× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

গোশত সমিতি

ঈদে মাংস খেতে বছরজুড়ে টাকা জমান তারা

সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২৫ ২০:১৮ পিএম

আপডেট : ২৯ মার্চ ২০২৫ ২০:৩৩ পিএম

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

পেশাজীবী সমিতি। সাংবাদিক সমিতি। ট্রাক মালিক সমিতি। শিক্ষক সমিতি। দোকান মালিক সমিতি। আরও কত সমিতি। বাংলাদেশে সব পেশারই একটা-দুটো করে সমিতি রয়েছে। তবে অন্য রকম এক সমিতির খোঁজ মিলেছে। এ সমিতির কথা শুনে যে কেউ অবাক বনে যাবে। যারা কখনো শোনেননি, তাদের কাছে অদ্ভুত মনে হবে বৈকি। যে সমিতির খোঁজ মিলেছে, সে সমিতির নাম ‘গরিবের গোশত সমিতি’। 

এ সমিতির নিয়মকানুনও অদ্ভুত। ঈদুল ফিতর ঘিরে সাটুরিয়ার বিভিন্ন এলাকায় এ রকম অনেক সমিতি গড়ে উঠেছে। ‘গরিবের গোশত সমিতি’ এখন ব্যাপক সাড়া পেয়েছে।

গোশত সমিতি। যে সমিতির মেয়াদ ১ বছর। সমিতির শুরুটা হয়েছিল এক যুগ আগে। শুরুতে এটি গরিবদের সমিতি নামে পরিচিত হলেও এখন এই সমিতি সমাজের সব শ্রেণির মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে।

দাম নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায় বাজার থেকে মাংস কিনতে পারেন না স্বল্প আয়ের মানুষ। ১২ বছর ধরে এ অবস্থা চলছে। মাংস কেনার টার্গেট নিয়ে গ্রামীণ মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত বা নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ ‘গোশত সমিতি’ করে বছরজুড়ে টাকা জমানো শুরু করেছেন। বছর শেষে তারা নিজেদের জমানো টাকা দিয়ে গরু বা মহিষ কিনে মাংস ভাগ করে নিচ্ছেন। এতে বাজারে কসাইদের হাঁকানো দরের চেয়ে কেজিতে অন্তত একশ-দেড়শ টাকা কম দামে তারা মাংস পাচ্ছেন। 

মানিকগঞ্জর জেলার সাটুরিয়া উপজেলাজুড়ে প্রায় গ্রামেই এমন একাধিক গোশত সমিতি গড়ে উঠেছে।

‘গোশত সমিতি’র সঙ্গে যুক্ত সাভার গ্রামের মো. রিপন হোসেন (৩৫) বলেন, উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম বা মহল্লায় ঈদুল ফিতর সামনে রেখে এ ধরনের গোশত সমিতি গঠন করা হয়। সমিতির মেয়াদ এক বছর। সমিতির অন্তর্ভুক্ত প্রতিজন সদস্য প্রতি সপ্তাহে সমিতিতে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা রাখেন। বছর শেষে ঈদের আগে জমাকৃত অর্থ একত্র করে পশু কেনা হয়। ঈদের দিন বা তার দু-একদিন আগে এই পশু জবাই করে গোশত সমিতির প্রত্যেক সদস্যকে ভাগ করে দেওয়া হয়। এতে ঈদ উদযাপনের ক্ষেত্রে নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষের ওপর আর্থিক চাপ যেমন কমে, তেমনি ঈদের আগে সবাই বাড়তি আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পারেন।

পিন্টু মিয়া নামে গোশত সমিতির সদস্য বলেন, উপজেলায় বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে এমন সমিতি গড়ে উঠছে। প্রতিটি গোশত সমিতির সদস্য সংখ্যা ২০ থেকে ৪০ জন পর্যন্ত হয়ে থাকে। স্থানীয়দের ভাষায় এই সমিতির নাম ‘গোশত বা মাংস সমিতি’। অনেকের কাছে ‘গরু সমিতি’ নামেও পরিচিত।

আব্দুল বারেক মিয়া নামে গোশত সমিতির আরেক সদস্য বলেন, আমরা প্রতি সপ্তাহে জনপ্রতি ১০০ টাকা করে সমিতিতি সঞ্চয় জমা দিই। বছর শেষে সেই টাকা দিয়ে গরু বা মহিষ কিনে ভাগ করে নেই। একসঙ্গে এতগুলো টাকা জমানো সম্ভব নয়। তাই আমরা প্রতি সপ্তাহে গোশত সমিতিতে টাকা জমা করি। বছর শেষে জমানো টাকা দিয়ে আমরা পশু কিনে ভাগাভাগি করে নিই।

ঈদুল ফিতরের দুই বা এক দিন আগে জবাই করে সদস্যরা গোশত ভাগ করে নেন। এরপর পরের বছরের জন্য তহবিল গঠন করে সমিতির কার্যক্রম চলে।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য মো. দেলোয়ার হোসাইন বলেন, এটি একটি ভালো উদ্যোগ। গোশত সমিতির মাধ্যমে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যরা গরুর মাংসের স্বাদ নিতে পারে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ইমরান হোসেন জানান, ঈদ বা অনুষ্ঠান ছাড়া নিম্ন বা মধ্যবিত্তরা গরুর মাংস খেতে পারেন না। তারা গ্রামে গ্রামে সমবায়ের মত করে সমিতি করে বছর শেষে একসঙ্গে অনেকগুলো টাকা জামিয়ে গরুর গোশত খেতে পারে। এতে ভোক্তারা ও খামারিরা ঈদুল ফিতরেও একটি বাজার ধরতে পারছেন। এতে খামারি ও ভোক্তা উভয়েই উপকৃত হচ্ছেন।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা