জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত
শফিক সরকার, ময়মনসিংহ
প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২৫ ১৪:১৬ পিএম
রেদওয়ান হোসেন সাগর
‘প্রতি ঈদে বাবা-ছেলে একসঙ্গে ঈদের নামাজে যেতাম। আবার বাড়ি ফিরতাম। এবার কাকে নিয়ে যাব আর কাকে নিয়ে বাড়ি ফিরব।’Ñ এ কথা বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত ময়মনসিংহ নগরীর আকুয়া এলাকার কলেজ শিক্ষার্থী রেদওয়ান হোসেন সাগরের বাবা আসাদুজ্জমান।
সাগরের বাসায় দেখা যায় নীরব স্তব্ধ। তিন রুমের বাড়িতে ঢুকতেই দেখা যায়, সাগরের পড়ার টেবিলে বই-খাতা। পাশের রুমে তার মা রহিমা খাতুন ও একমাত্র ছোট বোন আফিয়া তাবাচ্ছুম সুপ্তি নীরবে বসে আছে। তাদের কারও মুখেও যেন কোনো কথা নেই।
আসাদুজ্জামান বলেন, আপনারা কেন এসেছেন, কী হবে পত্রিকায় লিখে। কোনো লাভ আছে কি। আমার ছেলেকে এনে দিতে পারবেন? আমার সাগর নেই মানে আমার সব শেষ হয়ে গেছে। সাগর ঈদ এলেই মায়ের কাছে বায়না ধরত, নতুন জামার জন্য। ওর মা ওকে নিয়ে মার্কেট থেকে চাহিদামতোই জামা-কাপড় কিনে দিত। আর ঈদের দিন আমরা বাবা-ছেলে একসঙ্গে নামাজে যেতাম। আর একসঙ্গেই বাড়ি ফিরতাম। কিন্তু এবার কাকে নিয়ে ঈদের নামাজে যাব আর কাকে নিয়ে বাড়ি ফিরব।
তিনি বলেন, জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে একটি প্যাকেট বাসায় দিয়েছে। সেখানে একটি লুঙ্গি ও যৎসামান্য কিছু উপহার আছে। তিনি জানান, সাগর হত্যার পর জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন, জামায়াতে ইসলামী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিএনপির এক নেতা মিলে টাকা পেয়েছেন। এ ছাড়া প্রতিটি শহীদ পরিবারের জন্য ৩০ লাখ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এত দিনেও তিনি পাননি বলে জানান।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে ১৯ জুলাই ময়মনসিংহ নগরীর মিন্টু কলেজ এলাকায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগের মিছিলের সময় গুলিতে নিহত হন রেদওয়ান হোসেন সাগর। তিনি জেলার ফুলবাড়িয়া কলেজে অনার্সে লেখাপড়া করতেন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নেন।