিষয়ে কিছুই জানেন না অন্য শিক্ষকরা। প্রধান শিক্ষকের রয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে সখ্য। এ কারণেই অন্য শিক্ষক তাকে চটাতে ভয় পান। 

সরেজমিন গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় হাতিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সহকারী শিক্ষক (কৃষি) চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে একদিনও স্কুলে উপস্থিত হননি। হাজিরা খাতায় শুধু নাম লেখা থাকলেও একদিনও স্কুলে আসেননি। নেই তার স্বাক্ষর। 

ঈদের ছুটির পরে গত ৯ এপ্রিল স্কুল খুললেও সেদিনও অনুপস্থিত ছিলেন সেই সহকারী শিক্ষক। ১০ এপ্রিল তার স্বাক্ষর থাকলেও তাকে বিদ্যালয়ে পাওয়া যায়নি। শুধু তাই নয়, প্রধান শিক্ষক আবুল হোসেনেরও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর নেই। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসেও বেশ কিছুদিন স্বাক্ষর নেই এই প্রধান শিক্ষকেরও। প্রমাণ হিসেবে হাজিরা খাতার ছবি রয়েছে প্রতিবেদকের হাতে।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান, (ভৌতবিজ্ঞান) বলেন, ‘আমাদের কৃষি শিক্ষক স্কুলে কেন আসেন না আমরা জানি না। স্কুলে প্রায় ৩শ শিক্ষার্থী। সেই হিসাবে শিক্ষক কম। তার মধ্যে তার অনুপস্থিতিতে অনেক কষ্টে তার ক্লাসগুলো মেকআপ করছি।’

সিনিয়র সহকারী শিক্ষক পল্লবী সাহা (হিন্দু ধর্ম শিক্ষক) বলেন, ‘নুর আলম স্যার স্কুলে আসেন না কেন আমরা জানি না। আমাদের প্রধান শিক্ষক জানেন।’

এলাকাবাসী আফজাল হোসেন বলেন, ‘সহকারী শিক্ষক নুর আলম দুই মাস ধরে স্কুলে আসেন না। প্রধান শিক্ষক কোনো ব্যবস্থা নেন না। দুর্নীতিতে ভরা আমাদের এই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। শিক্ষা কর্মকর্তারা ঘাস কাটে। কোনো তদারকি নেই।’

দুই মাস ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতির বিষয়টি জানতে মোবাইল ফোনে কল দিলে সহকারী শিক্ষক নুর আলম বলেন, ‘আমি অসুস্থ’। আপনি কি ছুটিতে আছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ‘আমি আপনার সঙ্গে আগামীকাল সাক্ষাতে দেখা করে বিস্তারিত বলব।’ 

হাতিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল হোসেন বলেন, ‘সহকারী শিক্ষক নুর আলম হার্টের রোগী। এ ছাড়া তিনি ঋণগ্রস্ত হয়েছেন। সে কারণে তর হার্টের রোগ বেড়ে গেছে। তাই তিনি জানুয়ারি মাস থেকে স্কুলে আসে না। আমি ইতোমধ্যে তাকে দুটি শোকজ দিয়েছি, তিনি এখনও জবাব দেননি। শিক্ষকদের বেতন যেহেতু এখন ইএফটিতে হয়, তাই হেডমাস্টারদের এক্ষেত্রে করণীয় কী সে বিষয়টি আমার জানা নেই।’

আপনার নিজেরও হাজিরা খাতায় অনেক স্বাক্ষর নেই, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা হেডমাস্টার মানুষ। ওইভাবে সব সময় স্বাক্ষর করা হয় না।’ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শামছুল আলম বলেন, ‘এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এটা প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা