মাথায় গুলি নিয়েই মারা গেলেন জুলাই যোদ্ধা ‘হৃদয়’

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ঢাকা যাত্রাবাড়ী এলাকায় পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত মো. আশিকুর রহমান হৃদয় মারা  গেছেন।

শুক্রবার (৪ এপ্রিল) বিকাল ৩টার দিকে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

নিহত হৃদয় পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার পশ্চিম যৌতা গ্রামের রিকশা চালক আনসার হাওলাদারের ছেলে।

হৃদয়ের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, হৃদয় ঢাকাতে শ্রমিকের কাজ করতেন। জুলাই বিপ্লবে ঢাকার রাজপথে আন্দোলনে অংশ নিয়ে  ১৮ জুলাই যাত্রাবাড়ি এলাকায় পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন তিনি। তার মাথায় তিনটি গুলি লাগে। ওই সময় স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের ভয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে চিকিৎসা নেন হৃদয়। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা দেওয়া হয় তাকে। চিকিৎসকরা তার মাথা থেকে দুটি গুলি বের করতে পারলেও আশঙ্কাজনক হওয়ায় একটি গুলি বের করতে পারেনি। এতে পুরোপুরি সুস্থ্য হতে পারেনি হৃদয়। বিভিন্ন সময় অস্থির হয়ে পড়তেন। প্রচণ্ড জ্বর উঠত। গত বুধবার হৃদয় অসুস্থ হয়ে পড়েন। আজ শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। বিকাল ৩টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। 

হৃদয়ের বাবা আনসার হাওলাদার বলেন, ছেলের উন্নত চিকিৎসা করাতে পারিনি। নিজের রিকশা ও একটা গরু বিক্রির টাকা দিয়ে যতটুক পেরেছি ততটুক চেষ্টা করেছি। মাথার ৩টা গুলির মধ্যে ২টা বের করেছেন ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসকরা। আরেকটা গুলি বের করা সম্ভব হয়নি। বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হলে আমার ছেলে বেঁচে থাকত। 

নিহত হৃদয়ের বড়  ভাই মো. সোহাগ ইসলাম আনিস বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিল হৃদয়। ওর মাথার ভেতরে থাকা গুলিটার জন্য প্রচুর ব্যথা করত।  জ্বর উঠত। কেউ আমার ভাইয়ের উন্নত চিকিৎসার জন্য এগিয়ে আসেননি। উন্নত চিকিৎসার অভাবেই আমার ভাই মারা গেছে । 

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আ. রউফ বলেন, বেলা ১২টার দিকে হৃদয়কে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। আশঙ্কাজনক হওয়ায় বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলি। পরিবার যথা সময়ে বরিশাল নিয়ে যেতে পারেনি। এখানেই বিকাল ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়।