চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ১১ এপ্রিল ২০২৫ ২০:১৬ পিএম
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। ছবি : সংগৃহীত
দেশ থেকে প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ কার্যক্রম এবং সমসাময়িক ব্যাংকিং বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
গভর্নর বলেন, পাচার করা অর্থের মধ্যে বড় শিল্প গ্রুপগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে—এর মধ্যে বেক্সিমকো একাই প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই তথ্যগুলো বড় গ্রুপের। ছোটদের আপাতত বিবেচনায় আনিনি। এই পাচার রোধ ও অর্থ ফেরত আনার কাজ শুরু হয়েছে।
তিনি জানান, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে প্রথম ধাপে বিদেশে অবস্থিত সম্পদ বা এস্টেটগুলো ফ্রিজ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ, চিঠিপত্র আদান-প্রদান, এবং আন্তর্জাতিক ল ফার্ম ও এস্টেট ট্রেসিং সংস্থার সঙ্গে আলোচনা চলছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে প্রথম ধাপে কিছু এস্টেট ফ্রিজ করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
ড. মনসুর জানান, বিষয়গুলো আদালতের মাধ্যমে নয়, আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার চেষ্টা চলছে। আউট অব কোর্ট সেটেলমেন্ট এর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তথ্য-প্রমাণ না থাকলে আলোচনা ফলপ্রসূ হবে না, তাই আগে যথাযথ ডেটা সংগ্রহ জরুরি।
তিনি আরও বলেন, এই ধরনের উদ্যোগ বাংলাদেশের জন্য একেবারেই নতুন এবং আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সমন্বয় করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। এস্টেট ফ্রিজ করার পর আদালতের মাধ্যমে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
মুদ্রাস্ফীতি প্রসঙ্গে গভর্নর জানান, আগে খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি ৯-১০ শতাংশ দেখানো হলেও প্রকৃত হার ছিল ১৩-১৪ শতাংশ। বর্তমানে তা কমে ৮-৯ শতাংশে এসেছে এবং সামগ্রিকভাবে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আগামী বছর সেটিকে ৫ শতাংশ বা তার নিচে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
অর্থ পাচারে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, অমূলক তথ্যের ভিত্তিতে কাউকে শাস্তি দেওয়া হবে না। তবে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. জামাল উদ্দিন, ফাইন্যান্স ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের পরিচালক মো. আনিসুর রহমান, চট্টগ্রাম কার্যালয়ের পরিচালক মো. সালাহ উদ্দীন, মো. আরিফুজ্জামান, মো. আশিকুর রহমান এবং স্বরূপ কুমার চৌধুরী। সঞ্চালনায় ছিলেন উপ-পরিচালক মো. জোবাইর হোসেন।