× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

কন্টেইনার হ্যান্ডলিং রেট নিয়ে বিরোধ

সুবল বড়ুয়া, চট্টগ্রাম

প্রকাশ : ১২ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:০২ এএম

কন্টেইনার হ্যান্ডলিং রেট নিয়ে বিরোধ

চট্টগ্রাম বন্দরের জিসিবিতে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং রেট বাড়ানো নিয়ে বার্থ অপারেটর এবং শিপিং এজেন্টদের বিরোধে উৎপাদনশীলতা ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতির জন্য শিপিং এজেন্টদের অসহযোগিতাকে দায়ী করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। তাই দর বাড়ানোর জন্য বন্দর প্রশাসন জরুরি হস্তক্ষেপ চেয়েছে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের।

অনুসন্ধানে জানা যায়, জিসিবি (জেনারেল কার্গো বার্থ) এলাকায় কন্টেইনার জাহাজে অনবোর্ড হ্যান্ডলিংয়ের যে রেট বিদ্যমান সেটা প্রায় ১৮ বছর আগের। দীর্ঘদিন ধরে এই রেট নিয়ে শিপিং এজেন্ট এবং বার্থ অপারেটরদের মধ্যে বিরোধ চলছে। দর বাড়ানোর জন্য গত সোমবার নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের জরুরি হস্তক্ষেপ চেয়ে পত্র দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে উৎপাদনশীলতা ক্ষুণ্ন হওয়া এবং জাহাজের গড় অবস্থান সময় বৃদ্ধির আশঙ্কার কথা জানিয়ে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর সোমবার পত্রটি পাঠানো হয়েছে।

তবে বিদ্যমান রেট প্রসঙ্গে শিপিং এজেন্টরা বলেছেন, ২০০৭ সালের রেট হলেও সেটা অনেক বেশি। সে সময়ে যে সংখ্যক কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হতো সেটার বিবেচনায় ওই হ্যান্ডলিং রেট নির্ধারণ করা হয়েছিল। এরপর বছরে বছরে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং বেড়েছে। ২০০৭ সালের তুলনায় এত বছরে কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সংখ্যা বেড়েছে বহুগুণে। কিন্তু হ্যান্ডলিং রেট কমানো হয়নি। উল্টো দাবি করা হচ্ছে বাড়ানোর। শিপিং এজেন্টদের হিসেবে বর্তমান রেটে প্রতি কনটেইনারে বার্থ অপারেটররা ৬৬২ টাকা লাভ করছে। 

শিপিং কোম্পানির নির্বাহীরা বলেন, আমরা চাই আমাদের সুবিধা অনুসারে দক্ষ অপারেটরদের দিয়ে কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ করাতে। কিন্তু সেই সুযোগ নেই। বার্থ অপারেটররা প্রতি বছর শ্রমিকদের জন্য ১০ শতাংশ হারে চার্জ নেয়। এর সবটা শ্রমিকরা পায় কি না তা নিয়ে সংশয় আছে। তাই আমরা সরাসরি শ্রমিকদের এই অর্থ পরিশোধে আগ্রহ দেখিয়েছি।

অন্যদিকে, বার্থ অপারেটররা বন্দরকে জানিয়েছে যে বর্তমান রেটে কাজ করে তারা কন্টেইনারপ্রতি ৩৫৩ টাকা লোকসানের সম্মুখীন। ২০০৭ সাল থেকে সংস্কারের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরে বার্থ অপারেটিং সিস্টেম চালু হয়েছে। সরকারের সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও শিপিং এজেন্টরা জাহাজের অনবোর্ড অপারেশনে প্রতি কনটেইনারে অপারেটরদের ৬০ শতাংশ সার্ভিস চার্জের ওপর ১ শতাংশ সার্ভিস চার্জ বাড়ায়নি, যেখানে তারা ওই অনবোর্ড অপারেশনে প্রতি কনটেইনারে শ্রমিকদের সার্ভিস চার্জ প্রতি বছরান্তে ১০ শতাংশ বাড়ায়। সময় হিসেবে অনেক কিছুর দাম বেড়েছে। তাই গত ২০০৭ সাল থেকে ২০২৫ সালের দীর্ঘ সময় বিবেচনায় কনটেইনারপ্রতি চার্জ বাড়িয়ে দিতে বলা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘বন্দরের কন্টেইনার হ্যান্ডলিং রেট বাড়ানো নিয়ে বার্থ অপারেটর ও শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে আমরা বসেছি। দুপক্ষের কেউই মানছে না। তাই আমরা নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি চিঠি দিয়ে জানিয়ে রেখেছি।’

সেক্ষেত্রে জিসিবিতে কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে উৎপাদনশীলতা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কার রয়েছে কি না জানতে চাইলে বন্দর সচিব বলেন, ‘ভবিষ্যতে কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে যাতে কোনো ব্যাঘাত না হয় সেজন্যই মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। দর নির্ধারণে উভয়পক্ষ নিয়ে আমরা অনেকবার মিটিং করেছি। দর নির্ধারণও করে দিয়েছিলাম। কিন্তু শিপিং এজেন্ট আমাদের কথাটা রাখেনি। তাই আমরা মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছি।’

বন্দর সূত্রে জানা যায়, কন্টেইনার রেট বৃদ্ধির বিষয়ে গত ৯ মার্চ বন্দরের সদস্য (হারবার ও মেরিন) ক্যাপ্টেন আহমেদ আমিন আবদুল্লাহের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আলোচনা হয়। সভায় শিপিং এজেন্ট এবং বার্থ অপারেটররা যে দর প্রস্তাব করে তাতে বেশ পার্থক্য ছিল এবং দরের ব্যাপারে তারা একমত হতে পারেনি। এ অবস্থায় বন্দর প্রশাসন বিদ্যমান দরের সঙ্গে ২০৫ টাকা করে বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত দেন। অনবোর্ড লোড এবং খালি কন্টেইনারের বিদ্যমান দরের সঙ্গে এই টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। বার্থ অপারেটররা তাৎক্ষণিকভাবে তাতে সম্মতি প্রকাশ করেন। কিন্তু শিপিং এজেন্টরা তা বাস্তবায়ন করেনি। প্রায় তিন সপ্তাহ পর ২৭ মার্চ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন ৫০.৩৬ টাকা হারে বৃদ্ধিতে সম্মতি প্রকাশ করে বন্দর প্রশাসনকে অবহিত করে।

নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়কে বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, বন্দরের উদ্যোগে নির্ধারিত দর বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের পর শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন যে দর প্রস্তাব করেছে তাতে বার্থ অপারেটররা একমত না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাতে জিসিবি এলাকায় কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে উৎপাদনশীলতা ক্ষুণ্ন হতে পারে এবং জাহাজের টার্ন এরাউন্ড টাইম বেড়ে যেতে পারে। আর তাতে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে ধীরগতি তৈরি হতে পারে। 

২০৫ টাকা হারে বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে বন্দর কর্তৃপক্ষ যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য মনে করে এবং তা বাস্তবায়নে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের জরুরি হস্তক্ষেপ চেয়েছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা