× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

কুমারপাড়ায় বৈশাখী ব্যস্ততা

অরণ্য ইমতিয়াজ, টাঙ্গাইল

প্রকাশ : ১২ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:২২ এএম

প্রবা ফটো

প্রবা ফটো

আর মাত্র একদিন পরই বাঙালির প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ। নববর্ষ এলেই কুমারপাড়ায় বেড়ে যায় কর্মব্যস্ততা। বৈশাখকে কেন্দ্র করে তারা মৃৎশিল্প তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন। সে কারণে সারা বছর কাজ তেমন না থাকলেও বৈশাখ রাঙাতে প্রতি বছরের মতো এবারও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মৃৎশিল্পের কারিগররা। সারা বছরের মধ্যে তাদের উল্লেখযোগ্য আয় হয় বৈশাখেই। বৈশাখ এলে বাঙালিরা ‘বাঙালিয়ানা’ জিনিসের প্রতি একটু বেশি ঝুঁকে পড়েন। তাই কদর বাড়ে মাটির তৈরি জিনিসপত্রের। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই কুমাররাও প্রস্তুত হতে থাকেন।

কুমারপাড়ার কারিগররা হাড়ভাঙা পরিশ্রম করছেন মৃৎশিল্প তৈরিতে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নারী-পুরুষ সবাই মিলে তৈরি করছেন নানা রকমের জিনিসপত্র। হাঁড়ি-পাতিল, সানকি, কনসি, ফুলের টপ থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস এবং পুতুল, হাতি, পাখি, আম, জাম, কাঁঠাল, মাছসহ বিভিন্ন খেলনা তৈরিতে ব্যস্ত এখন মৃৎশিল্পীরা। অনেকে এসব জিনিস তৈরি শেষে আগুনে পোড়ানার কাজও শেষ করেছেন। আবার কেউ কেউ এখনও তড়িঘড়ি করে তৈরি করছেন মাটির জিনিসপত্র।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া কুমারপাড়ায় গিয়ে তাদের ব্যস্ততা দেখা যায়। কেউ মাটি প্রস্তুত করছেন, কেউ স্তূপ করে রাখা মাটি কেটে উপকরণ তৈরির প্রক্রিয়া করছেন, কেউ কাঁচা জিনিসগুলো রোদে শুকাতে দিচ্ছেন আবার কেউ রোদে শুকানো মৃৎশিল্প আগুনে পুরানো শেষে রঙ করছেন। করটিয়া হাট থেকে উত্তরদিকে এগিয়ে গিয়ে দেখা যায়, আশির বেশি বয়স মহাদেব পাল, তার স্ত্রী ও পুত্রবধূ নিয়ে মৃৎশিল্প তৈরির কাজ করছেন। মহাদেব পাল বলেন, বাপ-দাদার পেশা ছাড়তে তো পারি না। আগে জমজমাট ব্যবসা ছিল। এখন খুব খারাপ অবস্থা। অ্যালুমিনিয়াম, সিলভার, প্লাস্টিক, স্টিল ও কাচের জিনিস আসায় মাটির জিনিসের কদর কমে গেছে। এখন মানুষ শখের বসে মাটির জিনিস কিনে। বৈশাখ এলে কিছু বিক্রি হয়।

কুমাররা জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা এ পেশায় থেকে জীবিকা নির্বাহ করছেন। সারা বছর মাটির জিনিসের তেমন চাহিদা থাকে না। কিন্তু বৈশাখে বিভিন্ন মেলায় এর চাহিদা বেড়ে যায়। যে চাহিদা মেটাতে তারা এক থেকে দেড় মাস আগেই প্রস্তুতি নিতে থাকেন। যদিও আধুনিকতার ছোঁয়ায় মৃৎশিল্প প্রায় বিলুপ্তির পথে। তবুও বংশ পরম্পরায় এবং জীবিকা নির্বাহের তাগিদে তারা এখনও মৃৎশিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রয়েছেন। মৃৎশিল্প তৈরি উপকরণের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় তাদের এ পেশায় টিকে থাকা কষ্ট হচ্ছে বলেও তারা জানান।

সুশান্ত পাল বলেন, মাটির জিনিস তৈরি করতে যে মাটি লাগেÑ আগে সে মাটি আশপাশেই পাওয়া যেত, টাকা লাগত না। কিন্তু এখন মাটি কিনতে হচ্ছে বিভিন্ন এলাকা থেকে। গত বছর এক ট্রাক মাটির দাম ছিল দুই হাজার টাকা এবার সেই মাটি কিনতে হয়েছে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে। তাছাড়া লাকড়ির দামও বেশি। মাটি প্রস্তুত করা, জিনিস তৈরি করে রোদে শুকানো এবং আগুনে পোড়ানো, তারপর প্রয়োজনমতো সেগুলো রং করাÑ এসবের জন্য খরচ দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। পরিশ্রমতো বাদই দিলাম।

কৃষ্ণারানী পাল বলেন, আমাদের এ এলাকায় আগে আরও অনেক পরিবার ছিল, যারা এ শিল্পের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করত। কিন্তু এখন আর কেউ এ ব্যবসায় থাকতে চায় না। এতে কষ্ট বেশি, লাভ কম।

এ ব্যাপারে বিসিক টাঙ্গাইল জেলা শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক শাহনাজ বেগম বলেন, মৃৎশিল্প বাংলাদেশের পুরানো ঐতিহ্যবাহী শিল্প। বর্তমানে এটি বিলুপ্তির পথে। মৃৎশিল্পীরা যদি বিসিকের সহযোগিতা চান তাহলে তাদের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা