নাটোর ডিসির বাংলো থেকে বিপুল পরিমাণ পরিত্যক্ত ব্যালট উদ্ধার

নাটোরের জেলা প্রশাসকের পুরাতন বাংলোসংলগ্ন বাগানে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিত্যক্ত শতাধিক বস্তাভর্তি ব্যালট পেপার ও ডিভাইস উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

ররিবার (২৯ মার্চ) দুপুরে তল্লাশি চালিয়ে এসব উদ্ধার করা হয়।

এর আগে শনিবার ডিসির ডাক বাংলোর পাশের তালাব পুকুর থেকে ৬টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারাভিযানের অংশ হিসেবে রবিবার সকাল থেকেই তালাব পুকুর ও এর আশাপাশের জায়গা তল্লাশি চালানো হয়। 

এ সময় রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ডেপুটি কালেক্টর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাশেদুল ইসলামসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শনিবার ডিসির পুরাতন বাংলোর পাশের তালাব পুকুর থেকে ৬টি অস্ত্র উদ্ধার করে করে পুলিশ। আরও অস্ত্র থাকতে পারে এমন সন্দেহে রবিবার দ্বিতীয় দিনের মত তল্লাশি অভিযান চলছিল। দুপুর ১২টার দিকে এনএসআই এর দুই গোয়েন্দা ডিসির পুরাতন বাংলোর ভেতর বাগানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শতাধিক পরিত্যক্ত ব্যালট পেপার, নির্বাচনী ডিভাইস, কম্পিউটারের নষ্ট অংশ, স্ক্যানার মেশিনসহ অন্যান্য নির্বাচনী নষ্ট সামগ্রী পড়ে থাকতে দেখতে পান। তবে নষ্ট প্রায় ব্যালট পেপারের অধিকাংশ নাটোর-১ (নাটোর-লালপুর) আসনের। 

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাশেদুল ইসলাম জানান, উদ্ধারকৃত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ব্যালট পেপারগুলোর স্থায়িত্বকাল ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে টেন্ডার হয়ে গেছে এবং নির্বাচন কমিশন এগুলো নিয়েও গেছে। কিছু ব্যালট নষ্টও করা হয়েছে। কিন্তু কারা নষ্ট করেছে তা জানি না। ব্যালট পেপারগুলো এর আগে নেজারত শাখায় রাখা ছিল। পরে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের সময় জায়গার সংকুলান না হওয়ায় ব্যালট বেশ কিছু পেপার নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালের বিপরীতে তালাব পুকুরের পাশেই জেলা প্রশাসকের পুরাতন বাংলোয় রাখা হয়। সেখান থেকে কে বা কারা এই ব্যালটগুলো নষ্ট করেছে তা আমার জানা নাই। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, জেলা প্রশাসকের পুরাতন বাংলো অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। যে কেউ সীমানা প্রাচীর টপকিয়ে ভেতরে যেতে পারে। এছাড়া কক্ষগুলো লকার নেই।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন জানান, ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১০০ বস্তা ব্যালট পেপার উদ্ধার করা হয়েছে। ব্যালটগুলো গণনা করা হবে। 

রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান সাংবাদিকদের জানান, তালাব পুকুরে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা একটা নতুন দিগন্তের শুরু করেছে। উদ্ধারকৃত অস্ত্রগুলো কেউ না কেউ ব্যবহার করেছে। অস্ত্রগুলো পরীক্ষা, যাচাই-বাছাই করা হবে। তালাব পুকুর থেকে পানি নিষ্কাষণ করে আরও তল্লাশি চালানো হবে। এছাড়া সন্দেহজনক আশপাশের পুকুর গুলোতেও তল্লাশি চালানো হবে। 

ব্যালট পেপার উদ্ধারের বিষয়ে তিনি বলেন, ব্যালট পেপার তো এমনি এমনি আসেনি। কেউ না কেউ এগুলো এখানে নিয়ে এসেছে। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষ। তদন্তের স্বার্থে আমাদের কাছে তথ্য এই মুহুর্ত্বে প্রকাশ করতে পারছি না। আমরা ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিভিন্ন সংস্থার সহায়তা নিয়েছি। আমরা এই ঘটনাগুলোর পরিণতি দেওয়ার চেষ্টা করছি।