রাজশাহীতে আধিপত্য বিস্তারে বিএনপি-জামায়াতের সংঘর্ষ, আহত ৫

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর দুই পক্ষের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। 

ঈদের আগের দিন রবিবার রাত ৭টা থেকে ১২টা পর্যন্ত দফায় দফায় এই সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের একাধিক কর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে এই ঘটনার পর জামায়াত পক্ষের সমর্থকরা থানায় অভিযোগ করেছে। মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) বিকালে তারা মানবন্ধন করবেন।

হামলায় বাউসা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি রাজিব আহম্মেদ মণ্ডল (২৬) ও ইউনিয়নের ১ নম্বর (দিঘা) ওয়ার্ড ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি সৌরভ আহমেদ (২০) সহ অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। ৪ টি দোকান ও ৫টি মোটরসাইকেলসহ একটি ভ্যান ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

স্থানীয়রা জানায়, গত ১৬ মার্চ দুপুরে দরিদ্রদের জন্য সরকারের বরাদ্দ করা ১০ কেজি চালের রশিদ বিতরণকে কেন্দ্র করে বাউসা ইউনিয়ন বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এর জেরে রবিবার রাতে জামায়াত সমর্থকরা বাউসা ইউনিয়নের ছাত্রদলের সিনিয়রসহ সভাপতি রাজিব আহমেরদ মণ্ডলের ওপর হামলা করে। তাকে কুপিয়ে যখম করে তারা। এরপর স্থানীয় বিএনপির সমর্থকরা জামায়াতের মজিবর গ্রুপের সমর্থকদের ওপর পাল্টা হামলা চালায়। রবিবার বিকেল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত পাল্টাপাল্টি হামলায় ৪টি দোকান ও ৫টি মোটরসাইকেলসহ একটি ভ্যান ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

বাউসা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বলেন, জামায়াতের লোকজন গত ২০ মার্চ মিথ্যা অভিযোগে বিএনপির বিরুদ্ধে মানবন্ধন করে। এই উপজেলায় তাদের সমর্থক নেই বললেই চলে। ওই দিন তাদের সঙ্গে গণ্ডগোল হয়। তারই ধারাবাহিকতায় জামায়াত পূর্বপরিকল্পিতভাবে বাঘা ও আশপাশের এলাকা থেকে জনবল নিয়ে এনে বাউসা ইউনিয়নের ছাত্রদলের সিনিয়রসহ সভাপতি রাজিব আহমেদ মণ্ডলের ওপর হামলা চালায়। ইফতারের পর সে বাজারে বসে ছিল। তার মাথায় ও হাতে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এই ঘটনার পর স্থানীয় ক্ষুব্ধ জনতা জামায়াত শিবিরের ওপর হামলা চালায়। সেখানে থাকা তারেদ মোটরসাইকেলে আগুন দেয়।

বাউসা জামায়াতের আমীর মাওলানা মজিবর রহমান বলেন, সৌরভকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। খবর পেয়ে ইফতার শেষে আমরা তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি। রবিবার আড়ানি ডিগ্রি কলেজ মাঠে জামায়াতের ইফতারি ছিল। পরে রাত ৮টার দিকে জামায়াত শিবিরের লোকজন ইফতার শেষে সৌরভের বাড়িতে তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে তাদের পথ রোধ করে বিএনপির সমর্থকরা। এনিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরে তার ১২টার দিকে স্থানীয় জামায়ত কর্মী শিল্পি ও আবুদর রহিম বাড়িতে হামলা করা হয়।

ঘটনার সূত্রপাত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাউসা ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আব্দুর রহমানকে চেয়ারম্যান বানিয়ে এখন তারা ভিজিএফ, টিসিবিসহ দরিদ্রদের সকরারি সহায়তার কার্যক্রমে নানা অনিয়ম করছে। এসব নিয়ে আমরা তাদেরকে অনুরোধ করে আসছি যাতে এসব সুষ্ঠু ভাবে বন্টন করা হয়। তারা তা না করায় আমরা গত ২০ মার্চ মানবন্ধন করি। এতে বিএনপির নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন। এনিয়েই তারা হামলা চালাচ্ছে। এসববের প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকেলে বাঘা উপজেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। অনাকাঙ্খিত ঘটনা এলাকা বাউসায় এলাকায় বিক্ষোভ না করে উপজেলায় করা হচ্ছে।

বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফম আসাদুজ্জামান বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এই ঘটনায় রুমন আলীর ভাই সৌরভ আলী আহত হন। রুমন আলী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।